সে-দিন এ-দিন: সাঁজোয়া গাড়ির সামনে ট্যাঙ্কম্যানকে (বাঁ দিকে) এ ধরনের ছবি পোস্ট করেই স্মরণ করছে নেট দুনিয়া। ছবি: টুইটার
এক জন সাধারণ মানুষ। পরণে সাদা ঢিলেঢালা একটা জামা। আর দু’হাতে দু’টো থলি। সার সার সাঁজোয়া গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে আছেন, ঠিক রাস্তার মাঝখানে। সাঁজোয়া গাড়ি কি থেমেছিল? নাকি তাঁকে পিষে দিয়ে চলে গিয়েছিল আরও হাজার হাজার মানুষকে মারতে? প্রশ্নের উত্তর জানে না বিশ্ব।
ট্যাঙ্কম্যান। এই নামেই পরিচিত তিয়েনআনমেন স্কোয়ারের অন্যতম প্রতীক। পরে জানা যায়, লোকটির নাম ওয়াং ওয়াইলিন। তিয়েনআনমেন স্কোয়ার গণহত্যার সময়ে তাঁর বয়স ছিল মাত্র ১৯। ১৯৮৯ সালের ৪ জুন। সেই রক্তমাখা দিনটির পরে তাঁর কী হয়েছিল, জানা যায়নি এখনও। কিছু ঐতিহাসিকের মতে, তাইওয়ানে পালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। চিন বরাবর দাবি করে এসেছে, তিনি সে দিন মারা যাননি। ট্যাঙ্ক থেকে নেমে এসে সেনারা নাকি তাঁকে সরিয়ে নিয়ে গিয়েছিল! যে সেনারা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে, বেয়নেট ঢুকিয়ে, ট্যাঙ্ক দিয়ে পিষে মেরেছিল অগুন্তি মানুষকে, তারা ট্যাঙ্ক থেকে নেমে এক জনকে সরিয়ে নিয়ে যাবে, এই প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকেই।
সেই ট্যাঙ্কম্যানকে প্রতীক করেই তিয়েনআনমেন গণহত্যার ২৯তম বার্ষিকীতে শুরু হয়েছে এক অভিনব স্মরণ। ‘#ট্যাঙ্কম্যান২০১৮’ ক্যাম্পেনে ছেয়ে গিয়েছে নেট দুনিয়া। চিনা কার্টুনিস্ট বাদিউচাওয়ের কথায়, ‘‘ট্যাঙ্কম্যান আদর্শ, প্যাশন, দায়িত্ববোধ, ও আত্মবিশ্বাসের মিশেল।’’ ট্যাঙ্কম্যানের মতো সাধারণ পোশাক পরে, তাঁরই ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে ছবি তুলে সকলকে প্রতীকী প্রতিবাদে সামিল হওয়ারও ডাক দিয়েছেন তিনি।
এ দিনই মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়ো গণহত্যায় মৃত, আটক এবং নিখোঁজদের বিবরণ প্রকাশ্যে আনার দাবি জানিয়েছেন চিনের কাছে। যা শুনে চিনা বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হু চুনিয়াং বলেছেন, ‘‘দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য এবং চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে নাক গলানো বন্ধ করুক মার্কিন প্রশাসন।’’