জি-২০ শীর্ষ সম্মলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
জি-২০ শীর্ষ বৈঠকেও পাকিস্তানকে তীব্র আক্রমণ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। চিনকে আক্রমণ করা থেকে বিরত থাকলেন কৌশলী মোদী। তার বদলে বিশ্বের শিল্পোন্নত দেশগুলির শিখর সম্মেলনের মঞ্চকে মোদী ব্যবহার করলেন আন্তর্জাতিক মঞ্চে পাকিস্তানকে সম্পূর্ণ একঘরে করার লক্ষ্যে। একটি মাত্র দেশ গোটা দক্ষিণ এশিয়ায় সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে, মন্তব্য মোদীর। সন্ত্রাস প্রশ্নে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্যের বিরোধিতা করতে পারেনি চিনও।
চিনের হাংঝাউতে চলছে জি-২০ শীর্ষ বৈঠক। আমেরিকা, রাশিয়া, ব্রিটেন, ফ্রান্স, চিন, ভারত, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, জাপান সহ ২০টি শিল্পোন্নত দেশের শীর্ষনেতারা যোগ দিয়েছেন এই শিখর সম্মেলনে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেখানে নিজের ভাষণে সন্ত্রাস প্রসঙ্গ তোলেন। সন্ত্রাসের যে ভাল-খারাপ হয় না, তা আবার মনে করিয়ে দিয়ে মোদী এ দিন বলেন, ‘‘এক জন সন্ত্রাসবাদী শুধু সন্ত্রাসবাদীই।’’ মোদী আরও বলেন, ‘‘কয়েকটি দেশ আছে, যারা সন্ত্রাসকে তাদের রাষ্ট্রীয় নীতি হিসেবে ব্যবহার করে।’’ এর পরই পাকিস্তানকে নিশানা করেন মোদী। তিনি বলেন, ‘‘দক্ষিণ এশিয়ার একটা মাত্র দেশ গোটা অঞ্চলে সন্ত্রাসের এজেন্টদের ছড়িয়ে দিচ্ছে।’’ ভারত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়েছে বলে ঘোষণা করে মোদী বুঝিয়ে দেন, জঙ্গিদেরকে ভারতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করার কোনও চেষ্টা হলে ভারত আর বিন্দুমাত্র সহনশীলতা দেখাবে না। সন্ত্রাসের সমর্থকদের বিচ্ছিন্ন করার এবং তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করার ডাকও দিয়েছেন মোদী। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের তরফ থেকে টুইটারে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের এই সব অংশ তুলে ধরা হয়েছে।
বিদেশ মন্ত্রকের টুইট।
নাম উচ্চারণ না করলেও, ‘একটা মাত্র দেশ’ বলতে যে মোদী পাকিস্তানকেই বুঝিয়েছেন, তা নিয়ে কোনও মহলেই সংশয় নেই। মোদী কাকে আক্রমণ করেছেন, তা পাকিস্তানের কাছেও স্পষ্ট।
প্রধানমন্ত্রীর এই কূটনৈতিক কৌশলের প্রশংসাই করেছে ওয়াকিবহাল মহল। সন্ত্রাসের প্রশ্নে পাকিস্তানকে আক্রমণ করার পাশাপাশি, সম্প্রতি চিনকেও কটাক্ষ করা শুরু করেছে ভারত। চিন সন্ত্রাস ছড়াচ্ছে এমন অভিযোগ না করলেও, পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে চিন যে প্রশ্রয় দেয়, তেমন অভিযোগ ভারত একাধিক বার করেছে। এ দিনের ভাষণে কিন্তু চিনের বিরুদ্ধে তেমন তীব্র স্বরে অভিযোগ করতে শোনা যায়নি মোদীকে। বরং সন্ত্রাসের প্রশ্ন তুলে ধরে অন্য সব দেশের থেকে পাকিস্তানকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার নীতিই নিয়েছেন মোদী।
আরও পড়ুন: সন্ত্রাস নিয়ে উদ্বিগ্ন, চিনকে জানাল ভারত
মোদীর আক্রমণ যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে, তা স্পষ্ট বোঝা গেলেও, চিন কিন্তু কিছু এ প্রসঙ্গে কোনও মন্তব্য করেনি। ঘনিষ্ঠ মিত্র পাকিস্তানকে অস্বস্তি থেকে রক্ষা করতে চিনের তরফে কোনও পাল্টা মন্তব্য করা হয়নি। জি-২০-র মতো মঞ্চে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের এই অভিযোগ যে ভাবে বিনা বিরোধিতায় প্রতিধ্বনিত হয়েছে, তাতে আন্তর্জাতিক মহলে আরও কোণঠাসা হওয়ার আশঙ্কা করছে ইসলামাবাদ।