বন্দুক নিয়েই সিরিয়ায় পাঠ ছোটদের

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সেনার সঙ্গে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে পরিবার-পরিজনদের হারিয়ে কচিকাঁচাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলেছিল ধর্মস্থানে। জুটেছিল বই-খাতা-স্লেট-পেন্সিলও। কিন্তু খুদেদের সেই স্কুলই ক্রমে হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর। এমনটাই দাবি করেছে সিরিয়ার কিছু মানবাধিকার সংগঠন। আজ এমনই এক সংগঠনের প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার নাম করে ছোটদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, কী করে ‘আত্মাহুতি’ দিতে হয় যুদ্ধক্ষেত্রে!

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

বেইরুট শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৪ ০৪:১৮
Share:

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ। প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের সেনার সঙ্গে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সংঘর্ষে পরিবার-পরিজনদের হারিয়ে কচিকাঁচাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই মিলেছিল ধর্মস্থানে। জুটেছিল বই-খাতা-স্লেট-পেন্সিলও। কিন্তু খুদেদের সেই স্কুলই ক্রমে হয়ে উঠেছে সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর।

Advertisement

এমনটাই দাবি করেছে সিরিয়ার কিছু মানবাধিকার সংগঠন। আজ এমনই এক সংগঠনের প্রকাশিত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, বিনামূল্যে পড়াশোনার সুযোগ দেওয়ার নাম করে ছোটদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে, কী করে ‘আত্মাহুতি’ দিতে হয় যুদ্ধক্ষেত্রে!

এর মূলে রয়েছে জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট ইন ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ত (আইএসআইএল)। ইরাকের পাশাপাশি সিরিয়াতেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তারা। ১৫-১৬ বছরের কিশোরদের হাতে ধরিয়ে দিচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র। রেহাই নেই মেয়েদেরও।

Advertisement

মানবাধিকার সংগঠনটির প্রকাশিত রিপোর্টের লেখিকা প্রিয়াঙ্কা মোটাপার্থির কথায়, “সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সব চেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত খুদেরা।” ব্রিটেনের একটি পর্যবেক্ষক দলও একই দাবি জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, সিরিয়ায় বাচ্চাদের অপহরণের ঘটনা শোনা গেলেই লোকে বলে আত্মঘাতী বোমা বানানো হবে ওদের। এমন নজিরও যে কম নয়। ২০১১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৯৪টি বাচ্চার এ হেন মৃত্যু দেখেছে সিরিয়া।

এখনও জীবন-মৃত্যুর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ষোলো বছরের মজিদ। মানবাধিকার সংগঠনকে সে জানিয়েছে, জর্ডন সীমান্তে ডেরা নামের একটা শহরে আসাদের সেনার বিরুদ্ধে লড়াই করেছিল সে। নুসরা ফ্রন্ট নামে একটি সংগঠন তার মতো আরও অনেককে নামিয়ে দিয়েছিল লড়াইয়ের ময়দানে। মজিদই পরে জানায়, পড়াশোনা-স্কুলের নাম করে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ধর্মস্থানে। পরে পড়াশোনার সঙ্গেই শুরু হয় অস্ত্রবিদ্যা, যুদ্ধের প্রশিক্ষণ। শেখানো হতো কী ভাবে আত্মঘাতী বিস্ফোরণ ঘটাতে হয়। মজিদ বলে, “কম্যান্ডার বেছে নেন যোদ্ধা। বলে দেন, আল্লা তাকে বেছে নিয়েছে। অনেক সময় আবার তাদের সাহায্য করতে গিয়ে মরতে হয়েছে তার বন্ধুদের।”

কেউ বাবা-মা-আশ্রয় হারিয়ে চলে এসেছিল জঙ্গিদের দলে। অনেকে আবার পরিজনের দেখাদেখি নাম লিখিয়েছিল। কিন্তু পরিণতি প্রায় একই। কেউ মরে আত্মঘাতী হানায়। কেউ প্রতিপক্ষের বোমায়। মানবাধিকার সংগঠনগুলি এই নিয়ে জঙ্গিদের সঙ্গেও কথা বলেছিল। তাদের স্পষ্ট জবাব, “১৮-র আগে যুদ্ধে নামার সুযোগ দেওয়া হয় না!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন