কিশোর খুনের প্রতিবাদ। ছবি: এএফপি।
কেঁদেই চলেছে ছেলে। তার চুলের মুঠি ধরে রয়েছে এক জন। অন্য জন তার হাত পিছমোড়া করে বাঁধছে খুঁটির সঙ্গে। চেঁচিয়েই চলেছে ছেলে, ‘ছেড়ে দাও’। কিন্তু কে শোনে তার কথা। লাঠির ঘা কখনও পড়ছে পায়ে, কখনও পিঠে, কখনও মাথায়।
এ ভাবেই চলল টানা ৩০ মিনিট। এক সময় মাটিতে লুটিয়ে পড়ল ছেলে। মারধর তবু থামল না। ক্রমে শান্ত হয়ে গেল তেরো বছরের সামিউল আলম রাজনের দেহটা। এতেও রাগ মিটল না হত্যাকারীদের। গোটা ঘটনাটা ভিডিও করে রেখেছিল ছড়িধারীদের এক জন। পরে সেটি ফেসবুকে দিয়ে দেয় সে। গর্বের সঙ্গে জানায়, ‘চুরির শাস্তি’।
৮ জুলাই সিলেটের কুমারগাঁও-এর ঘটনা। খবর প্রকাশ্যে আসতেই হইচই পড়ে যায় সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে। অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে ছেয়ে যায় ফেসবুক, টুইটার। আজ সিলেটের রাস্তায় পা মিলিয়েছিলেন শ’খানেক নারী-পুরুষ। অভিযুক্তদের এক জনকে ঘটনার দিনই ধরে ফেলেছিল স্থানীয় মানুষ। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে তাকে। চাপের মুখে পড়ে বাকিদের হন্যে হয়ে খুঁজছে বাংলাদেশ পুলিশ।
কিন্তু কেন এ ভাবে হত্যা করা হল সামিউলকে? শিশুশ্রমিক ছেলেটির বাবা গাড়ি চালান। অভিযুক্তদের দাবি, একটি ভ্যান রিকশা চুরি করেছিল তেরো বছরের ছেলেটি। সেই অপরাধেই তাকে তুলে এনে শাস্তি দিতে চেয়েছিল ওই তিন জন। ‘মৃত্যুদণ্ড’ দিয়েও সাধ মেটেনি। তাই তারা ফেসবুকেও পোস্ট করে দেয় হত্যাকাণ্ডটি। পুলিশ জানায়, তখনই তাদের দেখে ফেলে স্থানীয় লোকজন। ২২ বছরের মুহিত আলমকে ধরে ফেলেন তাঁরা। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাকে। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার বলেন, ‘‘বাকিদের ধরতে আলমকে জেরা করা হচ্ছে।’’