লুফা ব্যবহারে কী ক্ষতি হয়? ছবি: সংগৃহীত।
স্নান বিষয়টি নিয়ে অনেকেই বেশ খুঁতখুঁতে হন। এক বার স্নান করতে ঢুকলে ঘণ্টা খানেক সময় লেগে যায়। স্নানের সময়ে লুফা ব্যবহার না করলে যেন তাঁদের স্নানটাই অসম্পূর্ণ থেকে যায়। বাজারে এখন হরেক রকম লুফা বেরিয়ে গিয়েছে। বেশির ভাগই সিন্থেটিক। তবে স্নানের সময় লুফা ব্যবহার করা কি আদৌ ঠিক?
চর্ম চিকিৎসকদের মতে স্নানের সময় লুফা থেকে শতহস্ত দূরে থাকা উচিত। শুনতে অবাক লাগলেও লুফা ব্যবহারে উপকারের থেকে কিন্তু অপকারই বেশি। চর্ম চিকিৎসক কৌশিক লাহিড়ী বলেন, ‘‘ত্বক কিন্তু নিজেই নিজেকে পরিষ্কার রাখতে পারে। ত্বক থেকে রোজ লক্ষ লক্ষ মৃত কোষ আপনা থেকেই ঝরে যায়। আমরা সাপের মতো বছরে এক বার খোলস ছাড়ি না, রোজ খোলস ছাড়ি। রোজ নতুন কোষ জন্মায় আর মৃত কোষ ঝরে পড়ে যায়। প্রত্যেক ২২-২৮ দিনের মধ্যে একজন মানুষ সম্পূর্ণ রূপে নতুন হয়ে যায়। ত্বকের উপরি ভাগ ক’দিনের মধ্যে পুরোটাই বদলে যায়। লুফা দিয়ে ঘষে মৃত কোষ তো বটেই নতুন জীবন্ত কোষগুলিকেও যদি সরিয়ে দেন তা হলে ত্বকের ক্ষতি আরও বেশি হবে।’’
লুফা দিয়ে গা ঘষে স্নান করলে ত্বকের জীবন্ত কোষ যেমন ঝরে যায়, তেমন অন্য সমস্যাও দেখা দেয়। বাজার থেকে কেনা সিন্থেটিক লুফা নিয়মিত ব্যবহার করলে ত্বকের নানা রোগ হতে পারে। কারণ, এই ধরনের লুফা ব্যবহারের পর তা ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। জালির ভিতরে গায়ের ময়লা, সাবানের টুকরো জমে এবং তা থেকে সংক্রামক ব্যাক্টেরিয়া জন্মায়।
গা ঘষার জালি আসলে রোগজীবাণুর আঁতুড়ঘর, এমনটাই দাবি চিকিৎসকদের। লুফা দিয়ে গা ঘষার পরে তার মধ্যে ত্বকের যে মৃত কোষ বা নোংরা জমে থাকে, তা পরিষ্কার করা হয় না বেশির ভাগ সময়েই। হালকা ধুয়ে জল ভাল করে না ঝরিয়েই সেই লুফা তুলে রাখা হয়। ফলে তা সহজেই বিভিন্ন রকম ব্যাক্টেরিয়ার বাসযোগ্য হয়ে ওঠে। পরে আবার সেই লুফা দিয়ে গা ঘষলে ফোস্কা, ব্রণ-ফুস্কুড়ি বা র্যাশের সমস্যা তো হবেই, স্কিন কেরাটোসিস, এগজ়িমা, কনট্যাক্ট ডার্মাটাইটিসের মতো ত্বকের রোগও হতে পারে।