ছবি: সংগৃহীত।
দু’দিন আগেই সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর বিমান হামলার শিকার হতে হয়েছে অন্তত ৪১ জনকে। শুক্রবার ভোরেও ঘটল একই ঘটনা। ইয়েমেনের রাজধানী শহর সানার কাছে বুধবার ভোররাতে হুথি জঙ্গিদের হটাতে হামলা হয়েছিল হোটেলে। আর এ দিন একই কায়দায় বিমান হানার কবলে পড়েছে তিনটি সাধারণ বাড়ি। তার জেরে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ১৪ জন সাধারণ মানুষ। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেছেন, এঁদের মধ্যে রয়েছে মহিলা এবং শিশুও। জখম আরও অনেকে।
হুথি জঙ্গিদের হটাতে সানা জুড়ে গত কয়েক মাস ধরেই ব্যাপক অভিযান চালাচ্ছে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনী। ইরান সমর্থিত শিয়া বিদ্রোহীদের সরিয়ে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত সরকারকে ক্ষমতায় ফেরানোই লক্ষ্য তাদের।
গত দু’বছর ধরে সৌদি জোটের এই অভিযান চলছে। এমন পর পর বিমান হানা তো আছেই, তার সঙ্গে ইমেয়েনে কলেরার প্রকোপে আরও দুরবস্থা। প্রায় দুর্ভিক্ষের মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশ।
শুক্রবারের হামলা হয়েছে সানার দক্ষিণ প্রান্তে ফাগ আত্তান নামে একটি জায়গায়। এই ঘটনায়ও মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা মহম্মদ আহমেদের দাবি, ন’জনকে তিনি নিজে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। তখনই জেনেছেন, একই পরিবারের বেশ কয়েক জন শিশু এই হানায় প্রাণ হারিয়েছে।
সাধারণ মানুষের জীবনহানি সম্পর্কে রাষ্ট্রপুঞ্জ এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘সৌদি জোট-সহ সংঘর্ষে জড়িত সব পক্ষকে অনুরোধ করা হচ্ছে, আন্তর্জাতিক মানবতাবাদী আইনের প্রতি পূর্ণ সম্মান দেখান।’’
সানায় দুই বিদ্রোহী গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব চলছে বহু দিন ধরেই। এক দিকে উত্তরের শিয়া যোদ্ধা, যারা পরিচিত হুথি জঙ্গি হিসেবে। আর হুথিদের সঙ্গে লড়াই করছে গদিচ্যুত প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লা সালেহর অনুগামীরা। এই সংঘর্ষে দীর্ঘ দিন ধরে উত্তপ্ত সানা। বিদ্রোহীরা সানা-সহ ইয়েমেনের উত্তরাংশের অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করে।
সৌদি জোট প্রেসিডেন্ট আবেদ রাব্বো মনসৌর হাদির সরকারকে ক্ষমতায় ফেরাতে চায়। তবে গত কাল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট আলি আবদুল্লা সালেহ-র সমর্থনে পথে নেমেছিল তিন লক্ষ মানুষ। হুথিদের হটাতে সৌদি জোট যে ভাবে তৎপর হয়েছে, তাদের শক্তি প্রদর্শনেই এই মিছিল বলে মনে করা হচ্ছে। সালেহ-র অনুগামীরা এখন বলছে, হুথিদের সঙ্গে যে ‘যোগাযোগ’ রয়েছে, তার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। কিন্তু তাদের দাবি, বিদ্রোহীদের লড়াই চলবেই।