হিজাব ছেড়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় সাহসী ওঁরা 

এ ব্যাপারে প্রযুক্তিগত কিছু কৌশল নেওয়ার কথাও ভাবা হয়েছে। গত বছর বাংলাদেশ থেকে ভারত ছ’লক্ষ বেল পাট আমদানি করেছিল বলে সূত্রের খবর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

আঙ্কারা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:১০
Share:

আগে-পরে: তুরস্কের তরুণী মেলেক।

হিজাব পরা ছেড়ে দিয়েছেন ওঁদের কেউ কেউ। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া #টেনইয়ারচ্যালেঞ্জ-এর মতো #ওয়ানইয়ারচ্যালেঞ্জ-এ সগর্বে নিজের ছবি দিয়ে জানাচ্ছেন সে কথা। দেশটার নাম তুরস্ক। হ্যাশট্যাগের হইহল্লায় মেতে মাথা না ঢেকে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন ওঁরা। তবে, থামছেন না।

Advertisement

হিজাব নিয়ে বিতর্ক এখানে সব সময়েই ছিল। সাধারণত সরকারি দফতর বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বহু দিন আবার হিজাব পরে যাওয়ার অনুমতি ছিল না। প্রেসিডেন্ট রিচেপ তাইপ এর্দোয়ানের শাসনে গত এক দশকে সে নিষেধ ধীরে ধীরে উঠে গিয়েছে। তুরস্কের ধর্মনিরপেক্ষ গোষ্ঠীগুলি মনে করে, হিজাব রাজনৈতিক ও ধর্মীয় রক্ষণশীলতার প্রতীক। এর্দোয়ানের সরকার ধর্মীয় উদ্দেশ্য নিয়েই এমন পদক্ষেপ করেছে। ‘ধার্মিক’ মুসলিম পরিবারগুলিও চায়, তাদের বাড়ির মেয়েরা হিজাব পরুক।

#টেনইয়ারচ্যালেঞ্জ-এ সকলে দশ বছর আগেকার ছবি শেয়ার করছেন। কিন্তু হিজাব ছাড়ার সিদ্ধান্ত অনেক বেশ সাম্প্রতিক। তাই তুরস্কের মেয়েরা #ওয়ানইয়ারচ্যালেঞ্জ লিখে ছবি পোস্ট করছেন, লিখছেন মুক্তির কথা।

Advertisement

এমনই এক জন নাজ়ান। নিজের প্যারাগ্লাইডিং করার ছবি টুইটারে দিয়েছেন তিনি। এক দিকে ছেলে কোলে হিজাব পরা আর অন্য দিকে হিজাব ছাড়া আকাশে ভাসছেন তিনি। সঙ্গে লেখা, ‘‘তুমি যা বিশ্বাস করো আর যা চাও, সে ভাবে বাঁচতে পারার মতো আনন্দ আর কিছুতে নেই।’’

আগে-পরে: তুরস্কের তরুণী নাজ়ান।

এমন অনেক মেসেজ আবার রিটুইট হয়েছে ‘ইউ উইল নেভার ওয়াক অ্যালোন’ নামে একটি পেজে। এই পেজটি চায়, যাঁরা হিজাব পরা ছেড়ে দিয়েছেন, তাঁদের কথা সবার কাছে পৌঁছে দিতে। যাঁরা হিজাব ছাড়বেন বলে এখনও দ্বিধায় আছেন, তাঁদেরও উৎসাহ দিতে চায় এই পেজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এটির প্রতিষ্ঠাতা বলেছেন, ‘এই যাত্রায় ওঁরা যে একা নন, সেটাই বোঝাতে চাই। ১৩-১৪ বছর বয়সে কাউকে এমন একটা কিছু পরতে বাধ্য করা উচিত নয়, যা তাকে সারা জীবন বইতে হবে।’

বুশরানুর নামে এক তরুণী দু’রকম ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘যে যা চায় বলুক। আমরা মুক্ত (বড় হরফে)। আর এর সঙ্গে আমাদের পরিবার বা চারপাশের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা নিজেরা আসলে কী এবং আমরা কী করতে পারি, মুক্তি ছুঁয়েছে সেই ভাবনাকে। সমাজ আমাদের জন্য যা ঠিক করা হয়েছে, আমরা শুধু সেটুকু করতে আসিনি। আমরা আমাদের মতো।’

মেলেক নামে আর এক জনের মন্তব্য, ‘আমি সব সময় হাসি! কিন্তু জীবন তো আমার জন্য শুধু গোলাপের শয্যা নয়। ইমাম হাতিপ ধর্মীয় স্কুল থেকে স্নাতক হয়েছি। ওখানে এক সময়ে হিজাব পরতে দেওয়া হবে না কেন, তার জন্য লড়াই করেছি। আর এখন এই হিজাব ছাড়ার লড়াই। আমার ভিতরেই বহু দিন ধরে দ্বন্দ্বটা ছিল। এখন লড়াইটা গোটা সমাজের বিরুদ্ধে।’

তবে ওঁদের মতো সবাই ‘লড়াইয়ে’ নামেননি। কারও কারও বক্তব্য, ‘যার ইচ্ছে হিজাব পরবে, যার ইচ্ছে পরবে না। তা নিয়ে কারও মাথা ঘামানোর কী দরকার? এ ভাবে হিজাব খুলে ছবি পোস্ট করা একেবারেই খেলো ব্যাপার। যারা হিজাব পরছে, বা যারা পরছে না, তাদের কাউকেই অসম্মান করা উচিত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন