দেশের পুলিশ বাহিনীর বিরুদ্ধে নাশকতার বড়সড় ছক কষছে জঙ্গিরা। এমন খবর ছিল বেলজিয়ামের গোয়েন্দা বিভাগের কাছে। আচমকা ভারভিয়ের্স শহরের একটি অ্যাপার্টমেন্টে আজ হানা দিয়ে দুই বন্দুকবাজকে মেরে সেই ছক বানচাল করল বেলজিয়ামের পুলিশ। ব্রাসেলস আর ভারভিয়ের্স শহরে তল্লাশি চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে ১৫ জন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে।
প্যারিসের শার্লি এবদোর ঘটনার পরে এমনিতেই এখন ইউরোপের প্রায় সব ক’টা দেশে চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। কোথাও কোনও জঙ্গি কার্যকলাপের আঁচ পেলেই তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। তবে বেলজিয়ামের ঘটনায় ইসলামি জঙ্গি সংগঠনের হাত থাকলেও এর সঙ্গে আপাতত প্যারিসের ঘটনার কোনও যোগসূত্র খুঁজে পায়নি পুলিশ। উল্টে তারা জানিয়েছে, শার্লি এবদোয় হামলার কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই বেলজিয়ামে পুলিশের উপর হামলা হতে পারে বলে খবর ছিল। জঙ্গিদের সন্ধানে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সেই মতো নিয়মিত তল্লাশিও চালাচ্ছিল পুলিশ। শেষমেশ আজ ভারভিয়ের্সের ওই অ্যাপার্টমেন্টে বন্দুকবাজেরা রয়েছে বলে খবর আসে।
বেলজিয়াম পুলিশ জানাচ্ছে, নিহতদের কাছ থেকে একে-৪৭-সহ বেশ কিছু আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে প্রচুর বিস্ফোরকও। তবে নিহত বা ধৃত জঙ্গিদের নাম এখনও প্রকাশ করেনি পুলিশ। শুধু ধৃত ১৫ জন জঙ্গিদের মধ্যে দু’জনকে ফ্রান্স থেকে ধরা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এদের সকলেই কোনও না কোনও সময় সিরিয়া গিয়ে যুদ্ধ করেছে। শুধু এরাই নয়। বেলজিয়ামে বসবাসকারী প্রায় ৩০০ মুসলিম যুবক সিরিয়া গিয়েছিলেন বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। ফলে ধৃত জঙ্গিদের সঙ্গে ইসলামি জঙ্গিগোষ্ঠী আইএস-এর কোনও সম্পর্ক আছে কি না, সে প্রশ্ন উঠছে। ওই ইসলামি জঙ্গিদের কি তা হলে বেলজিয়ামেও মুণ্ডচ্ছেদের পরিকল্পনা ছিল? যা ইরাক কিংবা সিরিয়ার মতো দেশে আজকাল আকছার ঘটছে? এই সব প্রশ্নের উত্তরে অবশ্য নীরব থেকেছে পুলিশ।
শার্লি এবদোর দফতরে জঙ্গি তাণ্ডবের পরে এখন আতঙ্কে রয়েছে ইউরোপ। বেলজিয়ামের প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল আজ এক বার্তায় দেশবাসীকে আতঙ্কিত হতে বারণ করেছেন। তিনি জানান, যে কোনও ধরনের নাশকতার ছক বানচাল করতে পুলিশ সদা সতর্ক।