প্রেমিকের মগজধোলাই, জঙ্গি হতে গিয়ে ধৃত তরুণী

আলাপ, প্রেম আর তার পর...সটান বিমানের টিকিট কেটে প্রেমিকের দেশের দিকে রওনা দেওয়া। কিন্তু বাদ সাধল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। মাঝপথ থেকেই উনিশ বছরের তরুণী নার্সকে ধরে নিয়ে গেল তারা। অভিযোগ, আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছেন তরুণী।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৪ ০২:২৩
Share:

আলাপ, প্রেম আর তার পর...সটান বিমানের টিকিট কেটে প্রেমিকের দেশের দিকে রওনা দেওয়া। কিন্তু বাদ সাধল মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই। মাঝপথ থেকেই উনিশ বছরের তরুণী নার্সকে ধরে নিয়ে গেল তারা। অভিযোগ, আমেরিকার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে সামিল হয়েছেন তরুণী। এবং গোটা বিষয়টার নেপথ্যে রয়েছে তাঁর হবু স্বামী। এফবিআই-এর দাবি, তরুণীর প্রেমিক এক জন জঙ্গি। ইন্টারনেটে ক্রমাগত মগজধোলাই করে তরুণীকেও মার্কিন-বিরোধী করে তোলে সে।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে মাস দু’য়েক আগে। কিন্তু বুধবারই সেই মামলার কিছু নথি প্রকাশ করেছে কলোরাডোর এক আদালত। তাতে জানা যায়, ধৃতের নাম শ্যানন মরিন কনলে। তবে ফেসবুকে তাঁর নাম হালিমা। নামে বদল কেন, সে প্রশ্নের জবাবে শ্যানন এফবিআইকে জানিয়েছেন, তিনি ধর্ম পরিবর্তন করেছেন। তাই নামেও বদল। জেরায় ‘জেহাদ’ নিয়ে নিজের ধ্যানধারণার কথাও এফবিআইকে জানান তিনি। শুনে এফবিআইয়ের বিশ্বাস, প্রেমিকের প্ররোচনাতেই মার্কিন-বিরোধী ষড়যন্ত্রে সামিল হতে যাচ্ছিলেন শ্যানন।

তাঁর বয়ানও সে বিশ্বাসই জোরদার করেছে। শ্যাননের দাবি, নার্সিংয়ের প্রশিক্ষণ থাকায় আহত জঙ্গিদের সেবার কাজে লাগতে পারতেন তিনি। তবে তাঁর মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে যোগ দেওয়া। সে জন্যই সিরিয়ার জঙ্গি সংগঠন আইএসআইএস-এ যোগ দিতে সে দেশে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন শ্যানন। তিনি অবশ্য তুরস্কের টিকিট কেটেছিলেন। সেখান থেকে জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট হয়ে সিরিয়া যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ডেনভার বিমানবন্দরেই তাঁকে আটকে দেয় এফবিআই।

Advertisement

কিন্তু আইএসআইএস-র সঙ্গে তরুণীর যোগাযোগ হল কী ভাবে? এখানেই রয়েছে তাঁর হবু প্রেমিকের ভূমিকা। আদতে তিউনিশিয়ার বাসিন্দা ওই বত্রিশ বছরের যুবকের সঙ্গে শ্যাননের আলাপ ইন্টারনেটে। অতঃপর স্কাইপ-এ গল্পগুজব, প্রেম। শ্যাননের চরমপন্থী মনোভাব ও জেহাদের প্রতি অন্ধ-আনুগত্য এসেছিল এরই সৌজন্যে। তরুণীকে বিয়েরও প্রস্তাব দিয়েছিল এই যুবক। তার পুরো নাম না জানলেও আদ্যক্ষর দু’টি জেনেছে এফবিআই ‘ওয়াই এম’। এ নামেই ইন্টারনেটে শ্যাননের সঙ্গে খোশগল্প চালিয়েছে ওই জঙ্গি।

অথচ ক’মাস আগেও অন্য রকম ছিলেন শ্যানন। ধীরে ধীরে ভাবনাচিন্তা, এমনকী পোশাক-আশাকও বদলে গিয়েছিল তাঁর। বিষয়টি নজর এড়ায়নি তরুণীর মা-বাবার। এমনকী বাবা এক দিন ওই যুবকের সঙ্গে ইন্টারনেটে গল্প করতেও দেখে ফেলেছিলেন মেয়েকে। ওয়াই এম তখন আশীর্বাদও চেয়েছিল শ্যাননের বাবার কাছ থেকে।

কিন্তু আশীর্বাদ মেলেনি। বাবা বরং মেয়েকে বারবার বুঝিয়েছিলেন, এ পথ ঠিক নয়। সিরিয়া যাওয়ার পরিকল্পনা শ্যানন যেন ভুলে যান। কিন্তু লাগামহীন প্রেম আর অন্ধ-বিশ্বাস কবেই বা যুক্তি-বুদ্ধির কথা মেনেছে?

অন্য দিকে, শ্যানন যে এ রকম কিছু ভাবছেন, সে কথা এফবিআই জানত। এমনকী ওয়াইএমের সঙ্গে কথোপকথনের যাবতীয় তথ্যও ছিল তাদের কাছে। মেয়ে যাতে মত বদলায়, সে কথা বাবা-মাকেও বলেছিল এফবিআই। তাঁরা ফের চেষ্টা করেন।

কিন্তু শ্যানন থামেননি। আপাতত তাঁর ঠিকানা মার্কিন জেল। প্রেম যে এমন পরিণতিও ডেকে আনতে পারে, ভাবতে পারেনি তাঁর পরিবার। তবে তরুণী এখনও বিভোর। জেহাদের স্বপ্নে, জঙ্গির প্রেমে।

প্রতিশোধের পাথর। ইজরায়েলি পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাথর ছুড়ছে প্যালেস্তাইনি যুবক। দীর্ঘদিন অপহৃত থাকার পর
সম্প্রতি ইজরায়েলের তিন যুবকের নিথর দেহ উদ্ধার হয়। বুধবার খুন হন প্যালেস্তাইনের এক যুবক। জল্পনা ওই
তিন যুবকের হত্যার প্রতিশোধ নিতেই তাঁকে খুন করা হয়েছে। তার পর থেকেই উত্তপ্ত হয়েছে পরিস্থিতি। ছবি: এএফপি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন