ফাইল চিত্র।
ভুলটা যদি হয়ে যায়, তা হলে সেটা শুধরোনোর ক্ষমতা কারও থাকবে না। কথাটা বুঝতে পেরেছিলেন স্তানিস্লাভ পেত্রভ। গোটা পৃথিবী বেঁচে গিয়েছিল তার জন্য।
ঠান্ডা যুদ্ধের তুঙ্গ পর্বে একক সিদ্ধান্তে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা আটকে দিয়েছিলেন পেত্রভ। সাবেক সোভিয়েতের সেই সামরিক অফিসার মারা গেলেন ৭৭ বছর বয়সে। মে মাসেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। কিন্তু খবরটা জানত না কেউ সে ভাবে। সম্প্রতি এক জার্মান চিত্রপরিচালক জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাবেন বলে ফোন করতে গিয়ে পেত্রভের পরিবার সূত্রে বিষয়টা জানতে পারেন। সারা পৃথিবীই এক অর্থে পেত্রভের কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ ১৯৮৩ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর তাঁর উপস্থিত বুদ্ধিতেই একটা পারমাণবিক যুদ্ধ বাধতে গিয়েও বাধেনি। সোভিয়েতের পারমাণবিক সতর্কবার্তা পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসার ছিলেন পেত্রভ। সে দিন দেখতে পান, কম্পিউটার বলছে আমেরিকা থেকে ক্ষেপণাস্ত্র ছুটে আসছে সোভিয়েতের দিকে। হিসেব মতো, তাঁর কর্তব্য ছিল তক্ষুণি শীর্ষ কম্যান্ডারদের বিষয়টা জানানো। আর জানানো মানেই, প্রতি আক্রমণ। কিন্তু প্রবল ঝুঁকি নিয়েও কয়েক মুহূর্ত চুপ থেকে যান পেত্রভ। কাউকে ফোন করেননি। কারণ তাঁর মন বলছিল, ব্যাপারটা কম্পিউটারের গণ্ডগোলও হতে পারে।
পেত্রভের অনুমানই সঠিক ছিল। কারণ একটু পরেই স্পষ্ট হয়, আমেরিকা কোনও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়েনি। পেত্রভের মনে সংশয় যদি না জমত, তবে সে দিন মার্কিন-সোভিয়েত পরমাণু যুদ্ধ বেধে যাওয়া প্রায় অবশ্যম্ভাবী ছিল। পরে অবশ্য ওই দিনের বিবরণী-রেকর্ড খাতায় কিছু ফাঁক কেন রয়ে গেল, কম্পিউটার কেন বিগড়োল ইত্যাদি নিয়ে পেত্রভকেই বলির পাঁঠা করা শুরু হয়। পরের বছরই পেত্রভ চাকরি থেকে অবসর নেন। ১৯৯৮ সালে জেনারেল ইউরি ভনটিনসেভ-এর স্মৃতিকথা প্রকাশের আগে পর্যন্ত পেত্রভের অবদানের কথা কেউ জানতেই পারেনি।