তুরস্ক বলছে, নিজের দেশের লোকেরাই তাঁকে ছক কষে খুন করেছে। আর সৌদি আরবের বক্তব্য, সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি সম্পর্কে তুরস্কের দাবি মিথ্যে।
সম্প্রতি কাজের সূত্রেই তুরস্কে গিয়েছিলেন খাশোগি। ইস্তানবুলে সৌদি কনস্যুলেটে ওঠেন। কিন্তু কিছু দিন হল তাঁর আর খোঁজ নেই। একটি মার্কিন দৈনিকের সাংবাদিক খাশোগি। ওই সংবাদপত্রের উদ্যোগেই অনুসন্ধান শুরু হয়। তদন্ত শুরু করে তুরস্ক প্রশাসন। সে দেশের তদন্তকারী অফিসারদের দাবি, ইস্তানবুলের সৌদি কনস্যুলেটে খুন করা হয়েছে খাশোগিকে। হত্যার জন্য ছক কষে ১৫ জনের একটি বিশেষ দল ইস্তানবুলে পাঠিয়েছিল সৌদি আরব। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দুই তদন্তকারী কর্তার কথায়, ‘‘এটা একটা পূর্বপরিকল্পিত হত্যা।’’ তবে তাঁদের যুক্তির সপক্ষে কোনও প্রমাণ আছে কি না, জানাননি তাঁরা। তবে সৌদি জানিয়েছে, খাশোগি কখনও কনস্যুলেট থেকে বেরোনইনি। অর্থাৎ তাঁকে সেখানেই খুন করা হয়েছে।
তুরস্কের সব দাবি নস্যাৎ করেছে সৌদি আরব। গত সপ্তাহে ব্লুমবার্গে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি রাজা মহম্মদ বিন সলমন বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সৌদি কনস্যুলেটে আসার কিছু ক্ষণ পরেই বেরিয়ে যান খাশোগি। সৌদি প্রশাসন শীঘ্রই সেই প্রমাণ দেবে।’’ তাদের দাবি যে জোরদার, তা দেখাতে শনিবার রয়টার্সের সাংবাদিকদের কনস্যুলেট ঘোরানো হয়। সৌদি কনসাল জেনারেল মহম্মদ আল-ওতাইবি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত করতে চাই... জামাল কনস্যুলেটে নেই। সৌদি আরবেও নেই। কনস্যুলেট তাঁর সন্ধান শুরু করেছে।’’
তুরস্কে গিয়ে মার্কিন দৈনিকের সৌদি সাংবাদিকটি যে নিখোঁজ, সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল ওয়াশিংটন। যদিও এখনও তারা কোনও মন্তব্য করেনি। খাশোগিকে খুন করা হয়েছে বলে তুরস্কের যে দাবি, তা নিয়েও কিছু জানায়নি তারা। মার্কিন দৈনিকটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘‘উনি খুব সাহসী এক জন সাংবাদিক ছিলেন। নিজের দেশকে ভালবাসতেন। সৌদি আরব ও পশ্চিম এশিয়া নিয়ে বহু লিখেছেন খাশোগি। ওঁর সাহসী লেখনীর জন্য আমরা গর্বিত।’’ সৌদি আরবের চোখে খাশোগি অবশ্য বরাবরই বিপজ্জনক ছিল বলে একাংশের দাবি। রাজপরিবারের ক্ষমতা ও দুর্নীতি নিয়ে বহু বার লিখেছেন। শাসকদের চক্ষুশূল ছিলেন তিনি। নিজেই আমেরিকায় স্বেচ্ছানির্বাসন নিয়েছিলেন।