মাসুদ আজহার।
ছোট্ট এক টুকরো কাগজে পড়ুয়াদের বিতর্ক প্রতিযোগিতায় যোগ দেওয়ার ডাক। ডেকেছে ‘আল মুরাবিতুন’ নামে একটি সংগঠন। প্রাথমিক ভাবে, সন্দেহজনক কিছু চোখে পড়ার মতো নেই। বিতর্কের বিষয়বস্তু ধর্মীয় শিক্ষা থেকে রাজনীতি। গোটা অনুষ্ঠান রেকর্ড বা ভিডিও করা নিষিদ্ধ ছিল। আসল চমক ছিল পুরস্কারে। মেডেল বা ট্রফি নেই, পুরস্কার ‘তলোয়ার’। আর বিজয়ীর হাতে সেই পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন মাসুদ আজহার নিজে। পুরস্কারের মঞ্চে অতিথি হিসেবে উপস্থিত জইশের নেতারা।
তথ্যপ্রমাণ ঘেঁটে ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, নিশ্চুপেই সংগঠনের নাম বদলে ফেলেছে জইশ-ই-মহম্মদ। তাদের নয়া পরিচয়, আল মুরাবিতুন’। নতুন করে পাকিস্তানে শাখাপ্রশাখা বিস্তার করতে চলেছে মাসুদ আজহারের সংগঠন। লক্ষ্য মূলত পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাসগুলো। ভারতীয় গোয়েন্দারা বলছেন, ইসলামাবাদ, করাচি, লাহৌর, রাওয়ালকোটের স্কুল-কলেজগুলোতে বিতর্ক প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে তারা। বিতর্কের নামে তরুণ-মনে সন্ত্রাসের বীজ বপন করে দেওয়াই তাদের লক্ষ্য।
ভারতীয় গোয়েন্দাদের দাবি, বেশ সুপরিকল্পিত ভাবেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। ভারত ও আমেরিকা কোনও নিষেধাজ্ঞা চাপালে, তা পড়বে জইশের ঘাড়ে। আল মুরাবিতুন স্বাধীন ভাবেই জঙ্গি কার্যকলাপ চালিয়ে যেতে পারবে। তা ছাড়া, এ ভাবে স্কুল-কলেজে প্রচার চালালে তহবিল মজবুত হবে। তবে যেটি মূল কারণ বলে সন্দেহ গোয়েন্দাদের, তা হল, লস্কর-ই-তইবা ও তালিবানের দাপটে পাকিস্তানে প্রায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে জইশ। অনেক দিন ধরেই নতুন করে সংগঠন ছড়াতে পথ খুঁজছিল জইশ। স্কুল-কলেজগুলোকে ধরে তাই এক রকম ‘ছাত্র-সংগঠন’ তৈরির চেষ্টায় রয়েছে তারা।
পাকিস্তানের দাবি, গৃহবন্দি রয়েছেন আজহার। কিন্তু দিল্লির পাল্টা দাবি, গৃহবন্দি দশা তো দূরে থাক, কাশ্মীর নিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে প্রকাশ্য জনসভা করছেন আজহার। সর্বশেষ তাঁকে দেখা গিয়েছিল ২ ডিসেম্বর পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের রাওয়ালকোটে।