ডোনাল্ড ট্রাম্প ও জেফ সেসনস। ফাইল চিত্র।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের ধাক্কা সামলাতে না সামলাতেই ফের রাশিয়ার ‘উপস্থিতি’ ঘিরে টালমাটাল মার্কিন প্রশাসন। ২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনে রুশ প্রভাব ছিল কিনা, সেই তদন্ত নিয়েই শুরু হয়েছে চাপান উতোর। তার জেরেই ট্রাম্পের নির্দেশে বরখাস্ত হলেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেসনস। মার্কিন নির্বাচনে রুশ প্রভাব কতটা ছিল, সেই তদন্ত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার পর থেকেই ট্রাম্পের রক্তচক্ষুর সামনে পড়েছিলেন সেসনস।
২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই রহস্যের শুরু। মার্কিন গোয়েন্দাদের একাংশ মনে করেন, ট্রাম্পের নির্বাচিত হওয়ার পেছনে প্রভাব খাটিয়েছিল রাশিয়া। ট্রাম্পের রিপাবলিকান দলের বেশ কয়েক জন গুরুত্বপূর্ণ সদস্য নির্বাচনের আগে রুশ অফিসারদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করতেন। প্রথমে এই বৈঠকের কথা গোপন রাখা হলেও পরে কিছু বৈঠকের কথা স্বীকার করে নেওয়া হয়। শুধু তাই নয়, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলাকালীন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই-এর কাছে মিথ্যা সাক্ষ্য দেন আমেরিকার তৎকালীন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিন। নির্বাচনের আগে রুশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তাঁর বৈঠকের কথা তিনি বেমালুম চেপে গিয়েছিলেন। যদিও পরে তা প্রকাশ্যে আসে। একের পর এক সত্য সামনে নিয়ে আসার জন্য ২০১৭ সালে ট্রাম্পের হাতে বরখাস্ত হয়েছিলেন মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই প্রধান জেমস কমি। আর এবার ট্রাম্পের খাঁড়ার মুখে পড়লেন মার্কিন অ্যাটর্নি জেনারেল জেফ সেসনস।
কিছুদিন আগেই নিজেকে এই তদন্ত থেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন সেসসন। তা নিয়েই শুরু ঝামেলার। ঘনিষ্ঠ মহলে ট্রাম্পের মন্তব্য ছিল, ‘‘ এই তদন্ত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেবে জানলে সেসনসকে আমি এই পদে বসাতামই না।’’ সেসনস-এর অনুপস্থিতিতে এই তদন্তে বিপজ্জনক জায়গায় পৌঁছে গিয়েছিলেন বিশেষ তদন্তকারী অফিসার রবার্ট ম্যুলার। তাঁকে নিয়ন্ত্রণে আনতেই সেসনস-এর ওপর ভরসা রেখেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কিন্তু সেসনস এই তদন্ত থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ায় একের পর এক তথ্য সামনে আনতে শুরু করেছিলেন রবার্ট ম্যুলার, যা ট্রাম্পের অস্তিত্বের জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠছিল। তাই সেসনসকে সরাতে বাধ্য হলেন ট্রাম্প। এমনটাই মনে করছেন ট্রাম্প সমালোচকেরা।
আরও পড়ুন: হাউস খুইয়েও স্বমেজাজে ট্রাম্প, ‘জাদুকর’ তকমা দিলেন নিজেকে!
আপাতত ট্রাম্পকে সরিয়ে অ্যাটর্নি জেনারেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ম্যাথু হুইটেকারকে। তাঁর মাধ্যমেই মার্কিন নির্বাচনে রুশ প্রভাব নিয়ে তদন্তের গতি কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন ট্রাম্প, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: পেলোসিকে স্পিকার পদে চাইছেন ট্রাম্পও!
(আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, আন্তর্জাতিক চুক্তি, আন্তর্জাতিক বিরোধ, আন্তর্জাতিক সংঘর্ষ- সব গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খবর জানতে চোখ রাখুন আমাদের আন্তর্জাতিক বিভাগে।)