কিমের মুখে শান্তির বাণী, অবাক পৃথিবী

কিম আশ্চর্যম! এত দিন নিজের শক্তির বড়াই করতেই যিনি অভ্যস্ত ছিলেন, আচমকা তাঁরই ছন্দপতন হল শান্তির সুরে!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

পিয়ংইয়ং শেষ আপডেট: ০৯ মে ২০১৬ ০৩:১৪
Share:

কিম আশ্চর্যম! এত দিন নিজের শক্তির বড়াই করতেই যিনি অভ্যস্ত ছিলেন, আচমকা তাঁরই ছন্দপতন হল শান্তির সুরে!

Advertisement

প্রায় ৪০ বছর পর উত্তর কোরিয়ায় ওয়ার্কার্স পার্টি কংগ্রেস সম্মেলনের প্রথম দিনে নিজের মেজাজেই ছিলেন কিম জং-উন। ঐতিহাসিক সম্মেলনের সুর যে চড়া তারে বাঁধা থাকতে চলছে, শাসকের হুঙ্কারে সে ইঙ্গিত মিলেছিল। এমনকী তারা যে ফের পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার তোড়জোড় শুরু করেছে— সে ছবিও ধরা পড়েছিল উপগ্রহের ছবিতে। হঠাৎই যাবতীয় জল্পনায় জল ঢেলে দিলেন কিম নিজে। শনিবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে জানালেন, পরমাণু অস্ত্র মজুত রয়েছে ঠিকই, কিন্তু আক্রান্ত না হলে তা অন্য কারও উপরে ব্যবহার করবে না উত্তর কোরিয়া।

কিমের বোধোদয়ে তাই বিস্ময়ের ঘোর কাটছে না বিরোধীদের। আমেরিকা ও দক্ষিণ কোরিয়ার অভিযোগ, এত দিন তারা প্ররোচনা না দিলেও উত্তরের চোখরাঙানি কমেনি!

Advertisement

শুধু এতেই থেমে থাকেননি উত্তর কোরিয়ার এই তরুণ শাসক। সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে বলেছেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্যই হল এমন একটা বিশ্ব গড়ে তোলা যেখানে যুদ্ধের ছায়া পড়বে না।’’ দায়িত্বশীল রাষ্ট্রের ভূমিকাতে নিজেদের না বেঁধেও যে ভাবে বিশ্ব শান্তির বার্তা দিচ্ছেন, তাতেই প্রশ্ন উঠছে— কিমের হঠাৎ হলটা কী?

২০০৩ সালে পরমাণু অস্ত্রপ্রসার রোধ চুক্তি ভেঙে প্রথম বেরিয়ে এসেছিল উত্তর কোরিয়াই। তার তিন বছর পর পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষায় হাতেখড়ি হয় তাদের। ইতিমধ্যেই মাটি কাঁপিয়ে গোটা দুনিয়াকে চার-চার বার চমকেছে তারা। গত জানুয়ারিতে কিম হাইড্রোজেন বোমা ফাটানোর পর থেকে পরিস্থিতি অনেকটা বদলে যায়। মার্চ মাসে কিমের দেশের উপর কড়া আর্থিক নিষেধাজ্ঞা চাপায় রাষ্ট্রপুঞ্জ। ফলে দেশের অর্থনীতি এখন এতটাই টালমাটাল যে ভবিষ্যতে দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা করছেন শাসক নিজেই।

বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনীতির এই হিসেব নিকেশই বদলে দিচ্ছে কিমকে। এই দায় থেকেই দলীয় সম্মেলনে কোষাগার চাঙ্গা করার কথা বলতে হয় তাঁকে। আবার একই কারণে কিছুটা সুর নরম করে বাইরের দুনিয়াকে বার্তা দিতে হচ্ছে, অস্ত্র ভাণ্ডার যতই সেজে উঠুক, বিপদে না পড়লে তা ব্যবহার করবেন না তাঁরা।

কিমের এই ভোলবদলকে স্বাগত জানালেও এর প্রতিফলন কাজে কতটা দেখা যাবে তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। কারণ স্বপ্নের কথা জানালেন কিম, কিন্তু তার চাবি লুকিয়ে রেখেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, উত্তর কোরিয়ার লক্ষ্য স্পষ্ট করে দিলেও কোন পথে তা হাসিল করতে হবে, তা নিয়ে একটা কথাও বলেননি কিম। ফলে চমকটা সেই রয়েই গেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন