হামজ়া বিন লাদেন। এএফপি
আল কায়দার নিহত নেতা ওসামা বিন লাদেনের ছেলে হামজ়া বিন লাদেন সম্পর্কে কেউ কোনও তথ্য দিতে পারলে তাঁকে ১০ লক্ষ ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে আমেরিকা। হামজ়াকে সন্ত্রাসবাদের ভবিষ্যৎ মুখ বলে মনে করছে ওয়াশিংটন। বস্তুত, ওসামা বিন লাদেনের বছর ৩০-এর এই পুত্র ‘জেহাদের যুবরাজ’ হিসেবে নাম করেও ফেলেছেন। এ দিন আমেরিকার ঘোষণার পরে হামজ়ার নাগরিকত্ব বাতিল করেছে সৌদি আরব।
হামজ়া কোথায় রয়েছেন, তা নিয়ে জল্পনা চলছে বহু দিন ধরেই। কিছু কিছু রিপোর্টে দাবি, পাকিস্তান, আফগানিস্তান বা সিরিয়ায় থাকতে পারেন হামজ়া। কারও দাবি, ইরানে গৃহবন্দি রয়েছেন ওসামার ছেলে।
গত কাল মার্কিন বিদেশ দফতর এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘হামজ়া ক্রমশ আল কায়দার নেতা হিসেবে উঠে আসছেন।’ তার পরেই বলা হয়েছে, হামজ়া যে দেশেই থাকুন, খবর দিতে পারলে ১০ লক্ষ ডলার অর্থমূল্যের পুরস্কার দেবে ওয়াশিংটন। হামজ়া তাঁর বাবার ‘হত্যার’ প্রতিশোধ নেবেন বলে হুমকি দিয়েছিলেন। মার্কিন গোয়েন্দা দফতরের দাবি, যুবক বিন লাদেনকে সামনে রেখে ধীরে ধীরে ফের জোটবদ্ধ হচ্ছে আল কায়দা।
২০১৫-য় এক অডিয়ো-বার্তায় শোনা গিয়েছিল, সিরিয়ায় জঙ্গিদের জোট বাঁধার কথা বলছেন হামজ়া। তাঁর বক্তব্য ছিল, যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়ায় লড়াই চালালে ‘মুক্ত প্যালেস্তাইনের’ পথ প্রশস্ত হবে। এক বছর পরে আর একটি বার্তায় বাবার পথ অনুসরণ করে তিনি নিজেদের দেশ, সৌদি আরব সম্পর্কে বলেছিলেন, ওখানে বর্তমান নেতৃত্বকে পদচ্যুত করতে হবে। হামজ়া কোথায়, তা নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও কোনও কোনও সূত্রে দাবি, ইরানে নিজের মায়ের সঙ্গে বেশ কিছু বছর কাটিয়েছেন হামজ়া। যদিও শিয়া মতাদর্শের (ইরানে যা প্রধান) সঙ্গে একেবারেই মেলে না আল কায়দার।
বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, তেহরানের ধর্মগুরুরা হামজ়াকে গৃহবন্দি করে রেখে প্রতিবেশী সৌদি আরব ও আল কায়দার উপরে চাপ তৈরি করছেন। তাঁরা মনে করেন, এ ভাবেই ইরানের উপর হামলা করা থেকে ঠেকানো যাবে সুন্নি জঙ্গিদের। হামজ়ার এক সৎ ভাই গত বছর লন্ডনের এক দৈনিককে বলেছিলেন, ওঁর খবর কেউ জানে না। তবে তাঁর অনুমান, আফগানিস্তানে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে হামজ়ার। এই সৎ ভাই আরও জানান, মহম্মদ আটার (৯/১১-র মূল বিমান ছিনতাইকারী) মেয়েকে বিয়ে করেছেন হামজ়া।