দুঃখিত, সব দায় আমারই, ক্ষমা চাইলেন মার্ক

তবে আশ্বাসও দিচ্ছেন জুকেরবার্গ। জানাচ্ছেন, কোগানের ঘটনাটা ২০১৩ সালের। ঠিক তার পরের বছরেই ফেসবুকের গোটা প্ল্যাটফর্ম পাল্টে দেওয়া হয়েছিল। ফলে এখন আর তথ্য হাতানো সহজ নয়।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০৩:৩১
Share:

মার্ক জুকেরবার্গ।

ফেসবুক থেকে তথ্য চুরি করে ভারতীয় ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা হলে তাঁকে সমন পাঠানোর হুমকি দিয়েছিলেন তথ্য প্রযুক্তিমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। চব্বিশ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই জবাব দিলেন ফেসবুক-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকেরবার্গ। আমেরিকার গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে পাঁচ কোটি মানুষের ফেসবুক-তথ্য বেহাত হওয়ার নৈতিক দায় নিলেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন, ভারত-সহ অন্যান্য দেশের নির্বাচনের গরিমা অক্ষুণ্ণ রাখতে তাঁর সংস্থা বদ্ধপরিকর।

Advertisement

একটি মার্কিন চ্যানেলে জুকেরবার্গ বলেছেন, ‘‘সামনে বড় নির্বাচন রয়েছে ভারতে। ব্রাজিল এবং আমেরিকাতেও ভোট আসছে। ফেসবুক এ সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত নিরাপত্তা জোরদার করতে দায়বদ্ধ। নির্বাচনের আগে ফ্রান্সেও ভুয়ো ফেসবুক অ্যাকাউন্ট বন্ধ করা হয়েছে।’’ আমেরিকার ভোটে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ ঠেকাতে ফেসবুক যথাযথ ব্যবস্থা নিয়েছিল বলেও দাবি করেছেন তিনি।

তথ্য ফাঁস নিয়ে এই প্রথম মুখ খুললেন জুকেরবার্গ। কাল ফেসবুকে নিজের ওয়ালে দীর্ঘ পোস্টও করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘‘ফেসবুকের শুরুটা যখন আমিই করেছিলাম, তখন সব কিছুর জন্য আমিই দায়ী। আপনাদের তথ্য সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের। যদি তাতে ব্যর্থ হই, তা হলে পরিষেবা দেওয়ার অধিকারই আমাদের নেই।’’ একই সঙ্গে ওই মার্কিন চ্যানেলে হাজির হয়ে জুকেরবার্গ বলেছেন, তিনি দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

Advertisement

ডেমোক্র্যাটদের দাবি মেনে মার্কিন কংগ্রেসে হাজিরা দেবেন কি না জানতে চাওয়া হলে ৩৩ বছরের জুকেরবার্গ বলেছেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি, ফেসবুক সংস্থায় এ ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি যিনি জানেন, তাঁকে পাঠাতে। যদি দেখা যায় সেই ব্যক্তি আমি, তা হলে স্বচ্ছন্দে যেতে পারি।’’

ফেসবুক ব্যবহারকারীদের তথ্য হাতিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারের কাজে তা ব্যবহার করেছিল কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা (সিএ) নামে একটি সংস্থা। অভিযোগ, তাদের ‘সহায়ক’ ছিলেন অ্যালেকজান্ডর কোগান নামে কেমব্রিজের এক অধ্যাপক। তিনি একটি অ্যাপ তৈরি করেন। একটি সমীক্ষা করার নামে কিছু পয়সা দিয়ে বেশ কিছু লোকের কাছ থেকে তাঁদের ফেসবুক-তথ্য ব্যবহারের অনুমতি নিয়েছিলেন তিনি। তার পর সেই সূত্র ধরে ওই ব্যক্তিদের ফেসবুক-বন্ধুদের তথ্য তিনি হাতিয়ে নেন বলে অভিযোগ। সব মিলিয়ে যে সংখ্যাটা ৫ কোটির কাছাকাছি।

ফেসবুকে জুকেরবার্গ লিখেছেন, ২০১৫ সালে তাঁরা জানতে পারেন, কোগান যাবতীয় তথ্য সিএ-কে দিয়েছেন। দুই সংস্থাকেই বলা হয়েছিল ওই তথ্য মুছে ফেলতে। ফেসবুকের কাছে তথ্য মুছে ফেলার মুচলেকাও দেয় সিএ। কিন্তু গত সপ্তাহে সংবাদমাধ্যমে জানা যায়, তথ্য মোছেনি তারা। জুকেরবার্গ বলছেন, মুচলেকায় বিশ্বাস করাটাই তাঁর ভুল হয়েছে। সেই ভুল আর হবে না। তথ্য ফাঁস নিয়েও উপভোক্তাদের অনেক আগে সতর্ক করা উচিত ছিল।

আরও পড়ুন: ফেসবুক-কাণ্ড ফাঁস করে নিজেই বিপত্তিতে ওয়াইলি

তবে আশ্বাসও দিচ্ছেন জুকেরবার্গ। জানাচ্ছেন, কোগানের ঘটনাটা ২০১৩ সালের। ঠিক তার পরের বছরেই ফেসবুকের গোটা প্ল্যাটফর্ম পাল্টে দেওয়া হয়েছিল। ফলে এখন আর তথ্য হাতানো সহজ নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন