দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেছেন খোদ প্রেসিডেন্টের বন্ধু। আর তা নিয়ে টালমাটাল দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতি। এতটাই যে ইতিমধ্যেই নতুন প্রধানমন্ত্রী আর অর্থমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করে দিয়েছে প্রেসিডেন্টের দফতর। কিন্তু তাতে ক্ষোভের আঁচ কমার নাম নেই। উল্টে তা আরও বেড়ে গিয়েছে। বিরোধী দল-সহ দেশের অনেকেরই অভিযোগ, মূল বিষয় থেকে মানুষের দৃষ্টি ঘোরানোর জন্যই এত কিছু করছেন দেশের প্রেসিডেন্ট পার্ক গুয়েন হি।
দেশের বর্তমান মহিলা প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর। চৌঁষট্টি বছরের প্রেসিডেন্টের হয়ে তাঁর বান্ধবী ছই সুন-সিল দেশ চালান বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধীরা। প্রেসিডেন্টের দফতরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তও নাকি ছই নিয়ে থাকেন। পুলিশ-প্রশাসনের ছাড়পত্র ছাড়াই এমন কিছু সিদ্ধান্ত ছই সম্প্রতি নিয়েছেন যা দেশের ভবিষ্যতের জন্য ক্ষতিকর প্রমাণিত হতে পারে। শুধু তাই নয়, ছইয়ের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপেরও অভিযোগ আছে। যদিও সবই ভিত্তিহীন বলে সংবাদমাধ্যম আর দেশের মানুষকে জানিয়েছেন ছই। এই অবস্থায় গত পরশু ছইকে আটক করে পুলিশ। কিন্তু সরকারি আইনজীবীদের একাংশের দাবি, অবিলম্বে গ্রেফতার করা হোক প্রেসিডেন্টের দীর্ঘদিনের এই বান্ধবীকে। অথচ প্রেসিডেন্ট পার্ক এই গোটা বিতর্কে নিজের বান্ধবীকে নিয়ে মুখ না খুলে মন্ত্রিসভায় দু’টি গুরুত্বপূর্ণ রদবদল সেরে ফেলেছেন। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হোয়াং কিও-আন-কে সরিয়ে সেই পদে বহাল করেছেন কিম বিয়ং-জুন-কে। একই ভাবে সরানো হয়েছে আগের অর্থমন্ত্রীকেও। নতুন প্রধানমন্ত্রী জুন আবার প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের খুব ঘনিষ্ঠ ছিলেন। নিজের নতুন দায়িত্ব নিয়ে মুখ খোলেননি জুনও। আজ সকালে একটা সাংবাদিক বৈঠক ডেকেও শেষমেশ তা বাতিল করে দেন তিনি। জানান, যা বলার তিনি কাল বলবেন।
ক্ষিপ্ত বিরোধীদের বক্তব্য, পার্লামেন্টের সদস্যদের অনুমতি না নিয়ে এ ভাবে মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে পারেন না দেশের প্রেসিডেন্ট। সে ক্ষেত্রে ক্ষমতা থেকে পার্ককে সরিয়ে দেওয়ার দাবিও তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, অবিলম্বে ইস্তফা দিন পার্ক। যা দক্ষিণ কোরিয়ার ইতিহাসে বিরল। এত দিন দেশের কোনও প্রেসিডেন্টকে পাঁচ বছরের মেয়াদ ফুরনোর আগেই ইস্তফা দিতে হয়নি বা ইমপিচমেন্টের মুখোমুখি হতে হয়নি। বিরোধীরা অবশ্য এখনই ইমপিচমেন্টের কথা বলছেন না। তবু যদি শেষ পর্যন্ত পার্ককে সরতেই হয়, তা হলে ষাট দিনের মধ্যে ফের নির্বাচন হবে দক্ষিণ কোরিয়ায়।