কিমের পরীক্ষায় ‘ক্লান্ত’ পর্বত বদলাচ্ছে জায়গা

বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রতি বারই পরমাণু পরীক্ষার জেরে ছোটবড় ভূকম্পে কেঁপে ওঠে উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন অংশ। সব চেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয়েছিল পুনগেই-রি পরমাণু পরীক্ষার পরে। গত ৪ সেপ্টেম্বর মাউন্ট মান্তাপের নীচে পরীক্ষাটি হয়। সেই দিন হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মাটি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

টোকিও শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:০০
Share:

আজ একে হুঙ্কার, তো কাল ওকে হুমকি। শুধু কি তাই, প্রায় প্রতিদিনই নিত্যনতুন পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় মেতে উত্তর কোরিয়া। আর এই শক্তি পরীক্ষার জেরেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উত্তর কোরিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদ। এমনটা অবশ্য দাবি করছে পড়শি দেশ চিন। তাদের দাবি, এতে বদলে যাচ্ছে পর্বতের ভৌগোলিক অবস্থান, আয়তনও। আর তাতে শুধু উত্তর কোরিয়া নয়, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাদের দেশও।

Advertisement

বিজ্ঞানীদের দাবি, প্রতি বারই পরমাণু পরীক্ষার জেরে ছোটবড় ভূকম্পে কেঁপে ওঠে উত্তর কোরিয়ার বিভিন্ন অংশ। সব চেয়ে বড় ভূমিকম্পটি হয়েছিল পুনগেই-রি পরমাণু পরীক্ষার পরে। গত ৪ সেপ্টেম্বর মাউন্ট মান্তাপের নীচে পরীক্ষাটি হয়। সেই দিন হাইড্রোজেন বোমার পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে মাটি। উপগ্রহ চিত্রে ধরা পড়েছিল পাহাড়ে ধস নামার ছবি। রিখটার স্কেলে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পটি অনুভূত হয় চিনেও। এর পরেই পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, বদলে গিয়েছে ৭২০০ ফুট উঁচু মাউন্ট মান্তাপের অবস্থান। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন, ‘টায়ার্ড মাউন্টেন সিন্ড্রোম’। চিনা গবেষকদের আশঙ্কা, এ ভাবে চলতে থাকলে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়তে পারে মাউন্ট মান্তাপ। তাঁদের দাবি, বিস্ফোরণের ফলে ভূগর্ভস্থ পাথরের বৈশিষ্ট্যের অদলবদল ঘটছে। চিড় ধরছে পাথরে।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সিসমোলজিস্ট পল রিচার্ডসের কথায়, ‘‘পৃথিবীর কিছু কিছু অংশ এমনিতেই ভূমিকম্প-প্রবণ। তার উপরে লাগাতার বিস্ফোরণে পরিস্থিতি আরও খারাপ।’’ তাঁদের আশঙ্কা, আরও ভয়াবহ ভূমিকম্পের সম্মুখীন হতে চলেছে কোরীয় উপদ্বীপ।

Advertisement

২০০৬ সালে মোট ৬টি পরমাণু পরীক্ষা করেছিল উত্তর কোরিয়া। সেগুলির প্রায় সব ক’টিই করা হয় মাউন্ট মান্তাপের সুড়ঙ্গে। ওই এলাকাটি বিখ্যাত ‘পুনগেই-রি নিউক্লিয়ার টেস্ট ফেসিলিটি’ নামে। মাউন্ট মান্তাপের গতিবিধির উপরে তাই কড়া নজর রাখছেন বিশেষজ্ঞরা।

নিউজিল্যান্ডের ভিক্টোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভলক্যানোলজির অধ্যাপক কলিন উইলসনের দাবি, বারবার এই ধরনের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা হতে থাকলে জেগে উঠতে পারে উত্তর কোরিয়া ও চিনের সীমান্ত থেকে মাত্র ৮০ মাইল দূরে অবস্থিত আগ্নেয়গিরি মাউন্ট পিকদুও। ১৯০৩ সালের পর থেকে ঘুমিয়ে রয়েছে সে।

রাষ্ট্রপুঞ্জের নিষেধাজ্ঞা উড়িয়ে একের পর এক পরমাণু পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে কিম-জং-উনের দেশ। বরাবরই তাদের পাশে থেকেছে চিন। আমেরিকা তাই চিনকে অনুরোধ করেছিল উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে কথা বলতে। কিন্তু কোনও দিনই সে পথে হাঁটেনি চিন। এখন ঘাড়ের উপর পাহাড় ভেঙে পড়বে বলেই কি সরব হচ্ছে চিন? উঠছে প্রশ্ন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন