অপরাধীর আর্জিতেই মিলল নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অনুমতি

অদম্য যৌন আকাঙ্খা কোনও দিনই কাটিয়ে উঠতে পারবে না। তাই জেল থেকে ছাড়া পেলেও, ফের অপরাধের দিকেই ঝুঁকবে বলে মনে করে বছর বাহান্নর ফ্রাঙ্ক ভ্যান ডেন ব্লিকেন। সে জন্যই জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে থাকার চেয়ে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর পথকেই বেছে নিতে চেয়েছে ফ্রাঙ্ক।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ব্রাসেলস শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৫ ০১:২১
Share:

ফ্রাঙ্ক ভ্যান ডেন ব্লিকেন।

অদম্য যৌন আকাঙ্খা কোনও দিনই কাটিয়ে উঠতে পারবে না। তাই জেল থেকে ছাড়া পেলেও, ফের অপরাধের দিকেই ঝুঁকবে বলে মনে করে বছর বাহান্নর ফ্রাঙ্ক ভ্যান ডেন ব্লিকেন। সে জন্যই জেলের চার দেওয়ালের মধ্যে থাকার চেয়ে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর পথকেই বেছে নিতে চেয়েছে ফ্রাঙ্ক।

Advertisement

বেলজিয়ামের একটি আদালত সেই আর্জি মেনে ফ্রাঙ্ককে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অনুমতি দিয়েছে। বেলজিয়ামের ফেডেরাল ইউথেনিশিয়া কমিশন গত সেপ্টেম্বরে ফ্রাঙ্কের নিষ্কৃতি-মৃত্যুর আবেদন গ্রহণ করে। সম্প্রতি তাকে স্পেশ্যালিস্ট ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছেন কমিশনের কর্তারা। সেখানেই প্রাণঘাতী ইঞ্জেকশনের সাহায্যে মুক্তি দিয়ে দেওয়া হবে ফ্রাঙ্ককে।

ইউরোপে মৃত্যুদণ্ডের উপর নিষেধাজ্ঞা চালু রয়েছে। তবে ২০০২ সালে বেলজিয়ামে নিষ্কৃতি-মৃত্যু আইনি স্বীকৃতি পেয়েছে। ১৯৮৯ সালের ১ জানুয়ারি বছর উনিশের একটি মেয়েকে ধর্ষণ করে ফ্রাঙ্ক। তার পর মেয়েটিরই একটি মোজার সাহায্যে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে তাঁকে। সে সময় ফ্রাঙ্ককে অপ্রকৃতিস্থ বলা হয়। যেখানে মানসিক ভাবে অসুস্থ অপরাধীরা থাকে, জেলের এমন একটি ওয়ার্ডে সাত বছর থাকার পর জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় ফ্রাঙ্ককে। ছাড়া পাওয়ার পরেও এগারো, সতেরো এবং উনত্রিশ বছরের তিন জনকে ফের আক্রমণ করে ফ্রাঙ্ক। তার পর অনির্দিষ্ট কালের জন্য আটক করে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় তাকে। সেই থেকে এতগুলো বছরে এক বারই জেলের বাইরের দুনিয়াটা দেখেছে ফ্রাঙ্ক। মায়ের অন্ত্যেষ্টিতে যোগ দিতে বাইরে এসেছিল সে। ২০১১ সালে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর জন্য প্রথম আবেদন করে ফ্রাঙ্ক।

Advertisement

ফ্রাঙ্কের ছোটবেলা আর পাঁচটা বাচ্চার মতো ছিল না। পনেরো বছর বয়সে যৌন হেনস্থার শিকার হয় সে। গত বছর টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে ফ্রাঙ্ক বলে, “কেউ যৌন অপরাধ করলে, সেটা কাটিয়ে ওঠার জন্য অপরাধীকে সাহায্য করা উচিত বাকিদেরও। শুধুমাত্র জেলে বন্দি করলেই কোনও সুরাহা হয় না।” ফ্রাঙ্ক বলেছে, “আমি এক জন মানুষ। আমি যা করেছি, সেটা মাথায় রাখলেও আমি এক জন মানুষই। আমাকে নিষ্কৃতি-মৃত্যু দাও।”

তবে ১৯৮৯ সালে বছর উনিশের যে মেয়েটিকে ধর্ষণ করে হত্যা করে ফ্রাঙ্ক, তাঁর পরিবার অবশ্য তীব্র ভাবে আক্রমণ করেছেন ফ্রাঙ্ককে। অপরাধীকে নিষ্কৃতি-মৃত্যুর অনুমতি দেওয়ার নিন্দা করেছেন মেয়েটির দুই দিদি। এ ভাবে মরে যাওয়ার চেয়ে জেলবন্দি হয়ে কেন যন্ত্রণা পাবে না অপরাধী, সে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন