দেশের মাটি থেকে সন্ত্রাসের বীজ উপড়ে ফেলতে পাকিস্তানের ব্যর্থতা নিয়ে ফের সরব ওয়াশিংটন।
মার্কিন গোয়েন্দাদের আশঙ্কা, ইসলামাবাদের এই ব্যর্থতার সুযোগ নিয়েই সে দেশে ঘাঁটি গেড়ে আফগানিস্তান ও ভারতের মতো দেশগুলিতে হামলার ছক কষছে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠনগুলি। ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন মনে করছে, ভারত-পাক সম্পর্কের অবনতির পিছনেও দায়ী ইসলামাবাদের এই দুর্বল নীতি। পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের বিরুদ্ধে নয়াদিল্লি বারবার তথ্যপ্রমাণ তুলে দেওয়া সত্ত্বেও নড়েচড়ে বসেনি তারা। এমনকী পঠানকোট বায়ুসেনা ঘাঁটিতে হামলার তদন্ত নিয়ে ভারত তাড়া দিলেও পাকিস্তানের তরফে সন্তোষজনক আগ্রগতি দেখা যায়নি।
বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে এ ভাবেই পাকিস্তানকে তুলোধোনা করেন মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ডিরেক্টর ড্যানিয়েল কোটস। তাঁর বক্তব্য, পাকিস্তান ঘরের মাটিতে জঙ্গি বাড়বাড়ন্তে লাগাম টানতে ব্যর্থ। শুধু তা-ই নয়। সীমান্ত পেরিয়ে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠনগুলির হামলা নিয়ে ভারত বারবার দ্রুত তদন্তের জন্য চাপ দিলেও ফল হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই ভারত-পাক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে তার প্রভাব পড়েছে।
ড্যানিয়েলের আশঙ্কা, এই তিক্ততা আরও বাড়তে পারে ২০১৭ সালে। কারণ, ভারতের উপরে ফের যে কোনও সময় বড়সড় হামলা চালাতে পারে পাক জঙ্গিরা। মার্কিন গোয়েন্দা কর্তার কথায়, ‘‘সন্ত্রাস দমনে ওয়াশিংটন-নয়াদিল্লি যে ভাবে হাত মিলিয়েছে, তা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পাকিস্তানের কাছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও ভারত যে ভাবে সামনে সারিতে এগিয়ে এসেছে তা চাপে রেখেছে পাকিস্তানকে। এ বার তাই বাধ্য চিনের সঙ্গে হাত মেলানোর চেষ্টা করছে ইসলামাবাদ। আর এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়েই ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শক্তি বাড়াচ্ছে বেজিং।’’
আফগানিস্তানের নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ড্যানিয়েল। তাঁর মতে, আগামী দু’বছরের মধ্যে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে। কারণ, আফগান সেনা ও ন্যাটো বাহিনীর যৌথ সামরিক অভিযানে তালিবান বিরোধী অভিযান সফল হলেও ফের সে দেশে মাথাচাড়া দিচ্ছে জঙ্গিরা। পেন্টাগন সেনাবহর কমিয়ে দেওয়ায় সীমান্ত পেরিয়ে পাক সন্ত্রাসবাদীরা ঢুকছে সে দেশে। ড্যানিয়েল মনে করছেন, তালিবানকে শান্তি আলোচনার টেবিলে না আনতে পারলে এই পরিস্থিতি বদলাবে না। তত দিন বাইরে থেকে সামরিক সাহায্য নিয়েই চলতে হবে আফগানিস্তানকে। গোয়েন্দা কর্তার এই হুঁশিয়ারির পরেই আজ জামাত-উদ দাওয়া-সহ একাধিক নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠনের উপর আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে আমেরিকা।