বিয়ের কিছু দিন পরে ফ্রান্সে উইলিয়ামের সঙ্গে ছুটি কাটাতে গিয়ে শিরোনামে এসেছিলেন তিনি। সে বার তাঁর টপলেস ছবি নিয়ে হইহই পড়ে গিয়েছিল।
আর গত এপ্রিল মাসে সপুত্র অস্ট্রেলিয়া সফর সেরে এসে ফের শিরোনামে তিনি। তবে এ বার বিতর্কের কেন্দ্রে অন্য একটি ছবি। যাতে দেখা যাচ্ছে, হাওয়ার তোড়ে উড়ে গিয়েছে তাঁর নীল-সাদা পোশাক। যার ফলে পিছন দিক থেকে দৃশ্যমান সব কিছুই!
ডাচেস অব কেমব্রিজ কেট মিডলটনকে নিয়ে তাই আরও এক বার অস্বস্তিতে ব্রিটেনের রাজপরিবার। যদিও ব্রিটেনের কাগজগুলি রাজপরিবারের প্রতি সম্মান দেখিয়ে সেই ছবি ছাপেনি।
কিন্তু রুপার্ট মার্ডকের অস্ট্রেলিয়ার এক দৈনিক ব্রিটেনের রাজপরিবারের কৌলীন্যকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে আজ ওই ছবি ছেপে দিয়েছে। ওই দৈনিকের মতে, ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের নিষেধাজ্ঞা হাস্যকর। দৈনিকের তরফে অ্যানেট শার্প বলেছেন, “সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যম ওই ছবি সংক্রান্ত নিষেধাজ্ঞা মানবে, এটা আশা করাটাই হাস্যকর। বিশেষত এই যুগে যেখানে শরীর এবং বাণিজ্য হাত ধরাধরি করে চলে।” তাঁর আরও দাবি, “ডাচেস অব কেমব্রিজ যদি জামাকাপড় সামলে রাখতে না পারেন, তা হলে মিডিয়াই বা কেন সেটা নিয়ে রাখঢাক করবে?”
একেবারে প্রথমে কেটের বিতর্কিত ওই ছবিটি প্রকাশিত হয় একটি জার্মান ট্যাবলয়েডে। যাতে দেখা যাচ্ছে, দমকা হাওয়ায় উড়ে গিয়েছে কেটের ড্রেস। সিডনির ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে ব্লু মাউন্টেনের কাছে হেলিকপ্টার থেকে তখন বেরিয়ে আসছেন উইলিয়াম এবং কেট। সেই সময় ডায়ান মোরেল নামে এক মহিলা নিজের অজান্তেই কেটের অসতর্ক মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন। ৪৭ বছরের মোরেল অস্ট্রেলীয় দৈনিককে বলেছেন, “আমি বাড়ি গিয়ে ক্যামেরার কার্ডটা কম্পিউটারে লাগানোর পরে বুঝলাম কী ছবি তুলেছি!” ওই ছবি বিক্রি করে যে টাকা উঠবে, মোরেল চান সেটা কোনও তহবিলে দান করতে। তাঁর দানধ্যানের গল্প ছবি নিয়ে বিতর্ক চাপা দেবে, এমন আশা কিন্তু দুষ্কর।
পোশাক-বিপত্তি থেকে কিছু দিন আগেই বরাতজোরে বেঁচে যান কেট। অস্ট্রেলিয়া পৌঁছনোর আগে নিউজিল্যান্ডেও বিমান থেকে নামার সময়ে উড়ে যাচ্ছিল তাঁর লাল ড্রেস। সে বার অবশ্য কোনও মতে পোশাক টেনেটুনে বিতর্ক এড়িয়েছিলেন উইলিয়াম-পত্নী।
কেটের সাম্প্রতিক ছবি-বিতর্ক উস্কে দিয়েছে ২০১২ সালের স্মৃতি। ফ্রান্সে ছুটি কাটাতে গিয়ে উইলিয়াম আর তাঁর ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি ফ্রেমবন্দি করেন এক চিত্রসাংবাদিক। যাতে দেখা যায়, টপলেস কেটের শরীরে ক্রিম লাগাচ্ছেন উইলিয়াম। সেই ছবি নিয়ে পরে মামলা করে ব্রিটিশ রাজপরিবার। ফরাসি প্রশাসনের হুঁশিয়ারিতে সংশ্লিষ্ট পত্রিকায় ওই ছবি ব্যবহারের ক্ষেত্রে জারি হয় নিষেধাজ্ঞা। সেই প্রসঙ্গ কি ভুলে গিয়েছে অস্ট্রেলীয় দৈনিক?
তাদের যুক্তি, সেটি ছিল কেট-উইলিয়ামের ব্যক্তিগত মুহূর্ত। সেই ছবি নিয়ে আপত্তি ওঠাই স্বাভাবিক। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় কেট-উইলিয়াম প্রকাশ্য এলাকায় হাঁটছিলেন। তা হলে সেই ছবি নিয়ে আপত্তি উঠবে কেন?
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রাখঢাক করলেও ছবিটি কিন্তু ছড়িয়ে পড়েছে ইন্টারনেটে। জার্মান ট্যাবলয়েডের সমালোচনা করে একটি ব্রিটিশ দৈনিক আজ অবশ্য বিষয়টি নিয়ে একটি লেখা প্রকাশ করেছে। যাতে লেখিকার দাবি, কেট এমনই সংক্ষিপ্ত অন্তর্বাস (থং) পরেছিলেন যাতে পোশাক উড়ে গিয়ে এতটা বিপত্তি হয়েছে। সঙ্গে লেখকের পরামর্শ: রাজপরিবারের সদস্য হিসেবে কেটের মনে রাখা উচিত যে তিনি যে কোনও মুহূর্তে ক্যামেরাবন্দি হতে পারেন। তাই সেটা মাথায় রেখেই পোশাক বেছে নেওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে এখনও মুখে কুলুপ ব্রিটিশ রাজপরিবারের।