বিস্তৃত ধ্বংসস্তূপ। তারই তলায় চাপা পড়ে ৪৮টি দেহ। হঠাৎই যেন নড়ে উঠল ধ্বংসাবশেষ। ভাঙাচোরা টুকরো সরিয়ে প্রথমে বেরোল হাত, তার পর মাথা আর সব শেষে বাকি দেহাংশ। তবে সহজে নয়। রীতিমতো হামাগুড়ি দিয়ে বেরোতে হল বছর চৌত্রিশের তরুণী হুং ইয়ু-তিংকে। তাইওয়ানের সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনায় যে ১০ জন যাত্রী বেঁচে ফিরেছেন, তাঁদেরই এক জন হুং। তাঁর কাহিনি শুনে শিউরে উঠছেন অনেকেই।
বাস্তবিক। এ ভাবেও যে বেঁচে ফেরা যায়, তা এর আগে হয়তো কেউ ভাবেননি। কী ভাবে বেঁচেছিলেন হুং?
তরুণীর বাবা জানাচ্ছেন, ভেঙে পড়ার সময় একটা বড়সড় গর্ত তৈরি হয়েছিল বিমানের দেহে। তারই ফাঁক গলে বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন হুং। তবে এতটাই আহত ছিলেন তিনি যে সোজা দাঁড়ানোর ক্ষমতা ছিল না। সে অবস্থায় ধ্বংসাবশেষের বড় বড় চাঁই সরিয়ে বেরোনো সহজ কথা নয়। অগত্যা তাই হামাগুড়ি দিয়েই বেরিয়ে আসতে হয়েছিল হুংকে।
এ কাহিনি অবশ্য প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেননি তরুণীর বাবা হুং চাং-মিং। তাঁর বয়ানে, “আমায় ও ফোন করে বলল বিমান ভেঙে পড়েছে। তবে ও হামাগুড়ি দিয়ে বেরিয়ে এসেছে।” শুনেই দৌড় দিয়েছিলেন চাং। কিন্তু তিনি পৌঁছনোর আগেই হুংকে হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন উদ্ধারকর্মীরা। এ কথা জানতে পেরে কিছুটা শান্ত হন প্রৌঢ়। হাত লাগান উদ্ধারকাজে। পরিস্থিতি আয়ত্তে এলে দেখা করতে যান মেয়ের সঙ্গে।
তবে বাকিদের অনেকেরই ভাগ্য যে তাঁর মতো ভাল ছিল না সে কথা বিলক্ষণ জানেন হুং, জানেন মৃতদের পরিজনেরাও। শুধু যা জানা নেই, তা হল কেন দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিল ট্রান্সএশিয়া এয়ারওয়েজের এটিআর-৭২? প্রাথমিক ধারণা, ঝোড়ো হাওয়া ও খারাপ দৃশ্যমানতার জন্যই এ দুর্ঘটনা। জানা গিয়েছে, বিমানচালক সাহায্য চাওয়ার প্রায় চার মিনিট পর পর্যন্ত কোনও কথোপকথন হয়নি। তার কারণ বুঝতে ব্ল্যাকবক্স দু’টির তথ্য বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।