মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক। ছবি: রয়টার্স।
জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার বিরুদ্ধে অবশেষে ব্যবস্থা নিতে রাজি হল পাকিস্তান। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার সঙ্গে পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের বৈঠকের পরে প্রকাশিত যৌথ বিবৃতিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
পাকিস্তানের মাটি থেকে একাধিক বার সন্ত্রাসের প্রমাণ মিললেও বরাবরই তা অস্বীকার করে এসেছে ইসলামাবাদ। ভারতের মাটিতে ঘটে যাওয়া একাধিক জঙ্গি হামলায় দোষীদের পাকিস্তানে দীর্ঘ দিন ধরে গা ঢাকা দিয়ে থাকার অভিযোগও উঠেছে। এই নিয়ে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের সম্পর্কের আরও অবনতি হয়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তানকে তেমন সক্রিয় হতে দেখা যায়নি। সম্প্রতি প্রাক্তন পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী চৌধুরী আহমদ মুখতারের মন্তব্য গোটা দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে। মুখতার দাবি করেছিলেন, ওসামা বিন লাদেনের পাকিস্তানে লুকিয়ে থাকার খবর আগে থেকেই জানত পাক সরকার। তাঁর বক্তব্যকে সমর্থন করেছিল আফগানিস্তানও। এ ছাড়াও ছিল আমেরিকা-সহ পশ্চিমি দুনিয়ার চাপ। সব মিলিয়ে ক্রমশ চাপ বাড়ছিল ইসলামাবাদের উপরে। খানিকটা সেই চাপে পড়েই সে দেশে জঙ্গি সংগঠনগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেন শরিফ। এর মধ্যে লস্কর ছাড়াও রাষ্ট্রপুঞ্জের তালিকাভুক্ত একাধিক জঙ্গি সংগঠন রয়েছে।
জঙ্গি দমন ছাড়াও শান্তি বজায় রাখতে ভারতের সঙ্গে ফের আলোচনা শুরু করতে নওয়াজকে বার্তা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কাশ্মীর-সহ বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে দুই দেশকে পুনরায় আলোচনায় বসতে বলেছেন তিনি।
ভারতের স্বস্তি আরও বাড়িয়ে আমেরিকা জানিয়েছে, ভারতের মতো পাকিস্তানের সঙ্গে এখনই অসামরিক পারমাণবিক চুক্তি সম্ভব নয়। অদূর ভবিষ্যতেও তার কোনও সম্ভাবনা নেই। ওয়াশিংটনে ওবামা-শরিফ বৈঠকের পর হোয়াইট হাউজের তরফ থেকে এ কথা জানানো হয়েছে।
এ দিনের বৈঠকের আগে পাক মিডিয়া এবং সরকারের একাংশ থেকে প্রচার করা হয়, দুই রাষ্ট্রনায়কের এই বৈঠকেই সাক্ষরিত হবে অসামরিক পরমাণু চুক্তি। যা কিনা ভারত-মার্কিন অসামরিক পারমাণবিক চুক্তিরই মতো। কিন্তু পাকিস্তানের হতাশা বাড়িয়ে হোয়াইট হাউজের তরফে ঘোষণা করা হয়, এমন কোনও চুক্তি হচ্ছে না। হোয়াইট হাউজের এক মুখপাত্র বলেন, “পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও পারমাণবিক চুক্তি হচ্ছে না। নীতিগত ভাবে এই অবস্থান নিয়েছে আমেরিকা।”