ইরানকে নিষেধাজ্ঞা-কোপ ট্রাম্পের

ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল সপ্তাহখানেক আগেই। শনিবার ইরানের উপর একগুচ্ছ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, ইরানকে চাপে রাখার মার্কিন নীতি থেকে সরছেন না তিনি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪২
Share:

ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছিল সপ্তাহখানেক আগেই। শনিবার ইরানের উপর একগুচ্ছ আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বুঝিয়ে দিলেন, ইরানকে চাপে রাখার মার্কিন নীতি থেকে সরছেন না তিনি।

Advertisement

গত রবিবার, ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পরে প্রথম ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছিল তেহরান। তার পরেই সে দেশের বিরুদ্ধে নোটিস জারি করেছিল ট্রাম্প প্রশাসন। আর আজ একেবারে আর্থিক কোপ। ওয়াশিংটন সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, এ রকম ১৩ জন ব্যক্তি ও ১২টি সংস্থার বিরুদ্ধে এই আর্থিক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। পাল্টা তোপ দেগেছে ইরানও। এ মাসের মাঝামাঝি ফ্রি-স্টাইল কুস্তির বিশ্বকাপ রয়েছে ইরানে। সে দেশের সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর, মার্কিন কুস্তিগীরদের উপর আজই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তেহরান।

নিষেধাজ্ঞা জারির কিছু ক্ষণ আগেই ট্রাম্প ট্যুইট করেছিলেন, ‘‘আগুন নিয়ে খেলছে ইরান। ওরা ভুলে যাচ্ছে, প্রেসিডেন্ট ওবামা ওদের কতটা দয়া করেছিলেন। আমি কিন্তু এত দয়ালু নই!’’ তবে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বিদেশনীতিতে এখনও পূর্বসূরির দেখানো পথেই হাঁটছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত বছর ইরানের উপর একগুচ্ছ নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছিল ওবামা-প্রশাসন। পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধে ইরানের সঙ্গে যে চুক্তি করেছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, ভোট প্রচারে তার প্রচুর সমালোচনা করলেও সেই চুক্তি থেকে সরে আসার এখনও কোনও ইঙ্গিত দেননি ট্রাম্প। অদূর ভবিষ্যতে দেবেনও না বলে ধারণা কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।

Advertisement

তবে তাঁর বিতর্কিত অভিবাসন নীতি নিয়ে এখনও অনড় ট্রাম্প। ব্যাট চালাচ্ছেন টি-টোয়েন্টির মেজাজেই। শরণার্থী নেব না বলে, গত কালই তিনি অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলের মুখের উপর ফোন কেটে দিয়েছিলেন। ওবামার আমলের একটি চুক্তি অনুযায়ী, অস্ট্রেলিয়া থেকে অন্তত ১২৫০ জন শরণার্থীকে নেওয়ার কথা আমেরিকার। বিনিময়ে গুয়াতেমালা, হন্ডুরাস থেকে শরণার্থী নেবে অস্ট্রেলিয়া। সূত্রের খবর, সেই চুক্তি বাতিলে উঠেপড়ে লেগেছে ট্রাম্প প্রশাসন। অস্ট্রেলীয় শিবিরে থাকা একটা বড় অংশের শরণার্থীর যাচাই-পরীক্ষা ছিল আজ। হঠাৎই তা অনির্দিষ্ট কালের জন্য স্থগিত করেছে আমেরিকা। ট্রাম্পের দাবি, মার্কিন স্বার্থ ও নিরাপত্তার কথা ভেবেই এই সব সিদ্ধান্ত। প্রেসিডেন্টের এই যুক্তি অবান্তর বলে আজ মন্তব্য করেন হলিউড তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি। রাষ্ট্রপুঞ্জে শরণার্থী বিষয়ক বিশেষ দূত জোলি আজ এক মার্কিন সংবাদপত্রের সম্পাদকীয়তে ট্রাম্পের নাম উল্লেখ না করেই বলেন, ‘‘নিজের নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার মতো প্রত্যেক দেশের একটা আন্তর্জাতিক দায়িত্বও থাকে। সে দিকটা অস্বীকার করে শরণার্থীদের মুখের উপর দরজা বন্ধ করে দেওয়া মানে আগুন নিয়ে খেলা!’’

এ দিকে, মাইক্রোসফ্‌ট, গুগল, ফেসবুক, অ্যাপলের মতো ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সুর চড়াল ক্যাব সংস্থা উবেরও। প্রেসিডেন্টের বাণিজ্যিক উপদেষ্টা কমিটি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন সংস্থার প্রধান ট্র্যাভিস কালানিক। ট্রাম্পের নয়া অভিবাসন নিষেধাজ্ঞার জেরেই এই ইস্তফা বলে কাল সংস্থার কর্মীদের ই-মেলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘অভিবাসী ও শরণার্থীদের জন্য দরজা খোলা রেখেই সাফল্য পেয়ে এসেছে আমেরিকা। উবেরও। পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমার পক্ষে প্রেসিডেন্টের কমিটিতে থাকা আর সম্ভব নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন