ক্রিমিয়ায় রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মিছিল। শনিবার মস্কোয়। ছবি: এএফপি।
রাত পোহালেই ক্রিমিয়ায় গণভোট। পরিস্থিতি এমনিতেই উত্তপ্ত। তার মধ্যেই আবার নতুন করে রক্তপাত ইউক্রেনে। গত কাল খারকিভ শহরের সোবোডা স্কোয়ারে সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হয়েছে দু’জনের। এর আগে গত বৃহস্পতিবার ডনেটস্ক শহরে কিয়েভপন্থী এক সমর্থকের ছুরিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছিল। কাল আবার নতুন করে দু’জনের মৃত্যু হওয়ায় চিন্তিত আন্তর্জাতিক মহল। গত কালের সংঘর্ষ মাস খানেক আগের কিয়েভের রক্তপাতের স্মৃতিই উস্কে দিচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।
ইউক্রেনের পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, কাল সোবোডা স্কোয়ারে রাশিয়াপন্থী আর কিয়েভপন্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সেই সময় সরকারি একটি দফতরে জোর করে ঢোকার চেষ্টা করে রুশপন্থীরা। হঠাত্ই ইউক্রেনের অন্তর্বর্তী সরকারের সমর্থকেরা একটি গাড়ির মধ্যে থেকে গুলি চালাতে শুরু করে। তাতে মৃত্যু হয় এক রুশপন্থী বিক্ষোভকারীর। পুলিশ জানিয়েছে, সেই সময় রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে থাকা এক ব্যক্তিও গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। কালকের ঘটনায় আহত হয়েছেন ছ’জন। এঁদের মধ্যে এক পুলিশ অফিসারের অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক।
এই অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যেই আজ মস্কোয় সরকার-বিরোধী একট বিশাল বিক্ষোভ মিছিল বেরিয়েছে। রাশিয়া আর ইউক্রেন দু’দেশেরই পতাকা উড়েছে সেই মিছিলে। তবে প্রায় পঞ্চাশ হাজার মানুষের ওই মিছিলে কার্যত পুতিন সরকারকে তুলোধোনা করা হয়েছে। চিত্কার করে বিক্ষোভকারীরা মস্কোর প্রতি বার্তা দিয়েছেন, “পুতিন, ক্রিমিয়া থেকে সরে এসো।”
তবে বিক্ষোভকারীরা যা-ই দাবি করুন না কেন, ক্রিমিয়ার গণভোট নিয়ে মস্কো কিন্তু আশাবাদী। ক্রিমিয়াকে নিজেদের অংশ করতে প্রায় এক প্রকার মরিয়া পুতিন সরকার। কালও লন্ডনে রুশ বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ ও মার্কিন বিদেশসচিব জন কেরির বৈঠক ব্যর্থ হয়েছে। প্রায় ছ’ঘণ্টার ওই ম্যারাথন বৈঠকে কোনও পক্ষই সমাধান সূত্রে পৌঁছতে পারেনি। এক দিকে আমেরিকা ক্রিমিয়া থেকে রুশ সেনা সরিয়ে আনার জন্য চাপ দিয়ে গিয়েছে। অন্য দিকে, রাশিয়াও নিজেদের দাবিতে অনড়। ক্রিমিয়ায় গণভোট তারা করিয়েই ছাড়বে। এর মধ্যেই আজ রাষ্ট্রপুঞ্জের একটি খসড়া প্রস্তাবে ক্রিমিয়ার আসন্ন গণভোটকে অবৈধ আখ্যা দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে যদিও বিন্দুমাত্রও চিন্তিত নয় রাশিয়া। উল্টে রাশিয়ার উপবিদেশমন্ত্রী জেনাডি গাতিলভের দাবি, রাষ্ট্রপুঞ্জের ওই প্রস্তাবই গ্রহণযোগ্য নয়। আগামিকাল ক্রিমিয়াবাসী কী রায় দেয়, সে দিকেই তাকিয়ে গোটা বিশ্ব।