রাত্তিরবেলায় হইহই। লন্ডনের রাস্তায় দমকলের অফিসাররা গিয়ে ছুটোছুটি করে লোকজনকে বাড়ি থেকে বের করে আনছেন। তত ক্ষণে নোংরা কাদা জলে ভেসে গিয়েছে দক্ষিণ লন্ডনের বেশ কয়েকটি রাস্তা।
জলের তোড় এতটাই বেশি, যে কিছু ফ্ল্যাটের ভিতরেও ঢুকে গিয়েছে সেই জল। দুর্গন্ধে টিকতে পারছেন না কেউ। তাই দ্রুত লোকজনকে বের করে আনতে হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, দক্ষিণ লন্ডনের কেনিংটনের ক্ল্যাপহ্যাম রোডে নিকাশি নালার পাইপ ফেটে এই বিপত্তি।
এই রাস্তায় যথেষ্ট অভিজাত লোকজনের বাস। এক একটি বাড়ির দাম আট লক্ষ পাউন্ডের কাছাকাছি বা তারও বেশি। কী করে পাইপ ফাটলো, তার কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি কেউ। কিন্তু নোংরা জলে ক্ল্যাপহ্যাম রোডের এমনই দুর্দশা যে সকাল থেকেই গোটা এলাকা বন্ধ করে দিতে হয়েছে। নোংরা পরিষ্কার করতে ইঞ্জিনিয়াররা পৌঁছন সেখানে। ছিল দমকলের চারটি ইঞ্জিনও। পরে বলা হয়, জলের পাইপ ফেটে এই ঘটনা।
রাস্তায় প্রায় চার ইঞ্চি গভীর জল। বালির বস্তা ফেলে কোনও মতে জল আটকানোর চেষ্টা চালান তাঁরা। গোটা এলাকায় তৈরি হয় ব্যাপক যানজট। বছর ৫৮-র অ্যাঞ্জেলা রেনল্ডস বলেন, “জানি না, কী ভাবে ওরা এটা বন্ধ করবে। মাত্র দশ মিনিটে সব ভেসে গেল। অবিশ্বাস্য! জলটা একেবারে জঘন্য। কাদা-বালি ভর্তি। সঙ্গে কী দুর্গন্ধ। আশা করি ওই জলে শুধু কাদাই রয়েছে!” তাঁর কথায়, রাস্তাকে আর রাস্তা বলে চেনা যাচ্ছে না। গোটা চত্বর দেখে মনে হচ্ছে যেন নোংরা জলের নদী বইছে।
বেশ কিছু ফ্ল্যাটের নীচ তলায় জল ঢুকে পড়ায় অসুবিধায় পড়েছেন বাসিন্দারা। ক্ল্যাপহ্যাম রোডের হাল দেখে দাঁড়িয়ে পড়েছিলেন পথচলতি বছর ২৪-এর যুবক মার্কাস ইস্কেনস। তিনি সব দেখে বলছেন, “রাস্তার পুরোটাই বন্ধ। এত জল। পরিস্থিতি পুরোপুরি ঠিক হতে হয়তো আরও কয়েক দিন লেগে যাবে।” আপাতত লন্ডনের ব্যস্ত রাস্তা অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ। মেট্রোপলিটান পুলিশ মুখপাত্র জানান, ওভাল এবং স্টকওয়েল টিউব স্টেশনের মাঝামাঝি ওই জল বয়ে গিয়েছে।