কিম জং উন।
এ বার আন্তর্জাতিক মহলকে আরও বড় চমক দিলেন উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন। আগেই সোলের সঙ্গে আলোচনার টেবিলে বসেছিল পিয়ংইয়ং, আলোচনায় বসার আগ্রহ জানিয়ে বার্তা পাঠিয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছেও।
আরও এক ধাপ এগিয়ে শনিবার এক বিবৃতিতে পিয়ংইয়ং জানিয়ে দিল, আর ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু পরীক্ষা করতে চায় না তারা। বন্ধ করে দেওয়া হবে দেশের পরমাণু পরীক্ষণ কেন্দ্রগুলোও!
একের পর এক পরমাণু পরীক্ষণ, ক্ষেপণাস্ত্র উত্ক্ষেপণ, আন্তর্জাতিক মহলের হুঁশিয়ারিকে উপেক্ষা করে যে ভাবে গোটা বিশ্বের মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন, সেই কিমের এমন সিদ্ধান্তে বেশ আশ্চর্যই হয়েছে আন্তর্জাতিক মহল।
আরও পড়ুন: কমনওয়েলথের প্রধান চার্লস-ই
জোর জল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে, এই ঘোষণার মাধ্যমে তা হলে কি আন্তর্জাতিক মহলের কাছে নিজের ভাবমূর্তির বদলের বার্তা দিতে চাইলেন কিম?
তবে কিমের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি টুইট করে বলেন, “উত্তর কোরিয়া সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পরমাণু কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা শুধু উত্তর কোরিয়া নয়, গোটা বিশ্বের কাছে একটা বড় অগ্রগতি। আমাদের সাক্ষাতের অপেক্ষায় রইলাম।”
উত্তর কোরিয়ার এই একনায়কের পরিবর্তনটা লক্ষ্য করা গিয়েছিল সোলে আয়োজিত শীতকালীন অলিম্পিকের সময়ই। সেটা ছিল উপলক্ষ মাত্র। সেই উপলক্ষই পিয়ংইয়ং এবং সোলকে এক টেবিলে এনেছিল। যা আন্তর্জাতিক মহল দীর্ঘ দিন ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। শুধু তাই নয়, যে আমেরিকাকে উড়িয়ে, গুঁড়িয়ে দেওয়ার প্রায়ই হুমকি শোনা যেত তাঁর মুখে, সে দেশের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেও আমন্ত্রণ জানিয়েছেন আলোচনায় বসতে। আগামী মে বা জুন মাসে হয়ত দুই নায়ক মুখোমুখি হতে পারেন।
আরও পড়ুন: ৩৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা উঠে সৌদির হলে সিনেমা
কিন্তু সেই বৈঠকের আগেই উত্তর কোরিয়ার শাসকের এমন সিদ্ধান্ত বেশ তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।
পরমাণু পরীক্ষণ বা ক্ষেপণাস্ত্রের হুঙ্কার নয়, সে দেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এ বার দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে জোর দিতে চাইছেন কিম। প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহ দেখিয়েছেন। কী ভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, কী ভাবে অর্থনীতিকে আরও মজবুত করা যায়, দেশবাসীর জীবনযাপনের মানোন্নয়ন ঘটানো যায় এ নিয়ে একটি বৈঠক করে শাসকদল। সেখানেই নতুন নীতি নির্ধারণের সিদ্ধান্ত হয় বলে উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানানো হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু নিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তের স্বচ্ছতা ধরে রাখার বার্তা দেওয়া হয় সেই বৈঠকে। বলা হয়, “আর কোনও পরমাণু বা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষণের প্রয়োজন নেই আমাদের। তাই বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে পরমাণু পরীক্ষণ কেন্দ্রও।”