এ বার প্রেসিডেন্ট? ওপ্রাকে নিয়ে জোর জল্পনা

সেই ‘নতুন দিন’-এর সূত্র ধরেই শুরু হয়েছে ব্যাপক জল্পনা। সত্যিই কি সক্রিয় রাজনীতিতে নামছেন ওপ্রা?

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লস অ্যাঞ্জেলেস শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৩২
Share:

তখন: ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৈকতাবাস মার- আ-লাগোয় ওপ্রা উইনফ্রি। ২০০৮-এর ছবি।

ইঙ্গিতটা গতকালই মিলেছিল। আজ তুঙ্গে উঠল জল্পনা।

Advertisement

সঞ্চালক সেথ মেয়ার কাল গোল্ডেন গ্লোবের মঞ্চে দাঁড়িয়ে রসিকতার সুরে ওপ্রা উইনফ্রিকে বলেছিলেন— ‘‘আপনি তা হলে ২০২০-র প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়ছেন!’’ হাততালিতে ফেটে গিয়েছিল প্রেক্ষাগৃহ। তার কয়েক মিনিট আগেই শেষ হয়েছে ওপ্রার বক্তৃতা। মানবাধিকার, মেয়েদের অধিকার, বর্ণবিদ্বেষ ও যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ, এই ধরনের নানা দরকারি প্রসঙ্গ উঠে এসেছিল সেই বক্তৃতায়। ওপ্রা বলেছিলেন, ‘‘দিগন্তে একটা নতুন দিনের সূচনা হচ্ছে!’’

সেই ‘নতুন দিন’-এর সূত্র ধরেই শুরু হয়েছে ব্যাপক জল্পনা। সত্যিই কি সক্রিয় রাজনীতিতে নামছেন ওপ্রা? গত তিনটি নির্বাচনে বারাক ওবামা ও হিলারি ক্লিন্টনের হয়ে প্রচার করেছেন তিনি। তা হলে কি যোগ্য নেতার অভাবে ধুঁকতে থাকা ডেমোক্র্যাটিক দলের ‘নতুন মুখ’ উইফ্রি-ই?

Advertisement

জল্পনায় রসদ জুগিয়ে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ওপ্রার নানা বিষয়ে সাদৃশ্য নিয়েও আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে। যেমন দু’জনেই টিভি শো সঞ্চালক। ২০০৩ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত চলেছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের টিভি রিয়্যালিটি শো ‘দ্য অ্যাপ্রেন্টিস’। যথেষ্ট জনপ্রিয়ও হয়েছিল। আর ১৯৮৬ থেকে শুরু হওয়া তুমুল জনপ্রিয় ‘দ্য ওপ্রা উইনফ্রি শো’ টানা ২৫ বছর মাতিয়ে রেখেছিল মার্কিন দর্শককে।

আরও পড়ুন: তিন দেশ সড়ক প্রকল্পে বেঁকে বসল মায়ানমার

রিয়্যাল এস্টেট ব্যবসায়ী ট্রাম্প এবং ‘সংবাদমাধ্যমের রানি’ ওপ্রা দু’জনেই ধনকুবের। টিভি শো সঞ্চালনা এবং কয়েকটি ছবিতে অভিনয় করার সুবাদে ওপ্রা ও ট্রাম্প দু’জনেই পরিচিত মুখ। প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে ট্রাম্পের রাজনীতিতে কোনও অভিজ্ঞতা ছিল না। ঠিক যেমন এখন ওপ্রারও নেই।

তবে জনতার বিপুল সমর্থন টানার ক্ষমতা যে ওপ্রার রয়েছে, তা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত। ২০০৬ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী বারাক ওবামার হয়ে প্রচার চালিয়েছিলেন ওপ্রা। একটি সমীক্ষা বলে, সেই প্রচারের ফলে অন্তত দশ লক্ষ বাড়তি ভোট ঢুকেছিল ওবামার ঝুলিতে! এ রকম জনমোহিনী ব্যক্তিত্বকে পেয়ে খুশিই হবেন ডেমোক্র্যাটরা, বলছে বিভিন্ন সূত্র।

ওপ্রার দুই বন্ধু সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হওয়ার বিষয়ে তিনি নিজেই ঘনিষ্ঠ মহলে আলোচনা শুরু করে দিয়েছেন। আর ওপ্রার দীর্ঘদিনের সঙ্গী স্টেডম্যান গ্রাহামকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘‘ওপ্রার এ নিয়ে অবশ্যই ভাবনা-চিন্তা করা উচিত।’’

ওপ্রার বক্তৃতার প্রশংসা করে আজ টুইট করেছিলেন প্রেসিডেন্ট কন্যা ইভাঙ্কা ট্রাম্প। সেই টুইটে বেজায় চটেছেন ওপ্রা-ভক্তরা। তাঁদের দাবি, বাবা ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার নানা অভিযোগ উঠলেও সে বিষয়ে তো কখনও মুখ খোলেননি ইভাঙ্কা! তাই হাল্কা চালে এ ধরনের ‘সমর্থন’ জোগানো আসলে ওপ্রাকেই অপমান করা।

২০১৬-র মে মাসে রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে দলের মধ্যে নির্বাচিত হওয়ার পরে ডোনাল্ড ট্রাম্প এক চ্যাট শোয়ে বলেছিলেন— ‘‘ওপ্রা উইনফ্রিকে আমার ভাইস-প্রেসিডেন্ট সঙ্গী হিসেবে পেলে মন্দ হয় না।’’ ট্রাম্পের সেই ইচ্ছে অবশ্য পূরণ হয়নি। প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী যা-ই বলুন না কেন, রিপাবলিকান দলের তরফ থেকে এক স্বঘোষিত ডেম্যোক্র্যাটের কাছে নিশ্চয় এ ধরনের কোনও প্রস্তাব যায়নি! হোয়াইটে হাউসে পা রাখা হয়নি উইনফ্রির।

এ বার কি পাল্টে যাবে ছবিটা?

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন