তখন জোরকদমে চলছে পার্টি। হই-হুল্লোড়ে কান পাতা দায়। সুইমিং পুলের চারপাশে উপচে পড়ছে ভিড়। সেই ভিড় ঠেলে হঠাৎই আগমন পুলিশের! আর তাতেই স্তব্ধ হল উল্লাস।
এক পুলিশকর্মী মুহূর্তের মধ্যে হিড় হিড় করে টেনে আনলেন এক কৃষ্ণাঙ্গ কিশোরীকে। তার পিঠের উপর পা দিয়ে দাঁড়িয়ে রইলেন। পার্টি তত ক্ষণে পণ্ড হয়েছে। ওই পুলিশকর্মী অবশ্য তাতে ক্ষান্ত দেননি। পার্টির আরও বেশ কয়েক জন কৃষ্ণাঙ্গকে হেনস্থা করেন তিনি। গত শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে টেক্সাসের ম্যাকেনির একটি কমিউনিটি পুল পার্টিতে। পুলিশের এই দুর্ব্যবহারের দৃশ্য ক্যামেরাবন্দি করে ইউ-টিউবে ছড়িয়ে দিয়েছে পার্টিরই এক অতিথি ১৫ বছরের ব্র্যান্ডন ব্রুকস। ভিডিও ছড়িয়ে পড়তেই তোলপাড় হয়েছে ইন্টারনেট। সাসপেন্ড করা হয়েছে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী এরিক কেসবোল্টকে। কৃষ্ণাঙ্গদের লক্ষ্য করে এই পুলিশি জুলুমের ভিডিও প্রকাশিত হওয়ার পরে স্বাভাবিক ভাবেই বর্ণবিদ্বেষের ইঙ্গিতই স্পষ্ট হয়েছে। অবশ্য ওই পার্টিতে উপস্থিত অনেকেই বলছেন, এর সঙ্গে বর্ণবিদ্বেষের সম্পর্ক নেই। এরিকের অবশ্য দাবি, তাঁর সঙ্গে অকারণে দুর্ব্যবহার করেছিল ওই কিশোরী। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন তিনি। তবে ব্র্যান্ডনের দাবি, বেছে বেছে কৃষ্ণাঙ্গদেরই আক্রমণ করেছিলেন এরিক। কোনও আঁচ লাগেনি শ্বেতাঙ্গদের গায়ে
তবে ওই পার্টিতে পুলিশ কেন এসেছিল?
এই প্রশ্নের সদুত্তর নেই কারও কাছে। ব্র্যান্ডন বলছে, এক কিশোরী ও তাঁর মায়ের মধ্যে বচসা হচ্ছিল। তার জেরেই পুলিশ আসে। স্থানীয় বাসিন্দা বছর তেতাল্লিশের বেনেট এমব্রির অবশ্য বক্তব্য, ওই এলাকায় বর্ণবিদ্বেষের সমস্যা মোটেও নেই। তাঁর দাবি, নিয়ম না মেনেই বেশি অতিথিকে পার্টিতে ঢুকতে দেওয়ার জন্য চিৎকার করছিল কিশোর-কিশোরীরা। সকলকে ঢুকতে দেওয়ার জন্য রক্ষীদের জোর করছিল তারা। দু’-এক জন রেলিং ডিঙিয়ে বেরিয়েও আসে। পরিস্থিতি সামলাতে তাই পুলিশকে ডাকা হয়। তবে পুলিশ জানিয়েছে, ওই পার্টি থেকে বেশ কয়েক বার ফোন এসেছিল। পুলের পাশে মারপিট হচ্ছে বলেও খবর মিলেছিল। লোকজন জোর করে ভিতরে ঢুকে পড়ছিল, মারামারি এবং ভাঙচুর চলছিল বলেও পুলিশকে জানানো হয়। ফলে নিরাপত্তার স্বার্থেই সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। তবে পুলিশের এমন ব্যবহার যে মোটেও কাম্য নয় তা উল্লেখ করে ম্যাকেনির মেয়র ব্রায়ান লাওমিলার জানান, এর সঙ্গে বর্ণবিদ্বেষের কোনও যোগ নেই। পুলিশ কখনওই বর্ণবিদ্বেষ সমর্থন করে না।