ক্ষতি হতে দেব না, ক্ষমাপ্রার্থী কোচ

এত দিন বাদে সদ্য ষোলোয় পা দেওয়া ছেলের হাতের লেখা পেয়ে কেঁদে ফেলেছেন নাইটের মা। একই অবস্থা বাকিদেরও। সকলেরই একটাই কামনা, সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরুক ছেলে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ব্যাঙ্কক শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৮ ০৩:২৯
Share:

জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। ছবি: এএফপি।

১২টি বাচ্চার দায়িত্ব এখন তাঁর কাঁধে। বয়স মাত্র ২৫। ২৩ জুন খেলার পরে কিশোর ফুটবল দলকে নিয়ে গুহায় ঢুকেছিলেন কোচ এক্কাপল চান্তাওয়ং। যেমনটা প্রায়শই ঢুকতেন। হড়পা বান আসতে পারে, ঘুনাক্ষরেও টের পাননি। সেই থেকে ১২ দিনেরও বেশি সময় গুহার ভিতরেই। সঙ্গে তাঁর খুদে ফুটবল দল।

Advertisement

এক সপ্তাহ ধরে উদ্ধারের প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছে আন্তর্জাতিক উদ্ধারকারী দল। গত কাল গুহায় ঢুকে অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয়েছে এক ডুবুরির। তবু আশা ছাড়ছে না কেউই। জোরকদমে চলছে উদ্ধারকাজ। মাঠের মতোই গুহার ভিতরেও দলকে মনোবল জুগিয়ে চলেছেন কোচ এক্কাপল। যত ক্ষণ পর্যন্ত না উদ্ধারকারী দল তাঁদের খোঁজ পেয়েছে, তত ক্ষণ পর্যন্ত নিজের ভাগের খাবারটুকুও ছাত্রদের মুখেই তুলে দিয়েছেন তিনি। মোটামুটি ঠিকই আছে খুদেরা। তবু এই বিপত্তির জন্য নিজেকেই দায় করেছেন এক্কাপল।

গত কাল ডুবুরিদের হাত দিয়ে খুদেদের বাবা-মায়ের উদ্দেশে একটি চিঠি লিখে পাঠিয়েছেন কোচ। তাঁদের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন বাচ্চাদের ঝুঁকির মধ্যে নিয়ে আসার জন্য। লিখেছেন, ‘‘ওদের ক্ষতি হতে দেব না। সবাইকে পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ।’’ জানিয়েছেন, বাড়ি ফিরে কাকিমার রান্না খাওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন তিনি। নৌবাহিনীর সাইটে এক্কাপলের ওই চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে।

Advertisement

বাবা-মাকে নিশ্চিন্ত করতে চিঠি লিখে পাঠিয়েছে ওয়াল্ড বোরে ফুটবল দলও। বিউ নামের এক খুদে লিখেছে, ‘‘মা-বাবা, আমি দু’সপ্তাহ তোমাদের থেকে দূরে। ফিরে এসে আমি ঠিক তোমাকে দোকানের কাজে সাহায্য করব।’’ দম নামের আরও এক খুদে বাবা-মাকে জানিয়েছে, ‘‘ভাল আছি, এখানে একটু ঠান্ডা’’। বছর পনেরোর নিকের বাবা-মায়ের কাছে এখনও একটাই চাওয়া, ‘‘আমার জন্য গ্রিলড পর্ক আর নিরামিষ কিছু আনবে তো।’’

গুহা থেকে কোচের সেই চিঠি।

এত দিন বাদে সদ্য ষোলোয় পা দেওয়া ছেলের হাতের লেখা পেয়ে কেঁদে ফেলেছেন নাইটের মা। একই অবস্থা বাকিদেরও। সকলেরই একটাই কামনা, সুস্থ ভাবে ঘরে ফিরুক ছেলে।

সাঁতারের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে ওই কিশোরদের। তবে এখনই গুহায় সাঁতার কাটার মতো তৈরি নয় তারা। ফের বৃষ্টি হলে গুহায় জল বাড়ার আশঙ্কা। তার আগে পাম্প করে আরও জল বার করে দিতে চান উদ্ধারকারীরা। বন্দিদের কাছে পৌঁছতে গুহার আশপাশে খোঁড়া হচ্ছে গর্ত। ইতিমধ্যেই ড্রিল করে একশোটিরও বেশি সুড়ঙ্গ খুঁড়ে ফেলেছেন তারা। ভাবা হচ্ছে অন্য বিকল্পও। যে পথে কিশোররা ঢুকেছিল, সেই পথেই লম্বা পাইপ নিয়ে গিয়ে তাতে হাওয়া ভরে দিলে, সেই পথেই কিশোররা বেরিয়ে আসতে পারবে। এই বিকল্পটির ভালমন্দ সব দিক আপাতত পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন