ফাইল চিত্র
দিন চারেক আগে শিরোনামে আসে খবরটা। ওরেগনের শেরিডান জেলে বন্দি ৫২ জন ভারতীয় অনুপ্রবেশকারীকে হাতকড়া ও শিকল পরিয়ে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছিল। একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে নবনীত কৌর নামে এক মহিলা ওই জেলে বন্দিদের সঙ্গে অনুবাদকের কাজ করতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছিলেন। তাঁকে উদ্ধৃত করেই সংবাদমাধ্যমে হাতকড়া পরানোর খবর প্রকাশিত হয়। কিন্তু এ দিন সেই নবনীত বলেছেন, হাতকড়া পরানোর খবর ঠিক নয়।
আমেরিকায় আশ্রয়ের খোঁজে যাঁরা অবৈধ ভাবে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন, সেই সব ভারতীয়ের (যাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পঞ্জাবি) সঙ্গে দাগি অপরাধীদের মতো ব্যবহার করা হচ্ছে বলে লেখা হয় সংবাদমাধ্যমে। নবনীত এ দিন এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘এ দেশে আসার পর থেকে ওরেগনের শেরিডান জেলে ভারতীয়দের হাতকড়া ও শিকল পরিয়েই রাখা হয়েছে— এমন কিছু আমি বলিনি। সংবাদমাধ্যম আমার কথার ভুল ব্যাখ্যা করেছে।’’
পোর্টল্যান্ডের একটি আইনি সংস্থার হয়ে ওরেগনে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করছেন নবনীত। তিনি বলেছেন, ‘‘গত ১৪ জুলাই ওরেগনের অ্যাস্টোরিয়ায় গদর পার্টির স্মৃতিতে ১০৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আমি আমেরিকায় ‘ইমিগ্রেশন, কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট’ (আইসিই)-র হাতে আটক বন্দিদের দুর্দশা নিয়ে কথা বলেছিলাম। যথেচ্ছ মানবাধিকার লঙ্ঘনে অনুপ্রবেশকারীদের অবস্থা ভয়াবহ বলে জানিয়েছিলাম। শেরিডান জেল ঘুরে বন্দিদের সঙ্গে কথা বলে যে অভিজ্ঞতা হয়েছিল, তার ভিত্তিতেই ও কথা বলেছিলাম।’’
এর পরে নবনীতের সংযোজন, ‘‘ওঁরা আইনি সাহায্য পাচ্ছেন না। প্রিজ়ন সেলে ২২ ঘণ্টা কাটাচ্ছেন। তবে সারাক্ষণ তাঁদের টানা হাতকড়া-শিকল পরিয়ে রাখা হচ্ছে, আমি এ কথা বলিনি। আমি যতদূর জানি, একটা গোটা দিন হাতকড়া-শিকল পরে থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন ওঁরা।’’ শেরিডান জেল ঘুরে এখন তাঁর মনে হয়েছে, ‘‘এ বছর মে মাসে এখানে আসার পর থেকে বন্দিদের যা অবস্থা ছিল, এখন তার চেয়ে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হয়েছে। তার পিছনে কাজ করেছে আইনি সংস্থাটি। তবু তিনি মনে করেন, পরিস্থিতি এখনও অমানবিক। এখন হাতকড়া-শিকল পরানো না থাকলেও জেলের ভিতরেই থাকতে হচ্ছে ওই ভারতীয়দের।
ওই শেরিডান জেলে রয়েছেন নেপাল, চিন, বাংলাদেশের মানুষও। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দাবি, ওঁরা এসেছিলেন সুরক্ষার খোঁজে, নিজেরাই তার পরে জেলে বন্দি হয়ে গেলেন। এঁদেরই আইনি সহায়তা দিচ্ছে সংস্থাটি। তারা জানিয়েছে, ‘‘খারাপ খবরটা হল, এখানে বন্দি ১২১ জনের জন্য প্রত্যর্পণের নির্দেশ এসেছে। ট্রাম্প প্রশাসনের নিষ্ঠুর নীতিই (আটক করে ফেরত পাঠাও) এর জন্য দায়ী।’’ ওই জেলে গিয়ে ভারতীয়দের সঙ্গে দেখা করেছেন সান ফ্রান্সিসকোয় ভারতীয় কনসুলেটের এক অফিসার। তবে মার্কিন অভিবাসন অফিসারদের দাবি, আশ্রয়প্রার্থীদের আবেদন সান ফ্রান্সিসকোয় ‘ইউএস সিটিজ়েনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস’-এর দফতরে পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত হবে সেখানেই।