গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত হংকংয়ে। হাজারো মানুষের বিক্ষোভ মিছিলে কার্যত অচল হয়ে গিয়েছে শহরটা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাচ্ছে দেখে অবশেষে মুখ খুলেছেন প্রশাসনকর্তা লিউং চুনইং। স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, কোনও পরিস্থিতিতেই হংকংয়ের নির্বাচন ঘিরে চিনের অবস্থানের পরিবর্তন হবে না। অবিলম্বে বিক্ষোভ-মিছিল বন্ধের ডাকও দিয়েছেন তিনি। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বিক্ষোভকারীরাও জানিয়েছেন, যত দিন না গণতান্ত্রিক অধিকারের স্বীকৃতি মিলছে তত দিন বিক্ষোভ চলবে।
মঙ্গলবার পাঁচ দিনে পড়ল হংকংয়ের বিক্ষোভ। গণতান্ত্রিক অধিকারের দাবিতে গ্লোসেস্টার রোর্ড, হারকোর্ট রোডের মতো ব্যস্ততম রাস্তায় নেমেছেন প্রায় আশি হাজার মানুষ। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট টুইটারে তাঁদের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য বুধবার পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। লিউং চুনইংয়ের পদত্যাগও দাবি করেছেন তাঁরা। জানিয়েছেন, লিউং চুনইং পদত্যাগ করলে বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত রাখতে রাজি তাঁরা। বুধবারের মধ্যে দাবি না মানা হলে নতুন করে আইন অমান্য আন্দোলনে নামার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। শহরের বিভিন্ন জায়গায় সরকারি আবাসনগুলির সামনে এ দিন ধর্নায় বসেন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কোথাও কোথাও কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। বিক্ষোভের জেরে এ দিনও বন্ধ ছিল স্কুল-কলেজ। রাস্তায় দেখা মেলেনি বাস, ট্যাক্সির।
১৯৯৭ সালে ‘এক দেশ, দুই পন্থা’ ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে চিন প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে এসেছিল একদা ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকং। সেই সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, হংকংকে প্রত্যাশামতো স্বাধীনতা দেওয়া হবে। চিনের নিয়মকানুনের সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা হবে না হংকংকে। জটিলতার শুরু অগস্টে। হংকংয়ের মানুষের নেতা নির্বাচনের অধিকার কেড়ে নেয় বেজিং। নির্বাচনে বেজিং-ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকেই দাঁড় করানোর সিদ্ধান্ত নেয় চিন সরকার। তার পর থেকেই ক্ষোভ উগরে দিচ্ছে হংকং। “হংকং চিনেরই” বলে পাল্টা প্রচারে নেমেছে বেজিংও।