মাসখানেকও বাকি নেই শীতের অলিম্পিক্সের। এ বার আসর বসছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। আর এ নিয়ে সবে যখন বরফ গলতে শুরু করেছে দুই কোরিয়ার মধ্যে, ঠিক তখনই ফের আগ্রাসনের ইঙ্গিত দিল আমেরিকা। একটি বিমানবাহী রণতরী তো বটেই, সঙ্গে উভচর কিছু যুদ্ধজাহাজও পাঠাচ্ছে প্রেসি়ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেন্টাগনের এক কর্তা জানান, রাডারে ধরা পড়ে না, এমন কিছু বোমারু বিমানও পাঠানো হচ্ছে কোরীয় উপদ্বীপে। ওয়াশিংটনের দাবি, ‘রুটিন’ মহড়ার জন্যই বিমান ও জাহাজ পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু উত্তর কোরিয়া তা মানতে নারাজ।
হঠাৎ পাওয়া মার্কিন আগ্রাসনের এই খবরে নড়ে বসেছেন কূটনীতিকেরাও। এলাকায় শান্তি ফেরানোর কথা বলে জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বহু দিন ধরেই যৌথ মহড়া চালিয়ে আসছে আমেরিকা। কিন্তু মাঝখানে সোল আর ওয়াশিংটনের সমঝোতা হয়েছিল যে, অলিম্পিক্সের কথা মাথায় রেখে এই আপাতত বন্ধ রাখা হবে সব মহড়া। কিন্তু আমেরিকা কথা রাখল কই?
গত কাল এই প্রশ্ন তুলেই তোপ দেগেছে উত্তর কোরিয়া। প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের প্রশাসন বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘শান্তি ফেরাতে সোলের সঙ্গে আমাদের নিয়মিত বৈঠক চলছে। তাই এমন একটা পরিস্থিতিতে আমেরিকার এই পদক্ষেপ সামরিক উস্কানি ছাড়া আর কিছু নয়।’’
দিন পাঁচেক আগে আলোচনার টেবিলে বসেছিল দুই কোরিয়া। বৈঠক শেষে উত্তর কোরিয়া জানিয়েছিল, শীতের অলিম্পিক্সে তারা দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রতিযোগী পাঠাতে তৈরি। এমনকী এ-ও বলা হয় যে, দীর্ঘ ১৩ বছর পরে এ বার একঝাঁক তন্বী চিয়ারলিডার্স-ও পাঠাবে পিয়ংইয়ং। শান্তিস্থাপনের লক্ষ্যে এ সময়ে সাময়িক ভাবে উত্তর কোরিয়ার উপর থেকে কিছু নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা জানায় সোল-ও। কোরীয় সীমান্তের গ্রাম পানমুনজমে আজও এক প্রস্ত কথা হয়েছে দু’দেশের। সোল-পিয়ংইয়ংয়ের এই এক টেবিলে বসার ঘটনাকে গোড়ায় সরকারি ভাবে সাধুবাদই জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। বলেছিলে, ‘‘সময় বুঝে কোনও দিন হয়ত আমরাও শান্তি আলোচনায় ঢুকে পড়তে পারি।’’
পিয়ংইয়ংয়ের দাবি, এ সব ট্রাম্পের লোক-দেখানো কথা! মুখে শান্তির কথা বলে এখনও কোরীয় উপদ্বীপে অশান্তিই জিইয়ে রাখতে চাইছে ওয়াশিংটন। কূটনীতিকদের একাংশ আবার উত্তর কোরিয়ার ভূমিকাতেও সন্দেহ প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, সোলকে পাশে টেনে উত্তর কোরিয়ার শাসক কিম জং উন আদতে মার্কিন জোটের মধ্যে ভাঙন ধরাতে চাইছেন। ‘খেলার ছলে’ আন্তর্জাতিক চাপ কমাতে চাইছে পিয়ংইয়ং।