আউশভিৎস মুক্তি দিবসে নেই রাশিয়া

নাৎসিদের ইহুদি নিধন যজ্ঞের সঙ্গে দক্ষিণ পোল্যান্ডের নামটা জড়িয়ে রয়েছে ওতপ্রোত ভাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানেই যে ছিল তাদের আউশভিৎস কনসেনট্রেশন ক্যাম্প। বীভৎস অত্যাচারের ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে শেষ পর্যন্ত নাৎসি কবল থেকে মুক্তি দেয় সোভিয়েত বাহিনী। সেটা ১৯৪৫ সাল। আজ থেকে ঠিক ৭০ বছর আগে। মুক্তির এই বিশেষ দিনটি উদ্যাপনের জন্য দক্ষিণ পোল্যান্ডের কারকাও-তে মঙ্গলবার জড়ো হলেন কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে ফিরে আসা প্রায় ৩০০ বন্দি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়ারশ শেষ আপডেট: ২৮ জানুয়ারি ২০১৫ ০৩:২৬
Share:

নাৎসিদের ইহুদি নিধন যজ্ঞের সঙ্গে দক্ষিণ পোল্যান্ডের নামটা জড়িয়ে রয়েছে ওতপ্রোত ভাবে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এখানেই যে ছিল তাদের আউশভিৎস কনসেনট্রেশন ক্যাম্প। বীভৎস অত্যাচারের ক্ষত নিয়ে বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে শেষ পর্যন্ত নাৎসি কবল থেকে মুক্তি দেয় সোভিয়েত বাহিনী। সেটা ১৯৪৫ সাল। আজ থেকে ঠিক ৭০ বছর আগে। মুক্তির এই বিশেষ দিনটি উদ্যাপনের জন্য দক্ষিণ পোল্যান্ডের কারকাও-তে মঙ্গলবার জড়ো হলেন কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে ফিরে আসা প্রায় ৩০০ বন্দি। অনুষ্ঠানে থাকার কথা পোল্যান্ড, ফ্রান্স, জার্মানি, ইউক্রেনের রাষ্ট্রপ্রধানদেরও।

Advertisement

তবে থাকছেন না রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ইউক্রেনে যে ভাবে যুদ্ধের ছায়া ঘনাচ্ছে, তাতে রাশিয়ার উপর বেজায় ক্ষুব্ধ পোল্যান্ড। রুশ আগ্রাসনের প্রতিবাদ জানাতেই এ দিনের অনুষ্ঠানে পুতিনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে দাবি সে দেশের আইনমন্ত্রীর।

নাৎসি বীভৎসতার আর এক নাম যেন আউশভিৎস ক্যাম্প। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় কেবল এখানেই প্রায় ১৫ লক্ষ ইহুদিকে হয় গ্যাস চেম্বারে, নয়তো জীবন্ত পুড়িয়ে বা গুলি করে হত্যা করে হিটলারের বাহিনী।

Advertisement

রুশ-ইউক্রেন সমস্যাকে ঘিরে ইউরোপে যখন আবার যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে, সেই সময়ে দাঁড়িয়ে ইহুদি নিধন যজ্ঞের স্মৃতিতে এত মানুষের মিলিত হওয়াকে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। অনেকের মতে, ইউরোপ জুড়ে এখন ইহুদি-বিদ্বেষও ধীরে ধীরে মাথাচাড়া দিচ্ছে। ক’দিন আগেই যেমন বন্দুকবাজের হামলায় নিহত হয়েছেন ফ্রান্সের চার ইহুদি। অস্কারজয়ী পরিচালক স্টিভেন স্পিলবার্গ নিজে ইহুদি। কনসেনট্রেশন ক্যাম্পের দিন-রাত্রি নিয়ে এককালে বানিয়েছিলেন ‘শিন্ডলার্স লিস্ট’। আউশভিৎস ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরার ৭০ বছর উপলক্ষে এই জমায়েত নিয়ে খুবই আগ্রহী তিনি। অস্কারজয়ী এই পরিচালকের মতে, ইহুদি অত্যাচারের ভয়াবহতা থেকেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা নেওয়া উচিত। মত প্রকাশের স্বাধীনতা, ধর্মাচারণের স্বাধীনতা সব ক্ষেত্রেই এখন অসহিষ্ণু আঘাত নেমে আসছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

আউশভিৎসে তখন তিনি সদ্যোজাত। কারকাও-এর কনসেনট্রেশন ক্যাম্প থেকে বেঁচে ফেরা যে মানুষগুলো আজ জড়ো হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ আজ সত্তর বছরের বৃদ্ধ। আউশভিৎসেই জীবনের প্রথম কয়েক বছর কেটেছিল জিগি শিপারেরও। তাঁর এক টুকরো অভিজ্ঞতার কথা শোনা গেল এ দিন। “ওরা বলল স্নান করাতে নিয়ে যাবে বন্দিদের। কিন্তু নিয়ে গেল একটা বাড়ির মধ্যে। সবাইকে তার মধ্যে আটকে রেখেই জ্বালিয়ে দিল গোটা বাড়িটা” আতঙ্কের ছবিটা তার পর থেকে এক মুহূর্ত ভুলতে পারেননি ওই বৃদ্ধ। আজ তাঁর চোখের জল মিশে গেল বাকিদের সঙ্গেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন