চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়াতে লড়াই ফের পার্লামেন্টে

ব্রেক্সিট নীতি নিয়ে পর পর দু’বার মুখ পোড়ার পরেও টেরেসার সামনে ইস্তফা দেওয়ার রাস্তা খোলা ছিল। কিন্তু তিনি সে পথে হাঁটতে পারছেন না। এই সময়ে সেটাও আর সম্ভব নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মাত্র দু’সপ্তাহ আগে টেরেসার কনজ়ারভেটিভ পার্টিতে এখন নেতা বাছাই করার মতো কোনও অবস্থা নেই।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১৪ মার্চ ২০১৯ ০১:৩১
Share:

ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র গলার কাঁটা হয়েই রইল।—ছবি রয়টার্স।

গলা ভেঙে গিয়েছে মঙ্গলবার রাতেই। বুধবার সকালে স্বর ফিরে পাওয়ার আশায় থাকলেও ব্রেক্সিট চুক্তি ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র গলার কাঁটা হয়েই রইল। বিশেষজ্ঞদের দাবি, টেরেসা এখন চূড়ান্ত হতাশ, তাঁর সামনে কোনও রাস্তাই খোলা নেই।

Advertisement

ব্রেক্সিট নীতি নিয়ে পর পর দু’বার মুখ পোড়ার পরেও টেরেসার সামনে ইস্তফা দেওয়ার রাস্তা খোলা ছিল। কিন্তু তিনি সে পথে হাঁটতে পারছেন না। এই সময়ে সেটাও আর সম্ভব নয়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার মাত্র দু’সপ্তাহ আগে টেরেসার কনজ়ারভেটিভ পার্টিতে এখন নেতা বাছাই করার মতো কোনও অবস্থা নেই। যাঁরা দলের অন্দরে টেরেসার বিরুদ্ধে, তাঁদেরও সে দায়িত্ব কাঁধে নেওয়ার সাহস নেই। সকলেই এখন চাইছেন, টেরেসার ঘাড়েই বন্দুক রেখে যা হওয়ার হয়ে যাক।

আপাতত সব এমপি-র লক্ষ্য, ২৯ মার্চ ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এড়ানো। আজ রাতে আবার এই নিয়ে ভোটাভুটি হতে চলেছে। যদি পার্লামেন্ট চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিপক্ষে রায় দেয়, তা হলে বৃহস্পতিবার আবার ভোট হবে— নতুন শর্তে ব্রেক্সিট চুক্তি তৈরির জন্য এমপি-রা আরও দু’মাস সময় চাইবেন ইইউ-এর কাছে। যদি বৃহস্পতিবারের ভোটে ঐকমত্য হয়, তা হলে ব্রিটেনকে ফের বেশি সময় মঞ্জুরির জন্য ইইউ-এর কাছে অনুমতি চাইতে হবে। ইইউ জানিয়েছে, মেয়াদ বাড়ানোয় সম্মতি দেওয়ার আগে টেরেসার সরকারের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য ব্যাখ্যা’ চাইবে তারা। ইইউ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ব্রিটেনের হাতে মাত্র ১৬ দিন সময় রয়েছে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ইতিমধ্যে আজ সকালে টেরেসার সরকার ঘোষণা করেছে, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট হলে ব্রিটেনে আমদানি করা পণ্যে কোনও শুল্ক চাপানো হবে না। তবে কিছু ক্ষেত্রে শুল্ক বজায় থাকবে, সেই শিল্পকে বাঁচাতে। যেমন কৃষিক্ষেত্র।

মঙ্গলবার হাউস অব কমন্সে বিরোধী নেতা লেবার পার্টির জেরেমি করবিন বলেছেন, টেরেসার উচিত এখনই সাধারণ নির্বাচনের ডাক দেওয়া। করবিনও চুক্তিহীন ব্রেক্সিটের বিপক্ষে। ব্রেক্সিটের অন্য বিকল্প প্রস্তাব চেয়ে সুর চড়াতে চান তাঁরা। তবে আবার একটি গণভোটে যাওয়ার ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেননি তিনি।

মঙ্গলবার রাতে শেষ মুহূর্তেও এমপি-দের কাছে তাঁর চুক্তি সমর্থনের জন্য আর্জি জানিয়েছিলেন টেরেসা। আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে আইনি আশ্বাস পেয়েছেন বলেও জানান তিনি। বলেছিলেন, আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সুগম বাণিজ্য যাতে বন্ধ না হয়, তার জন্য বিমা নীতি প্রণয়ন হবে। এই প্রস্তাব দিয়ে বিপক্ষে চলে যাওয়া ৪০ জন কনজ়ারভেটিভ এমপি-কে নিজের দিকে টানতে পারলেও তা যথেষ্ট ছিল না। জানুয়ারির মতোই হারের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে।

গত কাল ব্রেক্সিট চুক্তিতে ফের ঐকমত্য না হওয়ায় হতাশ ইইউ-ও। ইইউ-এর বেশ কয়েক জন নেতা এখন বলছেন, এই হারের পরে চুক্তিহীন ব্রেক্সিট এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন