বাংলাদেশে ব্লগার অভিজিৎ রায়ের হত্যার প্রতিবাদে মোমবাতি মিছিল। রবিবার কলকাতার অ্যাকাডেমি চত্বরে বিশ্বনাথ বণিকের তোলা ছবি।
লেখকের শেষ ইচ্ছে মেনে তাঁর দেহ গবেষণার জন্য আজ তুলে দেওয়া হল ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের হাতে। কিন্তু তিন দিন পার হয়ে গেলেও সন্দেহভাজন মৌলবাদীদের হাতে লেখক অভিজিৎ রায়ের খুনের কোনও কিনারা এখনও করতে পারেননি বাংলাদেশ পুলিশ। এই অবস্থায় গত কালই তদন্তে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছিল মার্কিন প্রশাসন। রবিবার দেশের বিদেশমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলি জানিয়েছেন, সেই প্রস্তাবে সায় দিয়েছে সরকার। অভিজিৎ-হত্যার তদন্তে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইকে সামিল করা হবে বলে জানান তিনি।
অভিজিৎকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে আজ পথে নেমেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক-ছাত্রছাত্রী থেকে শুরু করে অসংখ্য সাধারণ মানুষ। প্রথমে তাঁর দেহ মেডিক্যাল কলেজ মর্গ থেকে শববাহী গাড়িতে করে নিয়ে আসা হয় নিজের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেও নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সব স্তরের মানুষ।
পরে অভিজিৎ-স্মরণে একটি অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এবং অভিজিতের বাবা অজয় রায় জানান, ছেলের খুনের কিনারায় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ চান। তাঁর মন্তব্য, “মৌলবাদী জঙ্গিগোষ্ঠীর হাত রয়েছে এই হত্যাকাণ্ডের পিছনে। মৌলবাদীরা যখন ছেলেকে হুমকি দিচ্ছিল, আইজি-ডিআইজি-সহ অনেককেই সে ব্যাপারে জানানো হয়েছিল। তাতেও কিছু হল না। এটা সরকারেরই ব্যর্থতা।” জামাতে ইসলামি-সহ সব জঙ্গি গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করার জন্যও আবেদন জানাবেন তিনি।
অভিজিৎ রায় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মিছিল আগরতলায়।
রবিবার বাপি রায়চৌধুরীর তোলা ছবি।
হাসিনাকে নিজের ছাত্রীসম জানিয়ে তিনি বলেন, “ওঁর কাছে আবেদন, দুষ্কৃতীদের সমূলে শেষ করার জন্য কিছু করুন।” তদন্ত প্রসঙ্গে এফবিআইয়ের কথাও ওই অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেন অজয়বাবু। মার্কিন প্রবাসী অভিজিতের খুনের তদন্তে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস থেকে একটি প্রতিনিধিদল তাঁর সঙ্গে দেখা করেছিল বলে জানান তিনি। ওই প্রতিনিধিরা বলেন, সরকার চাইলে এফবিআই তদন্তে সহায়তা করতে পারে।
কারণ সরকারের অনুমতি ছাড়া মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করতে পারবে না।