China

চিন, রাশিয়া ও ইরানকে নিয়ে চিন্তায় আমেরিকা

চিন্তার না-হলেও নজরে রাখার মতো দেশের তালিকায় রয়েছে আলজেরিয়া, কোমোরোস, ভিয়েতনাম। শুধু দেশ নয়, কিছু সংগঠনকেও বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:০০
Share:

আমেরিকান বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ফাইল চিত্র।

ধর্মীয় স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যে সব দেশের অবস্থান বেশ চিন্তার কারণ, সেই তালিকায় চিন, রাশিয়া ও ইরানের নাম যোগ করল আমেরিকা। উত্তর কোরিয়া এবং মায়ানমারও রয়েছে তালিকাটিতে। এ দিন আমেরিকান বিদেশসচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন এই কথা।

Advertisement

একটি বিবৃতি দিয়ে ব্লিঙ্কেন জানিয়েছেন, দেশগুলিতে এমন অনেক কাজই চলছে, যাতে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় স্বাধীনতা লঙ্ঘন করা হচ্ছে। চিন্তার না-হলেও নজরে রাখার মতো দেশের তালিকায় রয়েছে আলজেরিয়া, কোমোরোস, ভিয়েতনাম। শুধু দেশ নয়, কিছু সংগঠনকেও বিপজ্জনক ঘোষণা করেছে ওয়াশিংটন। যেমন ক্রেমলিন-ঘনিষ্ঠ ‘ওয়াগনার গ্রুপ’। এটি একটি বেসরকারি প্যারামিলিটারি সংগঠন। সিরিয়া, আফ্রিকা, ইউক্রেনে সক্রিয় রয়েছে সংগঠনটি। ব্লিঙ্কেন জানান, সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে ওয়াগনার গ্রুপের কার্যকলাপ নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি নিয়েও দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছেন তিনি। বিবৃতিতে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘‘বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকার ও বেসরকারি কিছু সংগঠন সাধারণ মানুষকে হেনস্থা করে চলেছে, ভয় দেখাচ্ছে,জেলে পুরছে, নির্বিচারে হত্যা করছে। এ ধরনের অত্যাচার আমেরিকা মেনে নেবে না।’’

ইরানে দীর্ঘদিন ধরে হিজাব-বিরোধী আন্দোলন চলছে। যথাযথ ভাবে হিজাব না পরার ‘অপরাধে’ গ্রেফতার করা হয়েছিল ২২ বছর বয়সি কুর্দিশ তরুণী মাহসা আমিনিকে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয় তাঁর। ইরানে আন্দোলন শুরু হয় তার পরই। রাস্তায় দাঁড়িয়ে হিজাব পুড়িয়ে বিক্ষোভ দেখান বহু মহিলা। মেয়েদের পাশাপাশি পথে নামেন বহু পুরুষও। এই বিক্ষোভকে ‘সরকার-বিরোধী’ আন্দোলন হিসেবে দেখছে ইরান। তাদের দাবি, এর পিছনে ষড়যন্ত্র রয়েছে, আছে আমেরিকার প্ররোচনা। ইরানে মেয়েদের রক্ষণশীল পোশাক পরা একপ্রকার বাধ্যতামূলক। এ নিয়ে উষ্মা রয়েছে বহু দিনই। কিন্তু ১৯৭৯ সালের পরে এই ইসলামিক রিপাবলিক এমন অগ্নিগর্ভ বিক্ষোভ দেখল এই প্রথম। রাষ্ট্রপুঞ্জ জানিয়েছে, এ পর্যন্ত ৩০০-রও বেশি আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। ১৪ হাজার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইরানের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও। অবিলম্বে সাধারণ মানুষের উপরে হেনস্থা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠনটি।

Advertisement

বিবৃতিতে চিনের জিনজিয়াং প্রদেশে উইঘুর মুসলিমদের উপরে অত্যাচার বন্ধের দাবি জানিয়েছে আমেরিকা। এই অঞ্চলটিতে অন্তত ১ কোটি উইঘুরের বাস। বেজিংয়ের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ তুলেছে ওয়াশিংটন। স্বাভাবিক ভাবেই, অভিযোগ অস্বীকার করেছে বেজিং।

এই দেশগুলি ছাড়াও পাকিস্তান, সৌদি আরব, তাজিকিস্তান, তুর্কমেনিস্তান, নিকারাগুয়া, কিউবা ও পূর্ব আফ্রিকার দেশ এরিট্রিয়া নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশ করেছে আমেরিকা।

পাকিস্তানের জঙ্গি গোষ্ঠী আলকায়দা ও তার চার নেতাকে বিশ্বের জন্য সন্ত্রাস হিসেবে উল্লেখ করেছেন ব্লিঙ্কেন। তিনি জোর দিয়ে জানিয়েছেন, তাঁদের সরকার কোনও ভাবেই এই জঙ্গিদের আফগানিস্তানে সক্রিয় হতে দেবে না। বিস্তারিত ভাবে জানানো হয়েছে, ‘আলকায়দা ইন ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট’ (একিউআইএস)-এর ওসামা মেহমুদ, আতিফ ইহা ঘুরি এবং মহম্মদ মারুফ সংগঠনে জঙ্গি নিয়োগের দায়িত্বে রয়েছে। আর এক সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ‘তেহরিক-ই-তালিবান পাকিস্তান’-এর কারি আমজাদ পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের দায়িত্বে রয়েছে। আলাদা ভাবে এই চার জঙ্গি নেতাকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে আমেরিকার পক্ষ থেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন