নাম না করেই আফগানিস্তানের মাটিতে দাঁড়িয়ে সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানকে ঠুকল ভারত। তালিবানের মতো গোষ্ঠীকে আফগানিস্তানে শান্তি প্রক্রিয়ায় সামিল হতে গেলে যে হিংসার পথ পুরোপুরি ছাড়তে হবে তা-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে দিল্লি।
আজ তালিবানকে আফগানিস্তানের মূল রাজনৈতিক স্রোতে আনার ডাক দিয়েছে ‘কাবুল সম্মেলন’। ভারত এবং পাকিস্তান-সহ পঁচিশটি দেশকে নিয়ে আফগানিস্তানে শান্তি ফেরানোর জন্য আজকের সম্মেলনের মূল থিম ছিল এটিই। কূটনৈতিক সূত্রের খবর, গোটা কনফারেন্সের অদৃশ্য রাশ ছিল আমেরিকার হাতেই। হোয়াইট হাউসের নয়া আফগান নীতিতে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে ভারত। অন্য দিকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার খাঁড়া মাথায় থাকায় পাকিস্তান মুখরক্ষায় ব্যস্ত।
এই প্রেক্ষিতে আজ আফগান প্রেসিডেন্ট ঘানি বলেছেন, ‘‘শান্তি প্রক্রিয়ায় কী কী পদক্ষেপ যোগ করা উচিত তা নিয়ে তালিবানেরও মতামত জানানো প্রয়োজন। যাঁরা আফগানিস্তানে শান্তি চান তাঁদের সকলকেই এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা হবে। কোন সংগঠনে তাঁরা রয়েছেন তা বিচার করা হবে না।’’ তাঁর মতে, প্রথমে সংঘর্ষবিরতি প্রয়োজন। তালিবান যদি আফগান সরকারকে স্বীকৃতি দেয় ও আইন মেনে চলে তবে ধীরে ধীরে আন্তর্জাতিক নিষিদ্ধ তালিকা থেকে তাদের নাম তুলে নেওয়া হবে। সে ক্ষেত্রে পরে তালিবান স্বীকৃত রাজনৈতিক দল হিসেবে আফগান নির্বাচনে অংশগ্রহণও করতে পারে।
ঘানির দাবিকে সমর্থন করে ভারতীয় বিদেশসচিব বিজয় গোখেল জানান, হিংসার পথ ছেড়ে যদি কোনও গোষ্ঠী আলোচনায় বসতে চায় তবে তারা স্বাগত। কিন্তু যারা এখনও হিংসা চালাচ্ছে ও যারা তাদের আশ্রয় দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করতে হবে। কূটনীতিকেরা জানিয়েছেন, আফগানিস্তানে তালিবানকে যে ইসলামাবাদই মদত দিচ্ছে সে কথা বার বার জানিয়েছে ঘানি সরকারই। তাই পাকিস্তানের নাম না করেই দিল্লি বুঝিয়ে দিয়েছে, তালিবানকে আলোচনার টেবিলে আনতে পাকিস্তানকে সক্রিয় হতে হবে। সেই সঙ্গে বন্ধ করতে হবে হিংসায় মদত দেওয়া। আজ আফগান শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনাতেও এ কথা জানিয়েছেন বিদেশসচিব।
তবে এ দিনই ‘কাবুল সম্মেলন’-এর প্রস্তাব উড়িয়ে দিয়েছেন তালিবান মুখপাত্র জাবিউল্লা মুজাহিদ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমেরিকা ও তার মিত্রদের পরাজিত করেছে তালিবান। তার পরেও কাবুল সম্মেলন তালিবানকে আত্মসমর্পণ করতে বলছে।’’