ঘুম ভাঙল যখন, মাথাটা ভালুকের মুখের ভিতর!

বছর উনিশের ওই যুবকের মাথা কামড়ে টেনে নিয়ে বেশ কয়েক পা এগিয়েও গিয়েছে ভালুকটি। রবিবার কলোরাডোর একটি সামার ক্যাম্পে ঘটেছে এই ঘটনা।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

কলোরাডো শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০৩:১৮
Share:

ক্ষতবিক্ষত: ডিলানের মাথা।

সামার ক্যাম্পে স্লিপিং ব্যাগে জম্পেশ ঘুম দিয়েছিলেন ডিলান। স্বপ্নে যেন কী একটা ‘খচরমচর’ শব্দ। না, স্বপ্ন কোথায়, মাথায় যে অসহ্য যন্ত্রণা! সঙ্গে সঙ্গে কাটল ঘুমের ঘোর। চোখ মেলতেই সামনে মূর্তিমান বিভীষিকা। তাঁর মাথায় দাঁত বসিয়েছে এক কালো ভালুক।

Advertisement

বছর উনিশের ওই যুবকের মাথা কামড়ে টেনে নিয়ে বেশ কয়েক পা এগিয়েও গিয়েছে ভালুকটি। রবিবার কলোরাডোর একটি সামার ক্যাম্পে ঘটেছে এই ঘটনা।

কলোরাডোর উদ্যান ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ দফতরের মুখপাত্র জেনিফার চার্চিল জানিয়েছে, রবিবার ভোর সাড়ে চারটে নাগাদ তাবুতে স্লিপিং ব্যাগের ভিতর ঘুমোচ্ছিলেন ডিলান। ক্যাম্পের বাকিরাও তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেই সময়ই কোনও ভাবে ঢুকে পড়েছিল ভালুকবাবাজি। কালক্ষেপ না করে সে দাঁত বসায় ডিলানের মাথায়। গভীর ঘুমে ডুবে থাকা ওই যুবক প্রথমটায় বুঝতে পারেননি কিছু। তাঁর কথায়, ‘‘মনে হল, কেউ যেন কিছু চিবোচ্ছে। সে যে আমার মাথাতেই, বুঝতেও পারিনি। এখন মনে হচ্ছে, মাথার খুলিতে দাঁত বিঁধে যাওয়ায় ওই রকম শব্দ হচ্ছিল।’’ তিনি জানিয়েছেন, ভালুকটা তাঁর মাথার পিছন দিকটা কামড়ে ধরে। তারপর টানতে টানতে প্রায় ১০ থেকে ১২ ফুট এগিয়ে নিয়ে যায়। সেই সময়েই ক্যাম্পের বাকিদের ঘুম ভেঙে যাওয়ায় চিৎকার শুরু করে তাঁরা। হইহই করে ভালুকটির দিকে তেড়ে আসেন অনেকে। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে জন্তুটিকে ঘুষি মারেন ডিলানও। তখনই বিপদ বুঝে তাঁকে ছেড়ে জঙ্গলে চম্পট দেয় কালো ভালুক। ডিলানকে সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যান বাকিরা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। পরে তিনি বলেছেন, ‘‘ভালুকটা যখন মাথাটা কামড়ে ধরে ধীরে ধীরে টানছিল, আমার মনে হয়েছিল এই বুঝি শেষ। আর বাঁচব না।’’

Advertisement

গত মাসেও আলাস্কায় কালো ভালুকের আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। তার পর থেকেই সচেতন বন দফতর। বন দতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, কোনও ভাবে উত্যক্ত না করলে বা বিরক্ত না হলে কালো ভালুক সাধারণত আক্রমণ করে না। কিন্তু রবিবার সুযোগ পেয়ে ক্যাম্পে হানা দিয়ে অকারণেই ডিলানের উপর চড়াও হয় কালো ভালুকটি। চার্চিল জানিয়েছেন, জন্তুটির কয়েক দিনের মধ্যে আর ফিরে আসার সম্ভাবনা নেই। তাই সামার ক্যাম্পটি এখন খোলাই রাখা হচ্ছে। কলোরাডোর উদ্যান ও বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ দফতর ভালুকটি খুঁজে বার করে ওই এলাকা থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করছে।

ক্যাম্পের এক মুখপাত্র বলেছেন, ‘‘রকি মাউন্টেন ন্যাশনাল পার্কের কয়েক মাইলের মধ্যে এই সামার ক্যাম্প হওয়ায়, মাঝেমধ্যেই পাহাড় থেকে বন্যপ্রাণী নেমে আসার সম্ভাবনা থাকে। বনবিড়াল, বড় হরিণ বা ভালুক আক্রমণ করলে কী ভাবে মোকাবিলা করা হবে, তাই শেখানো হয় এই ক্যাম্পে।’’

বিপদসঙ্কুল অরণ্যে আত্মরক্ষার উপায় শেখান ডিলানও। আর রবিবার তিনিই কী না পড়লেন ভালুকের খপ্পরে!

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন