Train Hijacked in Pakistan

‘গুলির পর গুলি! দমবন্ধ করে ঠায় বসেছিলাম’, কী বলাবলি করছিলেন বালোচ বিদ্রোহীরা? মুক্তির পর জানালেন পণবন্দি

বালোচিস্তানের ট্রেন থেকে ১৯০ জন পণবন্দিকে উদ্ধার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। বিদ্রোহীদের দাবি, তাঁরা ৫০ জন যাত্রীকে হত্যা করেছেন। তাঁদের কথা মেনে না-নিলে বাকিদেরও মেরে ফেলা হবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২৫ ২২:৪২
Share:

পাকিস্তানের বালোচিস্তানে ট্রেন অপহরণ করে নিয়েছেন বিদ্রোহীরা। ছবি: রয়টার্স।

বালোচিস্তানে অপহৃত ট্রেন থেকে মুক্তি পেয়ে ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করলেন যাত্রীরা। বিদ্রোহীদের হাত থেকে বাঁচতে কী ভাবে তাঁরা লুকিয়েছিলেন, কী ভাবে প্রতিনিয়ত সন্তানদের বাঁচানোর চেষ্টা করে গিয়েছেন, কী কী দেখেছেন, মুক্তির পর সেই ঘটনাবলির ধারাবাহিক বর্ণনা দিয়েছেন অনেকে। তাঁরা জানিয়েছেন, ট্রেন বিদ্রোহীদের দখলে চলে যাওয়ার পর মুহুর্মুহু গুলির শব্দে মনে হচ্ছিল, এটাই পৃথিবীতে তাঁদের শেষ দিন।

Advertisement

বালোচিস্তানের ওই ট্রেন থেকে ১৯০ জন পণবন্দিকে উদ্ধার করেছে পাক নিরাপত্তা বাহিনী। বিদ্রোহীদের দাবি, তাঁরা ইতিমধ্যে ৫০ জন যাত্রীকে হত্যা করেছেন। তাঁদের কথা মেনে না-নিলে বাকি পণবন্দিদেরও মেরে ফেলা হবে। পাক সরকারকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিল বালোচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)। ইশাক নুর নামের এক যাত্রী মুক্তির পর বিবিসিকে বলেন, ‘‘গুলির পর গুলি চলছিল। আমরা কোনও রকমে দমবন্ধ করে বসেছিলাম। কী হবে কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।’’ মহম্মদ আশরাফ বলেন, ‘‘যাত্রীরা সকলে প্রচণ্ড ভয়ে ছিলেন। যেন মনে হচ্ছিল, এটাই পৃথিবীর শেষ দিন।’’ সন্তানদের আড়াল করে বসেছিলেন আশরাফ এবং তাঁর স্ত্রী। যাতে কোনও ভাবে গুলি তাঁদের দিকে চলে এলে আগে বাবা-মায়ের গায়ে লাগে। সন্তানেরা যাতে বেঁচে যায়।

ট্রেন নিজেদের দখলে নেওয়ার পর বালোচ বিদ্রোহীরা নিজেদের মধ্যে কী নিয়ে আলোচনা করছিলেন, মুক্তির পর তা-ও জানিয়েছেন পণবন্দিরা। মুশতাক মুহাম্মদ বলেন, ‘‘বিদ্রোহীরা মূলত বালোচি ভাষায় নিজেদের মধ্যে কথা বলছিলেন। তাঁদের নেতা বার বার সতর্ক করে দিচ্ছিলেন। সকলকে সজাগ থাকতে বলছিলেন। বিশেষ করে নিরাপত্তা বাহিনীর গতিবিধির দিকে নজর রাখতে বলা হচ্ছিল। কারও উপর থেকে যাতে নজর না সরে যায়, বার বার সে বিষয়ে সাবধান করে দিচ্ছিলেন বিদ্রোহীদের নেতা।’’ মুশতাক জানিয়েছেন, এই হামলা তিনি কখনও ভুলতে পারবেন না।

Advertisement

কোয়েটা থেকে পেশোয়ারের দিকে যাওয়ার পথে বালোচিস্তানের বোলানে জাফর এক্সপ্রেস অপহরণ করেন বিদ্রোহীরা। ট্রেনে ৪৫০ জন যাত্রী ছিলেন। তাঁদের পণবন্দি করা হয়। বদলে পাকিস্তানের জেল থেকে বন্দি বিনিময়ের দাবি জানায় বিএলএ। পাক সরকার এই দাবির বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি। মঙ্গলবার রাত থেকে নিরাপত্তা বাহিনী উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে। দাবি, ইতিমধ্যে ২৭ জন বিদ্রোহী তাদের গুলিতে নিহত হয়েছেন। উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ২০০ জনকে। তবে অনেকে এখনও আটকে রয়েছেন। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় পণবন্দিদের নিয়ে গিয়েছেন বিদ্রোহীরা। তাঁদের ‘মানবঢাল’ হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিদ্রোহীদের কেউ কেউ বিস্ফোরক ভর্তি জ্যাকেট পরে যাত্রীদের গা ঘেঁষে দাঁড়াচ্ছেন। ফলে উদ্ধারকাজ আরও জটিল হচ্ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement