দেশে আসতে চাওয়া মানুষদের অভ্যর্থনা জানিয়ে পোস্টার ডেনভারে। ছবি: রয়টার্স।
আমেরিকায় গত দুই বছরে বিশেষ ইবি-ফাইভ ভিসা নেওয়ায় ক্ষেত্রে ভারতীয়দের সংখ্যা বাড়ল প্রায় চার গুণ। বিপুল পরিমাণ টাকা এবং কিছু শর্তের বিনিময়ে মেলে এই বিশেষ ভিসা। মার্কিন বিদেশ দফতর প্রকাশ করল এই সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান। গত দুই বছরের এই প্রবণতার ফলে দক্ষিণ কোরিয়া এবং তাইওয়ানকে টপকে এখন তিন নম্বরে চলে এল ভারত। ভারতের আগে এখন শুধু চিন আর ভিয়েতনাম।
ক্যাশ ফর গ্রিন কার্ড, অর্থাৎ টাকা দিয়ে গ্রিন কার্ড— এই নামেই ডাকা হয় ইবি-ফাইভ ভিসাকে। এক মিলিয়ন ডলার অর্থাৎ প্রায় সাত কোটি টাকা বিনিয়োগের পাশাপাশি বছরে অন্তত দশ জন মার্কিন নাগরিকের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিলে, তবেই মেলে এই ভিসা। রিয়েল এস্টেটের মতো কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এই জমা রাখা টাকার পরিমাণ কমিয়ে প্রায় সা়ড়ে তিন কোটি টাকা করেছে মার্কিন প্রশাসন, যা জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ভারতীয়দের কাছে।
মার্কিন বিদেশ দফতর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে মোট ৫৮৫ জন ভারতীয় আবেদনকারী এই শর্তাধীন গ্রিন কার্ড পেয়েছেন। সেখানে ২০১৭ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৭৪। তার আগের বছরে মাত্র ১৪৯ জন ভারতীয় এই গ্রিনকার্ডের মাধ্যমে আমেরিকায় থাকার ছাড়পত্র জোগাড় করতে পেরেছিলেন। অর্থাৎ, শেষ দু’বছরে এই ভিসা পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতীয়দের সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ২৯৮ শতাংশ। ২১ মাস ধরে গ্রিনকার্ড থাকলে তবেই কেউ পুরোদস্তুর মার্কিন নাগরিক হওয়ার জন্য আবেদন করতে পারেন।
আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
আমেরিকায় কাজ করতে গিয়ে থাকার জন্য যে এইচ-ওয়ান বি ভিসা লাগে, সেই সব ক্ষেত্রে মার্কিন নীতি আরও কঠিন হওয়াতেই টাকা দিয়ে গ্রিনকার্ড নিতে ভিড় বাড়ছে ভারতীয়দের, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের নজরে এসেছে যে, ভারতে থাকা ধনী ব্যক্তিরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের আমেরিকায় পড়তে পাঠানোর পরই এই বিশেষ গ্রিনকার্ডের জন্য আবেদন করে দিচ্ছেন। এর ফলে পড়াশোনা শেষ হওয়ার পর তাঁরা সহজেই আমেরিকাতে থেকে কাজ করার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের আর এইচ-ওয়ান বি ভিসার জন্য হা-পিত্যেশ করে বসে থাকতে হচ্ছে না। সেই কারণেই জনপ্রিয়তা বাড়ছে এই বিশেষ গ্রিনকার্ডের।
আরও পড়ুন: ভারতে ফের জঙ্গি হামলা হলে খুব বিপদে পড়বে পাকিস্তান, হুঁশিয়ারি আমেরিকার
প্রতি বছর বিদেশিদের জন্য মোট ১০ হাজার ইবি-ফাইভ ভিসা নির্দিষ্ট রেখেছে আমেরিকা। আবার কোনও দেশই মোট ভিসার ৭ শতাংশের বেশি পাবে না, এই শর্তও আরোপ করেছে মার্কিন প্রশাসন। এই কারণেই ভিয়েতনাম এবং চিনের বিনিয়োগকারীরা অনেক বেশি সংখ্যায় আমেরিকায় থাকতে চাইলেও আটকে যাচ্ছেন ৭ শতাংশের গেরোয়। সেই কারণেই বাড়ছে ভারতীয়দের আরও বেশি করে সুযোগ পাওয়ার ঘটনা।