Vitamin D and Ageing

বার্ধক্য পিছিয়ে দেবে ভিটামিন ডি! বাড়বে আয়ু, কী ভাবে তা সম্ভব? নতুন গবেষণায় দাবি বিজ্ঞানীদের

ভিটামিন ডি যৌবন ধরে রাখবে? বার্ধক্যে পৌঁছনোর সময়টাকেই পিছিয়ে দেবে অনেকটা। এমনই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৫ ১৭:২৫
Recent study claims that vitamin D slowed down the ageing process

বয়স কমাবে ভিটামিন ডি, কী ভাবে সম্ভব? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

যৌবনের চাকা গড়গড়িয়ে চলবে। বার্ধক্যের দোরগোড়ায় আসামাত্রই বয়স যেন পিছন দিকে ছুটতে শুরু করবে। বার্ধক্যকে ঠেকিয়ে রাখার এই যে অদম্য বাসনা, এর থেকেই ‘অ্যান্টি-এজিং’ নিয়ে গবেষণা চলছে বিশ্ব জুড়েই। শরীরের বয়স কেবল লুকিয়ে রাখার থেরাপি নয়, বৃদ্ধ হওয়ার সময়টাকেই পিছিয়ে দেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন মাস জেনারেল ব্রিগহ্যাম এবং জর্জিয়া মেডিক্যাল কলেজের বিজ্ঞানীরা। তাঁরাই দাবি করেছেন, বয়সের চাকা যদি পিছিয়ে দিতে হয়, তা হলে সহায়ক হতে পারে ভিটামিন ডি। একমাত্র এই ভিটামিনেই রয়েছে সেই গুণ।

Advertisement

ভিটামিন ডি বয়স কমাবে কী ভাবে?

‘আমেরিকান জার্নাল অফ ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন’-এ নতুন গবেষণার খবরটি প্রকাশিত হয়েছে। চিকিৎসক জোয়ান ম্যানসন জানিয়েছেন, ভিটামিন ডি খাবার থেকে হোক, রোদ থেকে বা সাপ্লিমেন্ট হিসেবে— যে ভাবেই শরীরে ঢুকুক, তা যদি নির্ধারিত মাত্রায় থাকে, তা হলে বার্ধক্যে পৌঁছনোর সময়টাকে আর একটু পিছিয়ে দেওয়া সম্ভব। এটি এমন একটি ভিটামিন, যা শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে। কেবল হাড়ের স্বাস্থ্য ভাল রাখা নয়, প্রদাহ কমানো, রোগ প্রতিরোধী কোষগুলিকে সক্রিয় করে তোলা, ক্রনিক রোগের ঝুঁকি কমানো-সহ নানা কাজ রয়েছে তার। শারীরবৃত্তীয় ক্ষেত্রে এই ভিটামিন রোগভোগের ঝুঁকি কমায়, কোষের পুনরুজ্জীবনেও এর ভূমিকা রয়েছে। শুধু তা-ই নয়, অস্থিমজ্জায় স্টেম কোষের সক্রিয়তা বাড়াতেও কার্যকরী ভূমিকা নেয় ভিটামিন ডি। এই স্টেম কোষ থেকেই শরীরের অনেক গুরুত্বপূর্ণ কোষ তৈরি হয়।

মানুষের শরীরে প্রতি দশ বছরে হার্ট, লিভার, কিডনি, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা ৫-১০ শতাংশ হারে কমতে থাকে। সাধারণত ৩০ বছরের পর থেকেই এই ক্ষয়ের প্রক্রিয়া শুরু হয়। তাই দেখা যায়, ৫০ বছরে গিয়ে হয়তো শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলির ক্ষমতা প্রায় ২০ শতাংশ কমে গিয়েছে। ৮০ বছরে গিয়ে তাই ৫০ শতাংশ বা তার চেয়েও বেশি কমে যাবে। এর কারণ হল, কোষের ক্ষয় ক্রমাগতই হয়ে চলেছে।

ভিটামিন ডি এই ক্ষয়ের প্রক্রিয়াকেই বিলম্বিত করতে পারবে। কী ভাবে? গবেষকেরা জানাচ্ছেন, কোষের মূল জিনগত উপাদান হল ক্রোমোজ়োম। যা দেখতে ‘এক্স’-অক্ষরের মতো। এর দু'টি বাহু, ছোটটির শেষ প্রান্তকে বলে টেলোমিয়ার। ক্ষয়টা হয় এখানেই। কোষ কত বার বিভাজিত হবে তার হিসেব রয়েছে। যখন বিভাজন প্রক্রিয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে, তখনই কোষের মৃত্যু হবে। এই প্রক্রিয়াকেই পিছিয়ে দিতে পারে ভিটামিন ডি। তবে তার জন্য দিনে ২০০০ আইইউ (ইন্টারন্যাশনাল ইউনিট) ভিটামিন ডি৩ শরীরে যেতে হবে। তা হলেই টেলোমিয়ারের ক্ষয় বন্ধ হয়ে যাবে, কোষের মৃত্যুও দেরিতে হবে। ফলে সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কার্যক্ষম থাকবে আরও কয়েক বছর। শরীরের বয়সও বাড়বে না।

তবে এই গবেষণা এখনও চলছে। এই বিষয়ে স্নায়ুরোগ চিকিৎসক অনিমেষ করের বক্তব্য, কেবল ভিটামিন ডি খেয়েই যে যৌবন ধরে রাখা যাবে, তা কিন্তু নয়। শরীরের বয়স ধরে রাখতে শরীরচর্চা, পুষ্টিকর খাওয়াদাওয়া ও মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখা জরুরি। কম বয়স থেকে জীবনকে নিয়মে বাঁধলে, শরীর সচল ও সক্ষম থাকবে দীর্ঘ সময়।

Advertisement
আরও পড়ুন