জেলে আল-কায়দায় যোগ দেয় শেরিফ

ব্রিটেনেও প্যারিসের কায়দায় হামলা হতে পারে বলে গত কাল সতর্ক করেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দাপ্রধান অ্যান্ড্রু পার্কার। আজ গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, শার্লি এবদো পত্রিকার দফতরে হামলায় অভিযুক্ত শেরিফ কুয়াশির আল-কায়দায় যোগ দেওয়ার পিছনে রয়েছে জামেল বেঘালের মস্তিষ্ক। লন্ডনের ফিনসবিউরি পার্ক মসজিদে নিয়মিত দেখা যেত আল-কায়দা নেতা বেঘালকে। ব্রিটেনে এই গোষ্ঠীর আরও স্লিপার সেল রয়েছে কি না তা নিয়ে তদন্ত নেমেছে পুলিশ।

Advertisement

শ্রাবণী বসু

লন্ডন শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৫ ০২:১৭
Share:

আমি শার্লি, এই স্লোগান নিয়েই রাস্তায় নামল ফ্রান্স। সন্ত্রাসের চোখে চোখ রাখার অঙ্গীকার করল। শনিবার লিলে শহরের এমনই এক মিছিলের ছবি। ছবি: এ এফ পি।

ব্রিটেনেও প্যারিসের কায়দায় হামলা হতে পারে বলে গত কাল সতর্ক করেছিলেন ব্রিটিশ গোয়েন্দাপ্রধান অ্যান্ড্রু পার্কার।

Advertisement

আজ গোয়েন্দারা জানিয়েছেন, শার্লি এবদো পত্রিকার দফতরে হামলায় অভিযুক্ত শেরিফ কুয়াশির আল-কায়দায় যোগ দেওয়ার পিছনে রয়েছে জামেল বেঘালের মস্তিষ্ক। লন্ডনের ফিনসবিউরি পার্ক মসজিদে নিয়মিত দেখা যেত আল-কায়দা নেতা বেঘালকে। ব্রিটেনে এই গোষ্ঠীর আরও স্লিপার সেল রয়েছে কি না তা নিয়ে তদন্ত নেমেছে পুলিশ।

মৌলবাদী কাজকর্মের কেন্দ্র হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই গোয়েন্দাদের নজরে রয়েছে ফিনসবিউরি পার্ক মসজিদ। দীর্ঘদিন ধরে সেখানে মৌলবাদী ভাবধারা প্রচার করেছে দুই ধর্মগুরু আবু হামজা ও আবু কাতাদা। পরে আবু হামজার বিরুদ্ধে আমেরিকায় জঙ্গি নাশকতায় যুক্ত থাকার মামলা হয়। দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পরে আমেরিকায় প্রত্যর্পণ করা হয় হামজাকে। গত কাল তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে নিউ ইয়র্কের আদালত।

Advertisement

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, এই মসজিদে নিয়মিত যাতায়াত ছিল জামেল বেঘালের। আফগানিস্তানে ওসামা বিন লাদেনের ঘনিষ্ঠ এক নেতার সঙ্গেও তার সাক্ষাৎ হয়েছিল। ইউরোপে যুবকদের আল-কায়দায় নিয়োগের কাজ করত বেঘাল। এ কাজে সে বেশ কিছুটা সাফল্য পেয়েছিল বলেই ধারণা গোয়েন্দাদের।

২০০১ সালে ফ্রান্সে গ্রেফতার হয় বেঘাল। প্যারিসের জেলেই তার সঙ্গে শেরিফ কুয়াশির আলাপ হয়। ইরাকে জেহাদি পাঠানোর কাজ করার অভিযোগে শেরিফ তখন জেলে। সেখানেই বেঘালের নেতৃত্বে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয় কুয়াশি। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পরে যোগাযোগ বজায় রেখেছিল বেঘাল ও কুয়াশি। ২০১০ সালের এপ্রিলে দক্ষিণ ফ্রান্সে দেখা করে তারা। সেখানে হাজির ছিল আরও দুই সন্দেহভাজন জঙ্গি লাইদৌনি ও ফরিদ মেলোক। গোপনে তাদের ছবিও তুলেছিলেন ফরাসি গোয়েন্দারা। কুয়াশির মতো বেঘাল, লাইদৌনি ও মেলোকও আলজেরীয় বংশোদ্ভূত। বেঘাল যে ফের একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চাইছে তা তখনই বুঝতে পেরেছিলেন গোয়েন্দারা। শেরিফ কুয়াশির জঙ্গি যোগ সম্পর্কে এত তথ্য গোয়েন্দাদের হাতে থাকা সত্ত্বেও সে কী ভাবে এত বড় হামলা চালাতে পারল তা নিয়ে ইতিমধ্যেই ফ্রান্সে প্রশ্ন উঠেছে। এ বার ব্রিটেনেও সেই প্রশ্ন উঠবে বলে আশঙ্কা নানা শিবিরের।

এক সময়ে ফিনসবিউরি পার্ক মসজিদের মধ্যে গোয়েন্দা সংস্থা এমআইফাইভের চর হিসেবে কাজ করত রেডা হাসান। তার কথায়, “এখন যে প্রজন্ম জেহাদে যোগ দিয়েছে তাদের সঙ্গে কখনও আবু হামজা বা আবু কাতাদার দেখা হয়নি। কিন্তু মৌলবাদী নাশকতার শিক্ষা তাদের কাছে ভাল ভাবেই পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।” আরও কত কুয়াশি দেশে রয়েছে, তা জানতেই এখন উদগ্রীব গোয়েন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন