ক্ষোভের আঁচ লাগছে বিদেশি ইহুদিদের গায়ে

গত বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিচ্ছে আমেরিকা। তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

জেরুসালেম শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:৩৬
Share:

প্যালেস্তাইনি বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে হামলা ইজরায়েলি সেনার। বেথলেহেমে। ছবি: রয়টার্স

পাঁচ দিনে পা দিল বিক্ষোভ। জেরুসালেম জ্বলছেই। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিতর্কিত ঘোষণার পর থেকে উত্তপ্ত পশ্চিম ভূখণ্ড, পূর্ব জেরুসালেম, গাজা।

Advertisement

গত বুধবার ট্রাম্প ঘোষণা করেন, জেরুসালেমকে ইজরায়েলের রাজধানীর স্বীকৃতি দিচ্ছে আমেরিকা। তেল আভিভ থেকে জেরুসালেমে মার্কিন দূতাবাস সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনার কথাও জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এর পর থেকেই ফুঁসছে প্যালেস্তাইন। দিকে দিকে বিক্ষোভ-আন্দোলন। প্যালেস্তাইনিদের দাবি, ভবিষ্যতে পূর্ব জেরুসালেমই তাদের রাজধানী হোক। আর ইজরায়েলের বক্তব্য, জেরুসালেম তাদের। এ শহর ভাগ হতে তারা দেবে না। আমেরিকার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে তারা বলেছে, ‘‘আমেরিকার সাহসী সিদ্ধান্তের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’’

পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ইহুদিরা অবশ্য ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে যথেষ্ট অখুশি। শনিবার রাতে সুইডেনের গোঠেনবার্গ সিনাগগে অনুষ্ঠান চলছিল। সেই সময়ে ভিড় লক্ষ করে কোনও দাহ্যপদার্থ ছুড়ে মারে জনা দশেক যুবক। সৌভাগ্যক্রমে কেউ জখম হননি। ক্ষুব্ধ হেলসিঙ্কির ইহুদি সংগঠনের বর্তমান প্রধান আরন ন্যাডবরনিক বলেন, ‘‘আমরা ভীষণ চিন্তিত। একটা বিদেশ নীতির জন্য পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে, যে সুইডেনের মতো দেশেও ইহুদিরা আক্রান্ত হচ্ছেন!’’

Advertisement

গোটা বিশ্বে কার্যত একঘরে ট্রাম্প। ব্রিটেন-ফ্রান্সের মতো আমেরিকা-ঘনিষ্ঠ দেশও কড়া নিন্দা করেছে। জার্মানি, ইতালি থেকে শুরু করে পশ্চিমের প্রায় সব দেশই একমত, আরও বিপজ্জনক পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেওয়া হল পশ্চিম এশিয়ার ওই অংশকে। কূটনীতিকরা বলছেন, এত দিন নামেই শান্তিপ্রক্রিয়া চলছিল পশ্চিম এশিয়ায়। ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন দ্বন্দ্ব লেগেই ছিল। কফিনে শেষ পেরেকটাও পুঁতে দিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পই! মার্কিন প্রেসিডেন্টের ঘোষণা যে রাষ্ট্রপুঞ্জ মানছে না, সেটা কালই স্পষ্ট হয়ে যায় নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে।

বুধবারের পর থেকেই ইজরায়েলি সেনার দখলে জেরুসালেমের পথঘাট।
কিন্তু থামছে না বিক্ষোভ। এ দিন শহরের ব্যস্ত এলাকা সালাহ এদ্দিনের পথে নামেন একদল প্যালেস্তাইনি। বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে ইজরায়েলি সেনা গ্রেনেড ছুড়তে থাকে।
চালানো হয় কাঁদানে গ্যাসও। আটক করা হয় ১৩ জন প্যালেস্তাইনিকে। জখম হন অনেকে। তবু অনড় বিক্ষোভকারীরা। আবু জনেদ নামে এক তরুণী বললেন, ‘‘কখনওই হাল ছাড়ব না। এটা আমাদের দেশ।’’

জেরুসালেম-বিতর্কের আঁচ পেরিয়েছে দু’দেশের গণ্ডিও। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় প্ল্যাকার্ড হাতে পথে নামেন দশ হাজার মানুষ। মুখে স্লোগান, ‘‘মার্কিন দূতাবাস, দূর হঠো। জেরুসালেম ও প্যালেস্তাইনকে মুক্ত করো। আমরা প্যালেস্তাইনিদের পাশে আছি।’’ লেবাননেও আজ মিছিল করে মার্কিন দূতাবাসের কাছে জড়ো হন বিক্ষুব্ধ জনতা। তাঁদের আটকাতে জলকামান চালায় পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন