মার্কিন সরকারের সিদ্ধান্তে আরও কোণঠাসা পাকিস্তান। ছবি: এএফপি।
নওয়াজ় শরিফের পাকিস্তানকে ‘প্রতারক’ বলে বছর শুরু করেছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। নওয়াজ়ের জায়গায় সবে এক মাস হল ক্ষমতায় এসেছেন ইমরান খান। পেন্টাগন তবু খাপ্পাই। সন্ত্রাস দমনে পাকিস্তান কিছুই করছে না— এই অভিযোগে তাদের বরাদ্দ ৩০ কোটি ডলার অনুদান বন্ধ করার সুপারিশ করল মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক।
মার্কিন বিদেশসচিব মাইক পম্পেয়োর পাকিস্তান সফরের ঠিক মুখে পেন্টাগনের এই ঘোষণায় নিশ্চিত ভাবেই আরও কোণঠাসা পাকিস্তান। পেন্টাগনের এই সুপারিশ মার্কিন কংগ্রেসেও খুব সহজে পাশ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ। এই অনুদান এত দিন আটকেই রেখেছিল আমেরিকা। পেন্টাগন চাইছে পুরোপুরি বাতিল করতে। সম্ভবত এই মাস ফুরোনোর আগেই।
সন্ত্রাস দমন খাতে দীর্ঘদিন ধরেই পাকিস্তানকে আর্থিক ও সামরিক সাহায্য দিয়ে আসছে আমেরিকা। কিন্তু তাতে কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না বলে অভিযোগ ওয়াশিংটনের। বছরের গোড়ায় ট্রাম্প টুইট করেন, ‘‘জঙ্গি দমনের নামে ১৫ বছর ধরে পাকিস্তান আমাদের থেকে ৩৩০০ কোটি ডলার নিয়ে গিয়েছে। অথচ বিনিময়ে ঝুড়ি-ঝুড়ি মিথ্যে বলা ছাড়া কিছুই করেনি।’’ পাকিস্তানকে আর্থিক অনুদান বন্ধের ব্যাপারটাও তখনই মোটামুটি ঠিক হয়ে যায়। কাল পেন্টাগনের সুপারিশ এরই অংশ বলে মনে করা হচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রক চাইছে, এই ৩০ কোটি ডলার পাকিস্তানকে না দিয়ে অন্য খাতে ব্যবহার করা হোক।
গত বছর অগস্টে ট্রাম্প যে নয়া দক্ষিণ এশীয় নীতি ঘোষণা করেছিলেন, তার একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে সন্ত্রাস দমন। কিন্তু পাকিস্তান হাত গুটিয়ে রয়েছে বলেই মার্কিন নীতি ফলপ্রসূ হচ্ছে না। উল্টে ইসলামাবাদ জঙ্গিদের প্রচ্ছন্ন মদত দিয়ে চলেছে বলেও অভিযোগ পেন্টাগনের। ইমরান সরকারের উপর চাপ বাড়াতেই তাই এই সুপারিশ বলে মনে করা হচ্ছে।
পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করতে এক বার ড্রোন হামলার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট বারাক ওবামা। জানুয়ারিতে ট্রাম্পও বলেছিলেন, ‘‘আমরা যে সব জঙ্গিদের হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছি, তাদেরই আশ্রয় দিচ্ছে পাকিস্তান। আফগানিস্তানে আমরা নিজেদের চেষ্টায় জঙ্গিদের মারছি। এটা চলতে পারে না।’’ তবে কূটনীতিকদের মতে, সরাসরি হামলা নয়, ট্রাম্প চাইছেন পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়িয়ে নিজেদের দক্ষিণ এশীয় নীতি আরও পোক্ত করতে।
পেন্টাগনের মুখপাত্র কন ফকনার তাই এই অনুদান বন্ধের সুপারিশকে নতুন ঘোষণা বা সিদ্ধান্ত বলছেন না। তাঁর কথায়, ‘‘লস্কর থেকে শুরু করে তালিবান, সব জঙ্গি নেটওয়ার্কই ধ্বংস করতে চাই আমরা। আর এ নিয়ে পাকিস্তানের উপর থেকে চাপ তুলে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই।’’