যুদ্ধপরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত চিন-মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন কাচিন রাজ্য। ছবি: এএফপি।
রোহিঙ্গা সমস্যার জের কাটতে না কাটতেই ফের একই রকম যুদ্ধপরিস্থিতিতে বিপর্যস্ত মায়ানমার। এ বার দেশের একেবারে উত্তরে চিন-মায়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন কাচিন রাজ্যে। সেখানে সরকারি সেনা ও জাতিগত জঙ্গিদের সাম্প্রতিক যুদ্ধে ঘরবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন অন্তত ৪ হাজার বাসিন্দা।
রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার পর্যবেক্ষক দলের মুখপাত্র মার্ক কাটস জানিয়েছেন, গত তিন সপ্তাহ ধরে সরকারি সেনা ও কাচিন জঙ্গিদের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। যার জেরে এলাকা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন মানুষ। এখনও বিপদের মধ্যে রয়েছেন অসংখ্য বাসিন্দা। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন অন্তঃসত্ত্বা, বয়স্ক মানুষ এবং শিশু। রয়েছেন প্রতিবন্ধীরাও।
মায়ানমারে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে ব্যতিক্রম কাচিন। সূত্রের খবর, সেখানে বেশির ভাগ মানুষই খ্রিস্টান। গত পঞ্চাশ বছর ধরেই স্বাধীনতার দাবি জানিয়ে আসছে কাচিন জঙ্গিরা। ২০১১ সালে সরকার ও কাচিন জঙ্গিবাহিনীর মধ্যে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। কাচিন ইনডিপেন্ডেন্স আর্মি বর্তমানে মায়ানমারের অন্যতম শক্তিশালী একটি জঙ্গি সংগঠন। ছ’বছর শান্তি বজায় থাকলেও সম্প্রতি ফের জেগে উঠেছে তারা।
জানা গিয়েছে, এ বছরের শুরু থেকে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। ২০১১-র যুদ্ধবিরতির সময় থেকে অন্তত ৯০ হাজার মানুষ কাচিন ও শান রাজ্যের বিভিন্ন শিবিরে বসবাস করছেন।
সাম্প্রতিক যুদ্ধে কত জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি। রোহিঙ্গা সমস্যার সময়ে দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে বারবার রাষ্ট্রপুঞ্জ তথা বহির্বিশ্বের তোপের মুখে পড়েছিলেন মায়ানমারের সরকারি পরামর্শদাতা, নোবেল শান্তি পুরস্কারজয়ী আউং সান সু চি। এ বার অবশ্য রাষ্ট্রপুঞ্জের সাহায্যকে দেশে ঢুকতে বাধা দেওয়া নিয়ে তিনি নিজেই মায়ানমার সরকারের সমালোচনা করেছেন।