Israel-Hamas Conflict

গাজ়া নিয়ে বার্তা দিলেন ইইউ-কর্তা

একটি আমেরিকান টিভি চ্যানেলে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরে যে ভাবে হাজার হাজার প্যালেস্টাইনিকে হত্যা করা হচ্ছে, তাতে কি নতুন প্রজন্মে ঘৃণা বাসা বাঁধবে না?

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:৩৭
Share:

ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। —ফাইল চিত্র।

টিভি কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় গাজ়ার যে ছবি প্রতি দিন ভেসে উঠছে, তাতে আন্তর্জাতিক মঞ্চে কার্যত একঘরে ইজ়রায়েল। এমনকি ইজ়রায়েলের অতি বড় মিত্র দেশ আমেরিকাও বলছে, এত মৃত্যু দেখা যায় না। এ অবস্থায় আজ ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বললেন, ‘‘প্রাণহানি কমানোর চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু আমরা ব্যর্থ।’’

Advertisement

একটি আমেরিকান টিভি চ্যানেলে নেতানিয়াহুকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পরে যে ভাবে হাজার হাজার প্যালেস্টাইনিকে হত্যা করা হচ্ছে, তাতে কি নতুন প্রজন্মে ঘৃণা বাসা বাঁধবে না?

জবাবে ইজ়রায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘যে কোনও মানুষের মৃত্যু দুঃখজনক। সাধারণ মানুষকে বিপদের হাত থেকে দূরে রাখতে যা যা করা সম্ভব, আমরা করছি। আর হামাস মানুষকে বিপদে ফেলার জন্য যা যা করা যায়, তা-ই করছে।’’ এ কথা আগেও বলেছিলেন নেতানিয়াহু। দাবি করে চলেছেন, এত সংখ্যক মৃত্যুর জন্য পরোক্ষে দায়ী হামাস-ই। তিনি বলেন, ‘‘হামলার আগে আমরা লিফলেট ছড়িয়েছি। ফোন করে সাবধান করেছি। যে অঞ্চলে হামলা চলবে, সেই জায়গা ফাঁকা করে দিতে বলেছি। অনেকে আমাদের কথা শুনেওছেন।’’ নেতানিয়াহুর এই দাবি অসত্য নয়। উত্তর গাজ়ায় লোকজনকে লিফলেট ছড়িয়ে অন্যত্র চলে যেতে বলা হয়েছিল। এ বার দক্ষিণ গাজ়াতেও একই নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু এটা স্পষ্ট নয়, তাঁরা কোথায় যাবেন! গোটা গাজ়া স্ট্রিপ-ই তো যুদ্ধক্ষেত্র। সাক্ষাৎকারে নেতানিয়াহু বলেছেন, ‘‘আমরা প্রাণহানি যতটা সম্ভব কম রেখে কাজ শেষ করার চেষ্টা করছি। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক, আমরা ব্যর্থ।’’

Advertisement

ইজ়রায়েলি বায়ুসেনার হামলায় আজ জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে ১৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন। খান ইউনিসে একটি বাড়িতে বোমা ফেলেছিল বাহিনী। তাতে চার জনের মৃত্যু হয়েছে। খান ইউনিসের পূর্ব দিকে বানি সুহাইলাতেও একটি বাড়িতে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে তারা। হতাহতের কোনও হিসাব নেই। মধ্য গাজ়ার নুসেরাত শরণার্থী শিবিরে আকাশপথে হামলায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। দক্ষিণ গাজ়া শহরে জ়েতুন এলাকায় আল-ফালা স্কুলে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শতাধিক জখম। ঘরবাড়ি হারানো হাজার হাজার মানুষ স্কুলটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তবে অধিকাংশ খবরই বাইরে আসছে না। গাজ়ার যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর বিদেশ নীতির প্রধান জোসেফ বোরেল আজ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়েছেন। গাজ়া স্ট্রিপের সীমান্তবর্তী অঞ্চল ঘুরে দেখে তিনি বলেছেন, ‘‘গাজ়ায় হামাসের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ চলছে, সেটা গোটা বিশ্বের রাজনৈতিক ব্যর্থতা।’’ মানবতার খাতিরে শান্তিচুক্তি এবং গাজ়ায় আরও বেশি পরিমাণ ত্রাণ ঢুকতে দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন তিনি। বোরেল বলেন, ‘‘ইজ়রায়েলকে আন্তর্জাতিক আইন মানতেই হবে।’’ এ-ও জানিয়েছেন, যা-ই হোক না কেন, গাজ়া স্ট্রিপ প্যালেস্টাইনিদেরই থাকবে। আমেরিকাও জানিয়েছে, ইজ়রায়েল গাজ়া দখল করতে পারবে না। ইইউ এবং আমেরিকার চাপের মুখে আজ ইজ়রায়েলের যুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রিসভা গাজ়ায় প্রতিদিন দু’টি জ্বালানিবাহী ট্রাক ঢুকতে দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন