দশ মাসেরও বেশি সময় ধরে তল্লাশি অভিযান চলছে। তবু হদিস মেলেনি মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের বিমান এমএইচ ৩৭০-র। বৃহস্পতিবার মালয়েশিয়ার অসামরিক উড়ান পরিষেবা কর্তৃপক্ষও আনুষ্ঠানিক ভাবে স্বীকার করে নিলেন, এমএইচ ৩৭০-র অর্ন্তধান এক ‘দুর্ঘটনা’। বিমানে ২৩৯ জন যাত্রীও মৃত বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন তাঁরা। এই ঘোষণার পর ওই সফরকারীদের আত্মীয়রা ক্ষতিপূরণের দাবি জানাতে পারবেন বলে আইনজ্ঞদের দাবি।
গত ৮ মার্চ কুয়ালা লামপুর থেকে বেজিং যাওয়ার পথে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিল এমএইচ-৩৭০। পরে জানা যায়, নির্ধারিত পথে ঘণ্টাখানেক ওড়ার পরেই সেটি নিজের অভিমুখ পরিবর্তন করেছিল। কেন এমন হয়েছিল আর তার পরেই বা কী হয়, তা নিয়ে এখনও ধোঁয়াশা রয়েছে। শুধু কিছু তথ্য বিশ্লেষণ করে ধারণা করা হয়েছিল, দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে শেষমেশ ভেঙে পড়েছিল বিমানটি। সেই অনুমানের ভিত্তিতে এত দিন ধরে তল্লাশি অভিযান চলছে। কিন্তু যাত্রীদের দেহ তো দূর অস্ত, বিমানের ছোটখাটো অংশও হাতে আসেনি উদ্ধারকারীদের। এ হেন অবস্থায় তল্লাশির ভবিষ্যৎ কী দাঁড়াবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছিলই। ক্ষোভ বাড়ছিল পরিজনদের মধ্যেও। আজকের ঘোষণার পর সেই ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়েছে। পরিজনদের সন্দেহ, পাকাপোক্ত প্রমাণ না মেলার আগেই যেমন ভাবে এই অন্তর্ধানকে দুর্ঘটনা বলে দিল মালয়েশীয় প্রশাসন, ঠিক তেমন ভাবেই এক দিন যাত্রীদের দেহ উদ্ধার হওয়ার আগেই তল্লাশি অভিযান বন্ধের কথাও ঘোষণা করে দিতে পারে তারা। মালয়েশিয়ার অসামরিক উড়ান পরিষেবার প্রধান আজহারউদ্দিন আব্দুল রেহমান অবশ্য আশ্বস্ত করেছেন, তল্লাশি চলবেই। তবু নিশ্চিন্ত নন পরিজনেরা। আন্তর্জাতিক উড়ান বিধি অনুযায়ী, দীর্ঘ তল্লাশির পর যখন কোনও বিমানকে নিখোঁজ বলে ধরে নেওয়া হয়, তখনই তাকে দুর্ঘটনা-র তকমা দেওয়া হয়। আজকের এই ঘোষণার পর পরিজনদের প্রশ্ন, তা হলে কি এমএইচ ৩৭০-কেও নিখোঁজ বলেই ধরে নিল মালয়েশিয়া? যদি তা হয়, সে ক্ষেত্রে তল্লাশির মেয়াদ আর ক’দিন হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছেই আত্মীয়দের মধ্যে।