ড্রিমারদের জন্য আশ্বাস নেই ট্রাম্পের

দেশের অর্থনীতি এবং উন্নয়নের স্বার্থে এক দিকে রইল বিশ্ব অর্থনীতির অন্য শক্তিগুলির প্রতি হুঁশিয়ারি, অন্য দিকে অভিবাসনে রাশ টেনে তথাকথিত দেশবাসীদের অগ্রাধিকার।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:২১
Share:

ছবি: এএফপি।

আমেরিকার স্বপ্নে এখন দেশের চেয়ে দেশের ভূমিপুত্রদের জোর বেশি, প্রথম স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন বক্তৃতায় সেটাই স্পষ্ট করে বুঝিয়ে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

Advertisement

দেশের অর্থনীতি এবং উন্নয়নের স্বার্থে এক দিকে রইল বিশ্ব অর্থনীতির অন্য শক্তিগুলির প্রতি হুঁশিয়ারি, অন্য দিকে অভিবাসনে রাশ টেনে তথাকথিত দেশবাসীদের অগ্রাধিকার।

ট্রাম্প জানিয়ে দিলেন, আমেরিকার ‘আর্থিক আত্মসমর্পণের’ যুগ শেষ। সেই সব দেশের সঙ্গেই আমেরিকার নয়া বাণিজ্যিক চুক্তি হবে, যারা ব্যবসায় স্বচ্ছ এবং পারস্পরিক নির্ভরতা বজায় রাখবে। নাম না করলেও ইঙ্গিতটা মূলত চিনের দিকে বলেই মনে করা হচ্ছে।

Advertisement

অন্য দিকে মার্কিন পরিবার এবং মার্কিন কর্মীদের স্বার্থ মাথায় রেখেই অভিবাসন নীতির ভাবনা। মঙ্গলবার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস চেম্বার-এ সামনের সারিতে বসেছিলেন অজস্র অভিবাসী, যাঁদের ভবিষ্যৎ এই মুহূর্তে অনিশ্চিত। এঁদের অনেকেই ‘ড্রিমার’, অর্থাৎ শিশু অবস্থাতেই কোনও রকমে বেড়া ডিঙিয়ে আমেরিকায় চলে এসেছেন। এই ‘অবৈধ’ অভিবাসীরা এত দিন আইনি সুরক্ষা পেয়েছেন, ট্রাম্প তা টেনে নিয়ে যেতে রাজি নন।

ডেমোক্র্যাটরাই এই ড্রিমারদের নিয়ে এসেছিলেন অনুষ্ঠানে, সামনের সারিতে তাঁদের বসিয়ে ট্রাম্পের উপরে চাপ তৈরি করাই ছিল উদ্দেশ্য। ওই যুবক-যুবতীরাও আশা করছিলেন, ট্রাম্প হয়তো তাঁদের জন্য কিছু বলবেন। ট্রাম্প বললেন ঠিকই, তাতে তাঁদের দুশ্চিন্তাই বাড়ল। ট্রাম্প ঘোষণা করলেন, ‘‘মার্কিনরাও তো ড্রিমার!’’

অভিবাসন নীতি নিয়ে অস্থিরতার জেরে এ বছরের গোড়াতেই তিন দিনের জন্য স্তব্ধ (শাট ডাউন) হয়ে গিয়েছিল সরকার। হাউসের সদস্যরা ‘ড্রিমার্স’ নিয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেননি। ৫ মার্চের পরে এই সব অভিবাসী আমেরিকা ছাড়তে বাধ্য হবেন যদি কংগ্রেস ‘ডাকা প্রকল্প’ (ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস) নিয়ে কোনও সিদ্ধান্তে না পৌঁছতে পারে। দেশে এক কোটিরও বেশি অনথিভুক্ত অভিবাসীর মধ্যে শিক্ষাগত যোগ্যতা, নৈতিক চরিত্র ইত্যাদির মাপকাঠিতে ১৮ লক্ষ নাগরিকত্বের দিকে এগিয়ে যাবেন, সম্প্রতি এমন এক প্রস্তাবের কথা বলেছেন ট্রাম্প। কিন্তু কংগ্রেস কেন এ নীতি নিয়ে আলোচনা করছে বা এতে সিলমোহর দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তা নিয়ে আজকের বক্তৃতায় কিছুই বলেননি তিনি।

হাউসে ‘ড্রিমার’দের পক্ষে নেত্রী ন্যান্সি পেলোসি বলেছেন, ‘‘ওঁরা আমেরিকাকে আরও আমেরিকান করে তোলেন।’’ রিপাবলিকানদের সবাই অবশ্য সে আশ্বাসবাণী দিচ্ছেন না। ব্যবসা ক্ষেত্রে মার্কিন কর্মীদের সুরক্ষা দিতে ট্রাম্প চান তাঁর প্রশাসন খারাপ ব্যবসায়িক চুক্তিগুলোর ত্রুটি দূর করতে সক্রিয় হোক। নতুন চুক্তিগুলো করার সময়েও যেন মার্কিন নাগরিকদের কথা মাথায় রাখা হয়, বলেছেন প্রেসিডেন্ট। তাঁর সাফ কথা, ‘‘ব্যবসায়িক নীতির কঠোর প্রয়োগ করে আমেরিকার কর্মী এবং মার্কিন মেধাস্বত্ত্ব রক্ষা করব আমরা। আর্থিক আত্মসমর্পণের যুগ একেবারে শেষ।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন