মাঝ আকাশে ওড়ার সময়ই নিজের মোবাইল ফোন থেকে কাউকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন এমএইচ ৩৭০-র কো পাইলট ফারিক আব্দুল হামিদ। শনিবার এমনই দাবি করেছে মালয়েশিয়ার এক দৈনিক। তবে ওই দৈনিক এ-ও জানিয়েছে, ফোন করার আগেই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু কাকে ফোন করার চেষ্টা করছিলেন ফারিক, তা জানা যায়নি।
বিমানে চড়ার সময় সাধারণত যাত্রী ও কর্মীদের সকলকেই মোবাইল বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু ওই দৈনিক এক অসমর্থিত সূত্রকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, বিমানের অভিমুখ বদল করার পর মোবাইল ফোন থেকে কাউকে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেছিলেন ফারিক। বিমানটি তখন মালয়েশিয়ার পশ্চিম উপকূলে পেনাঙ্গ দ্বীপের উপরে উড়ছে। আর কিছু ক্ষণের মধ্যেই মালয়েশিয়ার সামরিক রেডারের আওতা থেকেও বেরিয়ে যাবে সেটি। এ হেন অবস্থায় হঠাৎ কী করে মোবাইলের নেটওয়ার্ক পেয়েছিলেন ফারিক, তা নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন। দৈনিকটির ব্যাখ্যা, সে সময় নির্ধারিত উচ্চতা থেকে বেশ খানিকটা নীচ দিয়েই উড়ছিল বোয়িং ৭৭৭-২০০ ইআর। আর সে কারণেই হয়তো সংলগ্ন কোনও মোবাইল টাওয়ারের পরিষেবা চৌহদ্দির মধ্যে ঢুকে পড়েছিল সেটি। তার পর সেটি যখন ওই টাওয়ারের পরিষেবা সীমা থেকে দূরে উড়ে যায়, তখনই কেটে যায় যোগাযোগ। কিন্তু এ তত্ত্বের পরেও যে প্রশ্নটি থেকে যায় তা হল নিয়ম ভেঙে কেন হঠাৎ মাঝ আকাশ থেকে ফোন করতে গেলেন কো পাইলট? তা হলে কি কোনও বিপদ হয়েছিল? সে নিয়ে অবশ্য নিশ্চিত ভাবে কিছু বলেনি ওই সূত্রটি। কিন্তু পরোক্ষ ইঙ্গিত সে দিকেই।
আর একটি সূত্র ওই দৈনিকেই জানিয়েছে, আদৌ যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন কি না ফারিক, তা নিয়ে সন্দেহ আছে। তাঁর মতে, হয়তো কোনও কারণে সে সময় মোবাইলটি ‘সুইচ অন’ করেছিলেন কো পাইলট। আর তখনই পরিষেবা-সীমার আওতায় চলে আসে সেটি। কিন্তু এ থেকে মোটেও বলা যায় না যে ফোন করার চেষ্টা করেছিলেন কো পাইলট।
সত্যিটা ঠিক কী ছিল, তার আংশিক হদিস অবশ্য দিতে পারে বিমানের ব্ল্যাক বক্স। যার অবস্থান নিয়ে গত কালই আত্মবিশ্বাসী শুনিয়েছিল অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবটকে। এ দিন তিনি ফের সে কথা বলেন। কিন্তু একই সঙ্গে টোনি এ-ও জানান, বিমানের ব্ল্যাক বক্সের ব্যাটারির মেয়াদ হয় ফুরিয়ে গিয়েছে অথবা তা শেষের মুখে। ভারত মহাসাগরের যে এলাকা থেকে চারটি শব্দসঙ্কেত পাওয়া গিয়েছিল, সেই এলাকাতেই আরও সঙ্কেতের জন্য খোঁজ চালাচ্ছে ‘ব্ল্যাক বক্স লোকেটর’ প্রযুক্তিসম্পন্ন মার্কিন জাহাজ ‘ওশিয়ান শিল্ড’। আরও বেশ কিছু দিন খোঁজ চলবে। তার পর যখন উদ্ধারকারীরা নিশ্চিত হয়ে যাবেন যে ব্ল্যাক বক্সের ব্যাটারি প্রায় শেষ, তখনই সমুদ্রের গভীরে নামবে স্বয়ংক্রিয় যান ব্লুফিন ২১। সব মিলিয়ে ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার হতে যে আরও অনেকটা সময় লেগে যাবে, সে কথা মনে করিয়ে দেন টোনি।